সাংবাদিককে যুবদল নেতার ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি, থানায় জিডি
Published: 9th, April 2025 GMT
পটুয়াখালী জেলা যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির সোহাগের বিরুদ্ধে এক সাংবাদিককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
একটি প্রাইমারি স্কুলের চলমান কাজের তথ্য জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিককে হুমকি দেন। এ ধরনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনার পর ভুক্তভোগী সাংবাদিক গতকাল মঙ্গলবার রাতে বাউফল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
বুধবার (৯ এপ্রিল) বাউফল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, “জিডির বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হয়ছে। আদালত থেকে অনুমতি পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরো পড়ুন:
সংবাদকর্মীদের ঈদ: অন্যদের তুলে ধরতে নিজেদের ভুলে থাকা
ডিআরইউয়ে হামলা: এক জনের জামিন, আরেকজন কারাগারে
এদিকে, ঘটনার একদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও অভিযুক্ত নেতার বিরুদ্ধে সংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি যুবদল। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশা করছেন পটুয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুইমাস আগে বাউফল পশ্চিম নুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই তলা বিশিষ্ট একটি ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এলাকাবাসী কয়েকদিন আগে ওই ভবনের নির্মাণ কাজে অনিয়ম হচ্ছে বলে বাউফল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও দৈনিক দেশ রুপান্তরের বাউফল উপজেলা প্রতিনিধি সিদ্দিকুর রহমানকে জানান।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর একটার দিকে সিদ্দিকুর রহমান ওই বিদ্যালয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য যান। সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আসার পর ওই ভবনের ঠিকাদার ও পটুয়াখালী জেলা যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির সোহাগ মোবাইল ফোনে সাংবাদিক সিদ্দিকুর রহমানকে হুমকি দেন। ওই অডিও কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়।
ভাইরাল অডিওতে যুবদল নেতা হুমায়ুন কবির সোহাগকে বলতে শোনা যায়, “আমি জেলা যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। ১৭ বছর পর একটা কাম নিছি, হেই সাইটে আপনি কির লইগ্যা গেছেন। রড একটা হইবে না চারটা হবে, আপনি সাইটে গেছেন ক্যা? ১৭ বছর যুদ্ধ কইরা আইছি, আর আপনি এহন কন এইয়্যা অইয়্যা। অনিয়ম করলে আমনে কেডা সেইটা কন। অনিয়ম করলে অফিস দেখবে আপনে কেডা? টোপ খাইতে চান, আমি আইতাছি দেইখ্যা নিমু। সাংবাদিকদের সাইটে কাজ কি? তুই সাংবাদিক, তুই থাকবি অন্য কামে তোর ওই জায়গায় কাজ কি? তুই সাইটের ধারে গেলে তোর কি করা লাগবে হেডা আমি বুঝমু হানে।”
বাউফল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাংবাদিক মো.
বাউফল প্রেস ক্লাবের সভাপতি জলিলুর রহমান বলেন, “একটি দলের পরিচয় দিয়ে এভাবে সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া কোনভাবেই ঠিক হয়নি। আমরা বাউফল প্রেস ক্লাব এ ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে সাগংঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।”
পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক জাকির হোসেন বলেন, “এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি। সবাইকে সাংবাদিকদের সঙ্গে দায়িত্বশীল আচরণ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।”
পটুয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন বলেন, “বিষয়টি গতকালই আমরা সেন্ট্রাল কমিটিকে জানিয়েছি। আজও সেন্ট্রাল কমিটির নেতাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আশা করছি, তার বিরুদ্ধে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স দ দ ক র রহম ন য বদল র য গ ম ক ব যবস থ ন বল ন ব উফল ঘটন র গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
রূপনগরে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা উদ্বোধন
এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিশুদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা (মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে স্কুল অব লাইফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে এটির উদ্বোধন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেন রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা।
আয়োজকেরা জানান, প্রতি শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। খেলাধুলার মধ্য থাকবে দাবা, লুডু, ক্যারম, দড়ি লাফ ও ব্যাডমিন্টন। এ ছাড়াও থাকবে ছবি আঁকা, হস্তশিল্প ও সামাজিকীকরণের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাঠ ও পার্কের অপ্রতুলতা ঢাকা শহরের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। শিশুদের খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি একটি কার্যকর সমাধান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে, শহর হবে প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্কুল অব লাইফের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অনুপম হোসেন বলেন, ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরি করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। অর্থ ও স্থান সংকুলান বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষে দ্রুত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। তবে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের স্থান গড়ে তোলা সম্ভব। নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব লাইফের সদস্যসচিব সাবরিনা নওরিন লিমু, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মকর্তা, মিরপুর সেকশন- ৭ এর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের এলাকাবাসী ও শিশু-কিশোরেরা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিঠুন।