উখিয়ায় দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত আরও একজনের মৃত্যু
Published: 9th, April 2025 GMT
কক্সবাজারের উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম কুতুপালং এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে আহত এক নারীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা চারে দাঁড়িয়েছে।
নিহত ব্যক্তির নাম রওশন আরা (৩৮)। তাঁর স্বামী মো.
পুলিশ জানায়, পশ্চিম কুতুপালং এলাকায় ভিটাবাড়ি নিয়ে চাচাতো ভাইবোনদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধপূর্ণ ভিটায় পাকা দেয়াল নির্মাণকে কেন্দ্র করে গত রোববার সকালে দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। ওই দিনই সংঘর্ষে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তিনজন নিহত হন। আহত হন আরও চারজন। এর মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
রাজাপালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন বলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। সংঘর্ষে উভয় পক্ষ ধারালো অস্ত্র দা ও ছুরি ব্যবহার করে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফ হোসেন বলেন, চিকিৎসাধীন আরও এক নারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুই পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে দুটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ধরার চেষ্টা চলছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানের পর মা-বাবা জানলেন ভ্রূণটি অন্যের ছিল
অস্ট্রেলিয়ায় আইভিএফ (ইন–ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানের আশায় এ–সংক্রান্ত একটি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের শরণাপন্ন হয়েছিলেন এক দম্পতি। এ পদ্ধতিতে তাঁদের সন্তানও জন্মগ্রহণ করে। তবে পরে তাঁরা জানতে পারেন বড় ভুল হয়ে গেছে। যে ভ্রূণটি থেকে সন্তানের জন্ম হয়েছে সেটি তাঁদের নয়, অন্য কোনো দম্পতির।
অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম বৃহত্তম আইভিএফ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মোনাশ আইভিএফের একটি ক্লিনিকে ভুল ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের এমন ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে প্রতিষ্ঠানটি একে মানুষের ভুল বলে উল্লেখ করেছেন।
আইভিএফ পদ্ধতিতে শরীরের বাইরে কৃত্রিম পরিবেশে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর নিষিক্তকরণের কাজ করা হয়। পরে এ ভ্রূণকে কোনো নারীর গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হয়। এ পদ্ধতিতে জন্মগ্রহণ করা সন্তানকে চলতি কথায় বলা হয় টেস্টটিউব বেবি।
মোনাশ আইভিএফ কোম্পানি বলেছে, তারা ফেব্রুয়ারিতে জানতে পারে যে তাদের ব্রিসবেন ক্লিনিকে একজন নারীর গর্ভে ভুল ভ্রূণ স্থানান্তর করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই নারী সন্তানও জন্ম দিয়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শিশুটির মা-বাবার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে তাঁরা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।অস্ট্রেলিয়ায় যত আইভিএফ চিকিৎসা হয়, তার প্রায় এক–চতুর্থাংশই মোনাশ আইভিএফ কোম্পানির তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ বলছে, জন্মদানকারী মা-বাবা তাঁদের অবশিষ্ট হিমায়িত ভ্রূণ অন্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানোর অনুরোধ করার পর তারা জানতে পারে, এ দম্পতির অতিরিক্ত একটি ভ্রূণ সংরক্ষিত আছে। এতে প্রতিষ্ঠানটি নিশ্চিত হয়, ভুল ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের ঘটনাটি ঘটেছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাইকেল নাপ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা যারা মোনাশ আইভিএফের সঙ্গে যুক্ত, তারা সবাই এ ঘটনায় মর্মাহত। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সবার কাছে আমরা ক্ষমা চাইছি।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি বাড়তি কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে। তাদের বিশ্বাস, এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শিশুটির মা-বাবার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে তাঁরা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এদিকে ভুল ভ্রূণ স্থানান্তরের ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর মোনাশ আইভিএফ কোম্পানির শেয়ারে ধস নেমেছে। মোনাশ আইভিএফের শেয়ারের দর ২৪ শতাংশ কমেছে। ২০১৯ সালের পর এত বড় দরপতনের ঘটনা তাদের ঘটেনি।
অস্ট্রেলিয়ার সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জকে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি এ ঘটনাকে দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করেছে। তবে তারা মনে করে, এ ঘটনায় তাদের আর্থিক সক্ষমতার ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।
মোনাশ আইভিএফ বলেছে, একটি স্বাধীন তদন্ত পরিচালনার জন্য তারা একজন আইনজীবীকে নিযুক্ত করেছে। তা ছাড়া রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ও রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজি অ্যাক্রেডিটেশন কমিটিকে ঘটনাটি অবহিত করা হয়েছে। রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজি অ্যাক্রেডিটেশন কমিটি হলো প্রজনন স্বাস্থ্যবিষয়ক অলাভজনক সংস্থা ফার্টিলিটি সোসাইটি অব অস্ট্রেলিয়ার অংশ।
ফার্টিলিটি সোসাইটি কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, এ ধরনের ঘটনা বিরল। এতে আরও বলা হয়, প্রজনন পরিষেবার প্রতি রোগীদের যথেষ্ট আস্থা আছে। নিরাপদে ভ্রূণ সামলানো ও ভ্রূণের পরিচয় শনাক্ত করাটা একটি মৌলিক দায়িত্ব।
মোনাশ আইভিএফ সরকারি কর্তৃপক্ষ কুইন্সল্যান্ড হেলথকে ঘটনাটি অবহিত করেছে। কুইন্সল্যান্ড হেলথ কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা সবে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ শুরু করেছে। কুইন্সল্যান্ড হেলথের এক মুখপাত্র বলেন, ‘কুইন্সল্যান্ডে মোনাশ আইভিএফের ক্লিনিকগুলোতে সুরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করতে এবং যেকোনো ঝুঁকি চিহ্নিত ও প্রশমিত করতে আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করব।’