বনে-জঙ্গলে জন্ম নেয় ঘিলালতা। সেই লতায় শিমজাতীয় বীজ পাওয়া যায়, যা পরিচিত ‘ঘিলা’ নামে। পাহাড়ের মানুষের নানা ঐতিহ্য-বিশ্বাসের সঙ্গে যোগ রয়েছে লতাটির। চাকমা লোকসাহিত্যের অমর প্রেমকাহিনি রাধামন-ধনপুদির একটি পর্বে ঘিলা সংগ্রহ ও ঘিলা খেলার বিবরণ রয়েছে। ধনপুদির অনুরোধে রাধামন অনেক দূর থেকে ঘিলা সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। পরে ঘিলা খেলা নিয়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

পাহাড়ে ঘিলা খেলার প্রচলন এখন তেমন নেই। তবে প্রতিবছর বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে এই খেলা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঐতিহ্যকে স্মরণ করতে দেখা যায় পাহাড়ি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে। এবারও যার ব্যতিক্রম হয়নি। কেবল ঘিলা খেলা নয়, বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের উৎসব ঘিরে পাহাড়ের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় মানুষ এখন মেতে উঠেছে নাদেং, পত্তি, ফোর, বাঁশ খড়ম দৌড়, গুডুসহ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খেলায়।

বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায় পাহাড়িদের প্রধান সামাজিক উৎসব। পাহাড়ি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ বিজু, বিহু, বৈসুক, সাংগ্রাই, চাংক্রানসহ নানা নামে বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায়ের অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন করে থাকেন। প্রতিবছর এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই এসব ঘিরে পাহাড়ে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। এবার ৩ এপ্রিল থেকে রাঙামাটিতে জেলা পরিষদ ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের উদ্যোগ সাত দিনব্যাপী বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু ও বিহু মেলা শুরু হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সংস্থা, ক্লাব ও পাড়ার উদ্যোগে প্রত্যেক গ্রাম ও শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

পাহাড়ের বাসিন্দারা জানান, ‘নাদেং’ হলো লাটিম নিয়ে খেলা। বিশেষ করে চাকমা ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই খেলাটি। দাড়িয়াবান্দা পাহাড়ে পরিচিত ‘ফোর’ নামে। ‘পত্তি’ বলা হয় বউচিকে। হাডুডুকে বলা ‘গুডু’। বর্ষবরণ-বর্ষবিদায়ে এ ছাড়া মহাসমারোহে আয়োজন করা হয় বলি খেলা। কোথাও কোথাও চলছে বাঁশ খড়ম দৌড়। এই দৌড়ে রণপা নিয়ে দৌড়ান প্রতিযোগীরা। উৎসবকে ঘিরে বাঁশ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয়। যার মধ্যে রয়েছে খেংগরং, বাঁশি, ধুধুক ও শিঙা।

হাতে ঘিলা নিয়ে খেলায় মেতেছেন কয়েকজন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

শোভাযাত্রার কাজে যুক্ত কয়েকজনকে ভিনদেশি ফোন নম্বর থেকে ভয় দেখানো হচ্ছে: চারুকলা অনুষদ

চারুকলা অনুষদের বিশিষ্ট অ্যালামনাই শিল্পী-ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানানো হয়।

শোভাযাত্রা কার্যক্রমে যুক্ত বেশ কয়েকজনকে ভিনদেশি ফোন নম্বর থেকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলেও জানায় চারুকলা অনুষদ৷

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা ১৪৩২ ইতিমধ্যে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে আগের দিন নস্যাৎ প্রচেষ্টার লক্ষ্য নিয়ে দুষ্কৃতিকারীদের হামলায় চারুকলা নির্মিত দুটি মোটিফ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তা মেরামত এবং পুনর্নিমাণ করার মাধ্যমে আনন্দ শোভাযাত্রা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ওই একই দুষ্কৃতকারীদের হামলায় আজ বুধবার ভোররাত আনুমানিক সাড়ে তিনটায় চারুকলা অনুষদের বিশিষ্ট অ্যালামনাই শিল্পী-ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তিনি অন্য শিল্পীদের সঙ্গে নিয়ে মোটিফ নির্মাণে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করেছেন। বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা ১৪৩২ কমিটি এবং চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে আমরা এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি দ্রুত অপরাধী শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি করছি।’

আরও উল্লেখ করা হয়, কয়েক দিন ধরে শোভাযাত্রা কার্যক্রমে যুক্ত বেশ কয়েকজনকে ভিনদেশি ফোন নম্বর থেকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নানা ধরনের কটূক্তি প্রচার অব্যাহতভাবে চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার: নিরাপত্তা উপদেষ্টা
  • কুয়াকাটায় জলকেলিতে মাতলেন রাখাইন তরুণ-তরুণীরা
  • বর্ষবরণ শোভাযাত্রা নতুন নামে স্বীকৃতি পেতে অনুমোদন লাগবে: ইউনেস্কো
  • ভাস্কর্য শিল্পীর বাড়িতে আগুন: ৮ জন গ্রেপ্তার
  • ডিসি হিলে নববর্ষের অনুষ্ঠান হলো না কেন
  • যশোরে রক্তকরবী উন্মুক্ত মঞ্চের সামনে মাছ–সবজিবাজার
  • চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি
  • শোভাযাত্রার কাজে যুক্ত কয়েকজনকে ভিনদেশি ফোন নম্বর থেকে ভয় দেখানো হচ্ছে: চারুকলা অনুষদ
  • আওয়ামী লীগ মানবেন্দ্র ঘোষকে আক্রমণের উস্কানি দিচ্ছিল: ফারুকী
  • বর্ষবরণ উৎসবে বাধা, উদীচীর প্রতিবাদ