চলতি বছরের ডিসেম্বরের আগে নির্বাচনের দাবি প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুনির্দিষ্টভাবে আগামী ডিসেম্বরের আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ চাইব, যাতে উনি ক্লিয়ারলি (স্পষ্টভাবে) জাতির সামনে যথাযথ প্রক্রিয়ায় তা উপস্থাপন করেন।’ 

আজ বুধবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য সময় চেয়েছি। উনি সময় দেবেন। উনার সঙ্গে সাক্ষাতের পরেই আমরা এ বিষয়ে কথা বলব।’

সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বিভিন্ন মিডিয়ায় আমরা খেয়াল করেছি, একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যথেষ্ট লেখালিখি হচ্ছে, বিএনপি কি ধর্ম নিরপেক্ষতায় ফেরত গেল? এখানে মিস ইন্টারপ্রেট করা হয়েছে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে দু’টি স্প্রেডশিট আমাদের দেওয়া হয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে। এটা আসলে একটা অপূর্ণাঙ্গ বিষয়। কারণ আমরা বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেব বলেছিলাম এবং জমা দিয়েছিও। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, যেটার ৪৫ থেকে ৭২ পৃষ্ঠা পর্যন্ত প্রায় ১০৫টা সুপারিশ আছে। সেটার প্রত্যেকটির অ্যাড্রেস করে বিস্তারিত প্রতিবেদনে জমা দিয়েছি। স্প্রেডশিট যেভাবে হ্যাঁ-না জবাব দিতে বলা হয়েছে, সেটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। সেটা আমরা সেদিনই উল্লেখ করেছি।’

বিএনপি এ নেতা আরও বলেন, ‘স্প্রেডশিটের আইটেম নম্বর ৫, ৬ ও ৭-এ সংবিধানের মূলনীতি এবং রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতির বিষয়ে উনারা যেটা বলেছেন- সংবিধানের মূলনীতিতে বহুত্ববাদের কথা বলেছেন, সাম্য, মানবিক, মর্যাদা ইত্যাদির কথা বলেছেন। কিন্তু বহুত্ববাদসহ অন্যান্য বিষয়গুলোর সঙ্গে আমরা একমত নই এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে, সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে আমরা একমত নই।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ বল ছ ন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

‘পিপল ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’ নাম চায় ইসলামী আন্দোলন

বাংলাদেশের বর্তমান নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পরিবর্তে নাগরিকতন্ত্র ও জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ চালুর প্রস্তাব করেছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন। তবে নতুন এ প্রস্তাবনায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পরিবর্তে ‘পিপল ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’ তথা ‘বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র’ নামের প্রস্তাব দেয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে অবস্থিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের হাতে সংস্কার প্রস্তাব তুলে দেয় ইসলামী আন্দোলনের প্রতিনিধিদল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে দলটি ১৩০টি প্রস্তাবে একমত, ২৫টি দ্বিমত এবং ১১টিতে আংশিকভাবে একমত। এ ছাড়া দলটি ৪১টি নতুন প্রস্তাব এবং ৪টি মৌলিক প্রস্তাব দিয়েছে।

ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বলেন, রাষ্ট্রের নাম হিসেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রস্তাব করেছে ‘ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’। কারণ, এই নামের মধ্যেই জনকল্যাণ নিশ্চিত করার কথা বলা আছে।

আশরাফ আলী আকন বলেন, ‘রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে সুশাসন, ন্যায়বিচার, উন্নয়ন, মানবাধিকার রক্ষা এবং দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আমরা চারটি মৌলিক প্রস্তাব পেশ করেছি, যা বাস্তবায়ন একান্ত প্রয়োজন। আর এসব প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। প্রস্তাবগুলো হলো আত্মশুদ্ধি, জবাবদিহি, শরিয়াহ আইন ও সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন।’

বিদ্যমান আইনে দুর্নীতি, দুঃশাসন, চুরি, ধর্ষণসহ অন্যায়-অনাচার বন্ধ করা যায়নি জানিয়ে শরিয়াহ আইন করার দাবি জানান আশরাফ আলী আকন। সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সব প্রস্তাবে সবাই একমত হবে বলে কমিশন মনে করে না। কমিশনের পক্ষ থেকে মতামতগুলো পর্যালোচনা করা হবে বলেন তিনি।

আগামী শনিবার থেকে প্রতিদিনই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন একাধিক দলের সঙ্গে সংলাপ করবে বলে জানান আলী রীয়াজ। আগামী ১৫ মের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ করা হবে বলেন তিনি। তারপর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার কথা জানান।

ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে দলটির মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহম্মেদ সেখ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম উপস্থিত ছিলেন।

এ পর্যন্ত ৩২টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়ে একমত নয় বিএনপি
  • সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য না হয়ে নির্বাচনে গেলে শঙ্কা দেখা দেবে: জামায়াত
  • ‘পিপল ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’ নাম চায় ইসলামী আন্দোলন