ধীরে ধীরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠছে। আর তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি মানুষের মতো সক্ষমতা অর্জন করেছে কি না, তা জানতে চান অনেকেই। শুধু তা–ই নয়, এআই মানুষের কোন ধরনের কাজ কেড়ে নেবে, তা নিয়েও বিশ্বজুড়ে চলছে বিস্তর আলোচনা। অনেকেরই ধারণা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভবিষ্যতে মানুষের চেয়ে স্মার্ট হবে। এর ফলে এআই মানবসভ্যতার অস্তিত্বের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলেও মনে করেন তাঁরা।

মানুষের সমান বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স (এজিআই) বলা হয়ে থাকে। সম্প্রতি গুগল ডিপমাইন্ডের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের আগেই এজিআই মাত্রার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দেখা মিলতে পারে। তখন বিশ্বজুড়ে এজিআইয়ের বিশাল সম্ভাবনা ও প্রভাব থাকবে। এর ফলে মানবজাতি অস্তিত্বের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এমনকি মানবতাকে স্থায়ীভাবে ধ্বংসও করতে পারে এজিআই।

ডিপমাইন্ডের গবেষণায় এজিআইয়ের ঝুঁকিকে এআইয়ের অপব্যবহার, ভুল ক্ষেত্রে প্রয়োগ, এআইয়ের ভুল ও কাঠামোগত ঝুঁকি—এ চারটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়। গবেষণায় ঝুঁকি মোকাবিলায় বিভিন্ন কৌশল তুলে ধরা হলেও এজিআইয়ের কারণে কীভাবে মানবসভ্যতা ধ্বংস হবে, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি। তবে ভবিষ্যতে মানবজাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার পাশাপাশি এজিআই প্রযুক্তির উন্নয়ন ও তত্ত্বাবধানের জন্য জাতিসংঘের আদলে সংস্থা তৈরি করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ডিপমাইন্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডেমিস হাসাবিস।

প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারি মাসেও ডিপমাইন্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেমিস হাসাবিস এজিআইয়ের প্রভাব নিয়ে নিজের শঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে এজিআই প্রযুক্তির দেখা মিলতে পারে বলে জানিয়েছিলেন।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ত র ম ব দ ধ মত ত

এছাড়াও পড়ুন:

গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, পরিবার বলছে ‘এআইয়ে বানানো আপত্তিকর ভিডিওর’ জেরে আত্মহত্যা

লালমনিরহাটের আদিতমারীতে গত রোববার এক গৃহবধূর (২০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর পরিবারের দাবি, পারিবারিক বিরোধের জেরে এআই দিয়ে স্বামীর স্বজনের বানানো আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় মানসিক যন্ত্রণায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

ওই গৃহবধূর স্বামী (২৮) জাপানপ্রবাসী। ১০ মাস আগে তাঁদের বিয়ে হয়। গৃহবধূরও স্বামীর কাছে জাপানে যাওয়ার কথা ছিল।

পুলিশ বাড়ির শোবার ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে। একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়। সেখানে গৃহবধূ তাঁর স্বামীর এক স্বজন পর্তুগালপ্রবাসী মোহাম্মদ নাহিন শেখ ওরফে মৃদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

গৃহবধূর ভাই অভিযোগ করেন, এআই প্রযুক্তি দিয়ে তাঁর বোনের আপত্তিকর ভিডিও বানানো হয়েছিল। এটি বানানো ও আত্মীয়স্বজনের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি স্বামীর স্বজন মৃদুল করেছেন বলে বোন তাঁদের বলেছিলেন। সুইসাইড নোটেও তাঁর নাম লিখে গেছেন। তাঁরা বোনকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু মানসিকভাবে তিনি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। যন্ত্রণা সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন বোন।

গৃহবধূর স্বজনদের অভিযোগ, জাপানপ্রবাসীর সঙ্গে বিয়ে মেনে নিতে পারেননি তাঁর (বর) স্বজন মৃদুল। একপর্যায়ে এটি পারিবারিক বিরোধে রূপ নেয়। পরে আপত্তিকর ভিডিও বানিয়ে একটি ভুয়া আইডি থেকে সেটি স্বজনদের কাছে পাঠানো হয়।

বক্তব্য জানার জন্য গৃহবধূর জাপানপ্রবাসী স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোহাম্মদ নাহিন শেখ ওরফে মৃদুলকে অভিযুক্ত করেন। স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করে তিনি বিচার দাবি করেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে পর্তুগালপ্রবাসী নাহিন শেখ ওরফে মৃদুলের সঙ্গে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হয়। তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, তাঁর জাপানপ্রবাসী স্বজনের সঙ্গে অন্য মেয়ের সম্পর্ক আছে। সে কারণে এই মেয়েকে (মৃত গৃহবধূ) বিয়ে করতে চায়নি। পরিবারের চাপে পড়ে বিয়ে করেছিল। বিয়ের দেনমোহরের ১০ লাখ টাকা না দিতে জাপানপ্রবাসী এই নাটক করেছেন। আপত্তিকর ভিডিওর বিষয়ে তাঁর ভাষ্য, তাঁর আইডিতে ৭ মিনিট ৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও আসে। তিনি সেটা তাঁর স্ত্রীকে দেখান। ভিডিওটি নিয়ে তাঁর জাপানপ্রবাসী স্বজন ও পরিবারের লোকজন গৃহবধূকে মানসিক নির্যাতন করেছেন।

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আকবর বলেন, লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে গত সোমবার গৃহবধূর ময়নাতদন্ত হয়। পরে লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে পরিবারকে মামলা করতে বলা হয়েছে।

গৃহবধূর ভাই প্রথম আলোকে বলেন, বোনকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া ও আপত্তিকর ভিডিও তৈরি করে পাঠানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করবেন তাঁরা। তাঁদের কাছে সব তথ্য-প্রমাণ আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, পরিবার বলছে ‘এআইয়ে বানানো আপত্তিকর ভিডিওর’ জেরে আত্মহত্যা