ডাকাতির পর হত্যা: ১০ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড
Published: 9th, April 2025 GMT
১৫ বছর আগে রাজধানীর গোড়ান এলাকায় ডাকাতি করতে গিয়ে রেজিয়া বেগম (৭৫) নামের নামে এক নারীকে হত্যার দায়ে ১০ জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ বিচারক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) মো.
দণ্ডিতরা হলেন—জাহাঙ্গীর হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, আলাউদ্দিন, শাহিন সরদার, মতিউর রহমান, আলম, সাইদুল ইসলাম, ইমরান ওরফে এমরান, ইশারত আলী এবং মাইদুল ইসলাম।
রায় ঘোষণার আগে দেলোয়ার হোসেন ও মাইদুল ইসলামকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদেরকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। পলাতক অপর ৮ আসামির বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. সেলিম খান।
২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাতের খাবার শেষে মা, স্ত্রী, সন্তানসহ ঘুমিয়ে পড়েন সৌদি আরব ফেরত গোলাম কবীর। রাত ৩টা থেকে পৌনে ৪টার দিকে গৃহকর্মী সাবিনা এসে গোলাম কবীরের দরজায় নক করেন। বলেন, ‘নানি অসুস্থ, দরজা খোলেন।’ দরজা খুললেই ৪-৫ জন ডাকাত ঘরে ঢোকে। তারা পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে ৪৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে। এসবের দাম ৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। প্রায় এক ঘণ্টা পর তারা চলে যায়।
গোলাম কবীর তার মা রেজিয়া বেগমের রুমে গিয়ে দেখেন, হাত-পা বাঁধা। পরে জানতে পারেন, ডাকাতরা তার মাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় গোলাম কবীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১১ সালের ২৮ মার্চ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করা হয়। বিচার চলাকালে আদালত ২০ সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি, যুক্তি-তর্ক শেষে আদালত আজ রায় দিলেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী গোলাম কবীর। তিনি বলেছেন, ‘আশা করছি, উচ্চ আদালতে এ রায় বহাল থাকবে।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আবুল হোসেন এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আশা করছি, উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার পাব। আসামিরা খালাস পাবেন।’
ঢাকা/মামুন/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপিকর্মী নিহতের ঘটনায় মানহানি মামলা
রংপুরের বদরগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপিকর্মী নিহতের ঘটনায় বহিষ্কৃত ৮ নেতার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। বুধবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল আমলী আদালতে (বদরগঞ্জ) মামলা দায়ের করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট শফি কামাল।
মামলার আসামি হলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার, বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির মানিক, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল হক মানিক, মধুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, বদরগঞ্জ পৌর যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সুমন সরদার, উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হক কয়েল, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া, কালুপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছামছুল হক। এছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, আসামিরা দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ করেছে। আসামিদের হামলায় লাবলু মিয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং ৬ এপ্রিল তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল নির্দেশ দিলে রংপুর জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দোকান ভাড়াকে কেন্দ্র করে গত শনিবার সকালে সাবেক বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলী সরকার, হুমায়ুন কবির মানিকের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সাবেক বিএনপি নেতা ও কালুপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিকের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে মোহাম্মদ আলী সরকারের অনুসারী বিএনপিকর্মী লাবলু মিয়া নিহত হন এবং সাংবাদিকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন।