ঢাকাই সিনেমার নায়িকা ইয়ামিন হক ববি। সর্বশেষ ‘বউ’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। সিনেমাটির শুটিং শেষ না হতেই একই নির্মাতার নতুন সিনেমায় যুক্ত হচ্ছেন তিনি। ‘দিওয়ানা’ শিরোনামের সিনেমাটি নির্মাণ করছেন এস কে নিলয়।
ববির সঙ্গে ইতোমধ্যে প্রাথমিক আলাপ সেরেছেন। এর কাহিনি লিখছেন দেলোয়ার হোসেন দিল। এটি শহুরে গল্প। এ কারণে রাজধানীতে হবে দৃশ্যধারণ। ববির বিপরীতে কে অভিনয় করবেন তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
নিলয় বলেন, “ববিকে নিয়ে ‘বউ’ সিনেমার কাজ করছি। তার সঙ্গে আমার প্রথম কাজ ছিল এটি। সহযোগিতাপরায়ণ একজন শিল্পী। আমার পরবর্তী ‘দিওয়ানা’ সিনেমার জন্য তাকেই মানানসই মনে হয়েছে। এ কারণে তাকে নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছি। নায়ক হিসেবে কাকে নিব তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। শিগগির সিনেমার কাজ শুরু করব।”
আরো পড়ুন:
পার্নোকে নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে আসছেন মোশাররফ করিম
লোকগুলো অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল: জিৎ
নতুন সিনেমায় যুক্ত হওয়ার বিষয়ে ববি বলেন, “দিওয়ানা’ সিনেমার বিষয়ে কথা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে কাজ করব।”
বর্তমান ব্যস্ততার কথা জানিয়ে ববি বলেন, “বেঈমান’ সিনেমার শুটিং করেছি। ‘বউ’ সিনেমার তিনটি গানের কাজ বাকি আছে। এগুলো শেষ করে বদিউল আলম খোকনের ‘তছনছ’ সিনেমার শুটিং শুরু করব। দেশের বাইরে আরো একটি সিনেমার কথা হচ্ছে। বলা চলে কাজের মধ্যেই আছি। অভিনয় নিয়েই থাকতে চাই।”
‘খোঁজ দ্য সার্চ’ সিনেমার মাধ্যমে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন ববি। সে হিসেবে শোবিজে তার পথচলা দেড় দশকের বেশি। এর মধ্যে ‘দেহরক্ষী’, ‘রাজত্ব’, ‘অ্যাকশন জেসমিন’, ‘বিজলী’, ‘বেপরোয়া’, ‘নোলক’ সিনেমায় অভিনয় করেন। সর্বশেষ তার অভিনীত ‘ময়ূরাক্ষী’ সিনেমা মুক্তি পায়।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
নববর্ষে মেয়ের জন্ম, ডাক্তার খুশি হয়ে নাম রেখেছেন বৈশাখী
পহেলা বৈশাখে তৃতীয় সন্তান এসেছে চাঁদপুরের শাহাদাত হোসেন ও রিনা আক্তারের পরিবারে। বৈশাখের স্নিগ্ধ সকালে চাঁদপুর মা ও শিশু স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে মেয়ে সন্তান জন্ম নেয় তাদের ঘরে।
তাদের চরম এক টানাপড়েনের সংসারে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে মেয়ের আগমনে বেশ খুশি শাহাদাত-রিনা দম্পতি। সকালে মেয়ের মিষ্টিমুখ দেখে চিকিৎসক এবং নার্স হাসপাতালে নবজাতকের নাম তালিকাভুক্ত করার সময় পরিবারের সদস্যদের ডেকে বলেন, ‘আজ বাংলা নববর্ষ এবং পহেলা বৈশাখ। তাই মেয়ের নামটি আমরা তালিকায় বৈশাখী দিয়ে দিলাম। খুশি তো?’ নবজাতকের মা-বাবা মাথা নেড়ে সায়ও দেন।
তবে চিকিৎসক আবার সঙ্গে সঙ্গে এটাও বললেন, ইচ্ছে করলে আপনারা এই বিশেষ দিনের নামটার সঙ্গে নিজেদের পছন্দের আরও নাম জড়িয়ে রাখতেই পারেন। সেটা আপনাদের বিষয়।
নবজাতকের বাবা শাহাদাত হোসেন পেশায় একজন রিকশাচালক। ৮ বছর আগে দুই ছেলে- ৫ম শ্রেণির ছাত্র রহমত আর ছোট ছেলে মাদরাসায় পড়ুয়া ইসমাইলকে নিয়ে চলে আসেন চাঁদপুর জেলা শহরের রহমতপুর কলোনিতে। এখানে সেমিপাকা ছোট্ট এক রুমের ভাড়া বাসা নেন। তার মূল বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার সকদী রামপুর গ্রামে। স্ত্রী রিনা আক্তারের বাড়িও একই উপজেলার পাশের গ্রামে।
শহরে এসে ভাড়ায় রিকশা চালান শাহাদাত। ৩'শ টাকা রিকশা মালিককে দেন আর এক দেড়-দুইশ টাকায় চলে সংসার।
বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখে জন্ম নেওয়া মেয়ে সন্তানটিকে নিয়ে কথা হয় শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাত তিনটায় স্ত্রী রিনার প্রসব ব্যথা উঠে। ক্রমেই ব্যথা বাড়তে থাকলে একটা অটো ডেকে আমার এক ভাবীসহ বাসা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে সরকারি মা ও শিশু স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে (মাতৃমঙ্গল নামে পরিচিত) নিয়ে যাই। সঙ্গে সঙ্গে দারোয়ান হাসপাতালের গেট খুলে দেয় এবং নার্স এসে আমার স্ত্রীকে বেডে নিয়ে যায়। পর পরই ডিউটি ডাক্তার আসেন।
তিনি বলেন, হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী আমাকে গেটের বাহিরে অপেক্ষা করতে বলে। তবে চিকিৎসক নার্সরা আমার ভাবীকে বলেন, চিন্তা করবেন না, সব কিছু ঠিক আছে। ইনশাআল্লাহ, উনার নরমাল ডেলিভারিই হবে এবং মা আর গর্ভের সন্তান ভালো আছে।
শাহাদাত হোসেন বলেন, হাসপাতালের বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে ভোরের আলো ফুটে যায়। আর সে সময়ই হাসপাতালের পাশের অফিসার্স ক্লাব থেকে ভেসে আসছিল নববর্ষের গান। ঠিক তখনই গেট খুলে দিয়ে দারোয়ান বলেন ভেতরে আসেন আপনি মেয়ের বাবা হয়েছেন। তখন আল্লার কাছে শুকরিয়া আদায় করলাম। ডাক্তার এবং নার্স বললেন- সকাল সাড়ে আটটায় আপনার মেয়ে জন্ম নিয়েছে। একটা স্যালাইন আর সামান্য কিছু ওষুধ দেওয়া হয়েছে। স্যালাইন শেষ হলেই ১০টার মধ্যেই বাসায় নিয়ে যেতে পারবেন। আর বাচ্চার ওজন ২ কেজি ৯ শ গ্রাম।
পহেলা বৈশাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আপনার মেয়েকে কি উপহার দিলো, এমন প্রশ্নের জবাবে সরল হাসি দিয়ে রিকশাচালক শাহাদাত হোসেন বলেন, এই ভোররাতে তারা আমার বউ আর সন্তানের সেবায় একটুও হেলা করেনি। এটাই আমার মতো গরীব বাবার কাছে অনেক বড় উপহার। এর আগেও এই হাসপাতালে দুই-একবার গিয়েছিলাম। তারা তখনও অনেক যত্ন নিয়ে চিকিৎসা দিয়েছিলেন।
মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসক মেহেদী আল মাসুদ জানান, নববর্ষের প্রথম প্রহরের রোগী রিনা আক্তার। তার চিকিৎসার কোনরূপ হেলা করিনি আমরা। আর এখানে আগে থেকেই আমরা গর্ভবতী মায়েদের প্রসব এবং অন্যান্য চিকিৎসাগুলো দিয়ে থাকি।
শাহাদাত হোসেন বলেন, গরীব ঘরের মেয়েকে কতদিন নিজের কাছে আগলে রাখতে পারবো আল্লাহই ভালো জানেন। তবে যথাসম্ভব চেষ্টা করবো মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মনুষ করার।
তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ে যেন সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেচে থাকে সবাই এই দোয়া করবেন।