বন থাকবে বনের মতো, বন কেন পার্ক হবে: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
Published: 9th, April 2025 GMT
মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া বনাঞ্চলকে পার্ক বানানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘লাউয়াছড়া বনটিকে আমরা রমনা পার্ক বানিয়ে ফেলেছি। সেখানে মানুষকে ট্রেনিং দিয়েছি, কেমন করে ট্যুরিস্ট নিয়ে হাঁটতে হয়। এটি উচিত হয়নি। বন থাকবে বনের মতো, বন কেন পার্ক হবে!’
আজ বুধবার দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর সাফারি পার্ক পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন সরকারের এই উপদেষ্টা। এর আগে দুপুর পৌনে ১২টায় তিনি পার্কে প্রবেশ করেন। সম্প্রতি সেখান থেকে চুরি হওয়া তিনটি লেমুর সম্পর্কে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
২৩ মার্চ গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে চুরি যাওয়া লেমুর প্রসঙ্গে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ম্যাকাও বলেন আর লেমুর বলেন, কোনোটাই এখানে হারিয়ে যাওয়ার জন্য দেওয়া হয়নি। সব কটাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য দেওয়া হয়েছে। হারিয়ে গেছে মানেই হলো, আমার যা করার কথা, আমি তা করতে পারিনি বা করিনি। লেমুরের ঘটনাটা একদম যতটুকু বিস্তারিত সম্ভব, আমি বিস্তারিতভাবে তদন্ত করব।’ তিনি আরও বলেন, দুর্লভ প্রাণীগুলোই কেবল চলে যাচ্ছে। এটা একটা বিশাল প্রশ্ন। দুর্লভ পশুপাখিগুলো তারাই নেবে, যারা বিষয়টাকে জানে এবং বোঝে। তার মানে, এর ভেতরে একটি অর্গানাইজড ক্রাইম সেক্টর আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে এবং ভেঙে দিতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, গাজীপুরে একটি সাফারি পার্ক আছে। আপনাদের কিন্তু দায়িত্ব বেশি। কারণ, এটি আপনাদের এলাকায় আছে।
অবৈধভাবে বনভূমি দখলের বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘কাউকে যদি ঘর বা দোকান বানিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়, আপনার জায়গাতেই দিন। কিন্তু বনের জায়গায় দোকান বা ঘর—এটি হতে পারে না। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর গাজীপুরে ৮৮ একর বনের জমি বেদখল হয়েছিল, ইতিমধ্যে ৫০ একর বনভূমি উদ্ধার করেছি। বাকিটাও উদ্ধার করব।’
গাজীপুর সাফারি পার্ক পরিদর্শনের সময় উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, পুলিশ সুপার চৌধুরী মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রূপনগরে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা উদ্বোধন
এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিশুদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা (মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে স্কুল অব লাইফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে এটির উদ্বোধন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেন রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা।
আয়োজকেরা জানান, প্রতি শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। খেলাধুলার মধ্য থাকবে দাবা, লুডু, ক্যারম, দড়ি লাফ ও ব্যাডমিন্টন। এ ছাড়াও থাকবে ছবি আঁকা, হস্তশিল্প ও সামাজিকীকরণের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাঠ ও পার্কের অপ্রতুলতা ঢাকা শহরের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। শিশুদের খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি একটি কার্যকর সমাধান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে, শহর হবে প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্কুল অব লাইফের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অনুপম হোসেন বলেন, ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরি করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। অর্থ ও স্থান সংকুলান বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষে দ্রুত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। তবে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের স্থান গড়ে তোলা সম্ভব। নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব লাইফের সদস্যসচিব সাবরিনা নওরিন লিমু, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মকর্তা, মিরপুর সেকশন- ৭ এর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের এলাকাবাসী ও শিশু-কিশোরেরা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিঠুন।