ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ওয়াক্ফ মামলার শুনানি আগামী সপ্তাহে
Published: 9th, April 2025 GMT
ওয়াক্ফ আইন চ্যালেঞ্জ করে হওয়া মামলার শুনানি ১৬ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে শুরু হতে পারে। এ মামলা–সংক্রান্ত বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এক ক্যাভিয়েট দাখিল করেছে। সরকার অনুরোধ করেছে, মামলার রায় দেওয়ার আগে তাদের বক্তব্য যেন শোনা হয়।
এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্যেই অন্তত ১৫টি মামলা করা হয়েছে। মামলাগুলো দ্রুত শোনার আরজি জানিয়েছিলেন আবেদনকারীরা। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না আবেদনকারীদের বলেছিলেন, সর্বোচ্চ আদালতের ব্যবস্থা অনুযায়ী মামলা লিপিবদ্ধ করা হবে। গত মঙ্গলবার এনডিটিভি জানায়, ১৬ এপ্রিল মামলা শুনতে সর্বোচ্চ আদালত রাজি হয়েছেন।
ওয়াক্ফ বিল পাস হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাতে সম্মতি দেওয়ায় সেটি আইনে রূপান্তরিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার গত মঙ্গলবার আইন কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি জারি করে। গতকাল মঙ্গলবারই নতুন আইন সারা দেশে বলবৎ হয়েছে।
নতুন আইন চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যেই অন্তত ১৫টি মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। মামলাকারীদের মধ্যে রয়েছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ড, জামায়াতে উলেমা ই হিন্দ ও অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য প্রোটেকশন অব সিভিল রাইটস (এপিসিআর)। এই তিন সংগঠন ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। মামলাকারীদের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেস নেতা মহম্মদ জাভেদ ও ইমরান প্রতাপগড়ি, হায়দরাবাদের এআইএমআইএম নেতা আসাউদ্দিন ওয়েইসি, বিহারের আরজেডি নেতা মনোজ ঝা ও ফয়াজ আহমেদ, ডিএমকের এ রাজা। মণিপুরের শাসক জোট এনডিএর শরিক এনপিপি নেতা শেখ নুরুল হাসানও মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নতুন এই আইনের বিরোধিতায় বিভিন্ন রাজ্যে অশান্তি ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় গত মঙ্গলবার ব্যাপক সহিংসতা ছড়ায়। উত্তেজিত জনতা পুলিশকে আক্রমণ করে। পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। চারজন পুলিশ আহত হন। সংঘর্ষ বাধে মণিপুরেও। উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় পুলিশ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিক্ষোভকারী মুসলমানদের মুচলেকা নেওয়া শুরু করেছে।
ওয়াক্ফ বিল সংসদে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশে ছিলেন না। বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন। সেখান থেকে শ্রীলঙ্কা। গতকাল মঙ্গলবার তিনি দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে ওয়াক্ফ আইন সম্পর্কে মন্তব্য করে বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে এটি এক বড় পদক্ষেপ। তিনি বলেন, এই আইনে গরিব মুসলমান, নারী ও শিশুদের অধিকার সুরক্ষিত হবে।
ওই অনুষ্ঠানে বিরোধীদের সমালোচনা করতেও মোদি ছাড়েননি। তিনি বলেন, স্বাধীনতার সময় থেকেই বিরোধীরা তোষণের রাজনীতি চালিয়ে আসছে। সেই তোষণনীতি মুষ্টিমেয় মৌলবাদীদের উপকার করলেও সাধারণ মুসলমানদের বঞ্চিত রেখেছে। নতুন আইন মুসলমান সমাজের সবার অধিকার সুরক্ষিত করবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম সলম ন
এছাড়াও পড়ুন:
১০ ছক্কায় অভিষেকের রেকর্ড গড়া ১৪১, এরপর চিঠি রহস্য
ব্যক্তিগত ২৮ রানের সময় আউট হয়েও বেঁচে গেলেন নো বলের কল্যাণে। একেই মনে হয় বলে চ্যাম্পিয়ন্স লাক! এরপর অভিষেক শর্মা আইপিএলকে উপহার দিলেন এক স্মরণীয় রাত। মাত্র ৪০ বলে সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর ৫৫ বলে খেললেন অবিশ্বাস্য ১৪১ রানের এক ইনিংস। যা আইপিএলের ইতিহাসে কোনও ভারতীয় ব্যাটসম্যানের আইপিএলে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস।
অভিষেকের বিস্ফোরক ইনিংসের কল্যাণে পাঞ্জাব কিংসের ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে করা ২৪৫ রানকে মামুলি মনে হলো। প্রায় আড়াইশ ছুঁইছুঁই রান তাড়া করতে নেমে ১৫ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (২৪৭/২)। যা আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সফল রান তাড়ার রেকর্ড। গত মৌসুমে (২৬ এপ্রিল, ২০২৪) ক্লকাতা নাইট রাইডার্সের দেওয়া ২৬১ রানের ইনিংস তাড়া করতে নেমে ৮ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে পাঙজাব জিতেছিল, যা আইপিএলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড।
আরো পড়ুন:
চেন্নাই প্লে’অফ খেলবে, দাবি ব্যাটিং কোচের
ধোনির অধিনায়কত্বেও ভাগ্য বদলালো না চেন্নাইর
গতরাতে রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ঝড় তোলেন পাঞ্জাবের দুই ওপেনার প্রিয়াংশ আর্য ও প্রভসিমরন সিং। দুজন মিলে করেন ৬৬ রান। ১৩ বলে ৩৬ রান করে আউট হন প্রিয়াংশ। এরপর দলীয় ৯১ রানে ফেরেন প্রভসিমরন। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ২৩ বলে ৪২। তবে পাঞ্জাবের হয়ে আসল ঝড়টা তোলেন শ্রেয়াস আইয়ার। ৩৬ বলে ৬ চার ও ৬ ছক্কায় করেন ৮২ রান। আর শেষ দিকে ১১ বলে অপরাজিত ৩৪ রান করেন মার্কাস স্টয়নিস।
জবাব দিতে নেমে অভিষেকের এই মহাকাব্যিক ইনিংস যেন এক রূপকথার মত প্রত্যাবর্তন। চলমান আসরে এই ২৪ বছর বয়সী ওপেনারের ব্যাট ঠিক হাসছিল না। তবে পাঞ্জাবের সাথে ঠিকই অভিষেক জানান দিলেন, হারিয়ে যাননি তিনি। ট্র্যাভিস হেডের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন। পাওয়ারপ্লে’র পর হেড যখন ছন্দে ব্যাট করছিলেন, তখন অভিষেক গিয়ার বদলে ঝড় তোলা শুরু করেন।
হেডের সঙ্গে ১৭১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন অভিষেক। যা হায়দরাবাদের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওপেনিং পার্টনারশিপ। হেডের ৩৭ বলে ৬৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
এরপর অভিষেক ব্যক্তিগত প্রথম আইপিএল শতরানটি করেন মাত্র ৪০ বলে, যা আইপিএলের ইতিহাসে ষষ্ঠ দ্রুততম সেঞ্চুরি। কিন্তু তখনো চমকের বাকী ছিল। শতরান পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই, অভিষেক নিজের পকেট থেকে একটি সাদা কাগজ বের করে উপরে তুলে ধরেন, যেখানে হাতে লেখা ছিল, ‘এই ইনিংসটি কমলা আর্মিদের জন্য’। পাঞ্জাব অধিনায়ক শ্রেয়াসও সেই মুহূর্তে কাছে চলে আসেন বার্তাটি পড়তে।
অভিষেক প্রায় ২৫৭ স্ট্রাইক রেটে ১৪ চার ও ১০টি ছক্কায় তাঁর ইনিংসটি সাজান।
হায়দরাবাদের হয়ে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এটিই। এর আগে ডেভিড ওয়ার্নারের ১২৬ ছিল চূড়ায়। আইপিএলের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। কেবল ক্রিস গেইল ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের আছেন সামনে।
টানা ৪ ম্যাচ হারার পর আসরে দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেল হায়দরাবাদ। ৬ ম্যাচে ২ জয় নিয়ে টেবিলের অষ্টম স্থানে আছে প্যাট কামিন্সের দল।
ঢাকা/নাভিদ