লালপুর থানার ওসিসহ ৪ পুলিশকে প্রত্যাহার, ১৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ৩
Published: 9th, April 2025 GMT
নাটোরের লালপুরে গ্রেপ্তার হওয়া জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুবেল উদ্দিনকে থানা ভবন থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হকসহ চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই ঘটনায় ওই নেতার দুই বোনসহ এক যুবদল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে পুলিশ বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাগাতিপাড়া থানার পুলিশ একটি মামলার আসামি রুবেল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে গতকাল বিকেলে লালপুর থানা ভবনে রাখে। খবর পেয়ে ওই নেতার পরিবারের লোকজনসহ লালপুরের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতা-কর্মী থানা ভবনের ভেতরে ঢুকে স্লোগান দিয়ে হট্টগোল শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বিএনপির প্রয়াত নেতা ফজলুর রহমান পটলের বড় ছেলে ইয়াসির আরশাদের (রাজন) সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে তাঁরা জোর করে রুবেল উদ্দিনকে ছিনিয়ে নিয়ে থানা ভবন থেকে বের হয়ে আসেন। তাঁকে নিয়ে লালপুর-বাঘা সড়কে মিছিল করেন।
খবর পেয়ে সেনা ও র্যাব সদস্যরা লালপুর থানায় গিয়ে অবস্থান নেয়। সন্ধ্যার পর ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়। আজ সকাল পর্যন্ত যৌথবাহিনী রুবেল উদ্দিনের চামটিয়ার বাড়ি থেকে তাঁর দুই বোন রুপা খাতুন (২৫) ও ফারজানা ইয়াসমিন (২০) ও কদিমচিলান ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি মাসুদ রানাকে (৩১) গ্রেপ্তার করে সদর থানায় নিয়ে যায়।
রাতেই এই ঘটনায় বাগাতিপাড়া থানার উপপরিদর্শক মানিক কুমার চৌধুরী বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে লালপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরাসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০০ থেকে ১২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
এদিকে লালপুর থানায় সংঘটিত ঘটনার জন্য লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক ও দায়িত্বরত একজন উপপরিদর্শক এবং দুজন কনস্টেবলকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, যাঁরা সরকারি কাজে বাধা দিয়ে আসামি ছিনতাই করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দায়িত্ব অবহেলার কারণে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুননাটোরে থানা থেকে ছাত্রদলের গ্রেপ্তার নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন অনুসারীরা১৮ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
রূপনগরে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা উদ্বোধন
এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিশুদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা (মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে স্কুল অব লাইফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে এটির উদ্বোধন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেন রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা।
আয়োজকেরা জানান, প্রতি শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। খেলাধুলার মধ্য থাকবে দাবা, লুডু, ক্যারম, দড়ি লাফ ও ব্যাডমিন্টন। এ ছাড়াও থাকবে ছবি আঁকা, হস্তশিল্প ও সামাজিকীকরণের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাঠ ও পার্কের অপ্রতুলতা ঢাকা শহরের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। শিশুদের খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি একটি কার্যকর সমাধান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে, শহর হবে প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্কুল অব লাইফের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অনুপম হোসেন বলেন, ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরি করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। অর্থ ও স্থান সংকুলান বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষে দ্রুত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। তবে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের স্থান গড়ে তোলা সম্ভব। নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব লাইফের সদস্যসচিব সাবরিনা নওরিন লিমু, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মকর্তা, মিরপুর সেকশন- ৭ এর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের এলাকাবাসী ও শিশু-কিশোরেরা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিঠুন।