শৌচাগারে তরুণীর লাশ, রক্তাক্ত নানা-নানি কাতরাচ্ছিলেন ঘরের সামনে
Published: 9th, April 2025 GMT
রাত দুইটা। হঠাৎ করে ঘর থেকে শোনা যায় চিৎকার। বাড়ির লোকজন গিয়ে দেখেন গলায় রক্তাক্ত জখম নিয়ে ঘরের সামনে কাতরাচ্ছেন বৃদ্ধ দম্পতি। এর মধ্যেই তাঁরা বলেন তাঁদের নাতনি কোথায় খুঁজে দেখতে। একপর্যায়ে খোঁজাখুঁজি করে ঘরের শৌচাগারে পাওয়া যায় তাঁদের নাতনির লাশ।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ পৌরসভার দক্ষিণ গাছবাড়িয়া নয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত তরুণীর নাম আরজু আকতার (২০)। তিনি নানাবাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। তাঁর বাড়ি উপজেলা কাঞ্চনাবাদ এলাকার এলাহাবাদ গ্রামে। তিনি উপজেলার একটি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আহত দুজন হলেন আবদুল হাকিম (৭৫), ফরিদা বেগম (৬০)। তাঁরা দুজন আরজুর নানা-নানি। তাঁদের আহত অবস্থায় প্রথমে চন্দনাইশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থা শঙ্কাজনক হওয়ায় দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবদুল হাকিম ও ফরিদা বেগম একটি সেমিপাকা ঘরে থাকতেন। পাশে তিনতলা ভবনে তাঁর দুই ছেলের পরিবারের সদস্যরা থাকেন। গত বৃহস্পতিবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন হাকিম–ফরিদার নাতনি আরজু। তিনিও নানা-নানি যে ঘরে থাকেন, এর একটি কক্ষে থাকতেন। গতকাল রাতে সেখানে আসেন নাজিম উদ্দিন (২৮) নামের এক যুবক। তিনি আরজুর নানি ফরিদার বোনের ছেলে। তিনিও সেমিপাকা ঘরটিতে রাতে ঘুমাচ্ছিলেন।
আহত দম্পতি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রূপনগরে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা উদ্বোধন
এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিশুদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা (মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে স্কুল অব লাইফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে এটির উদ্বোধন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেন রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা।
আয়োজকেরা জানান, প্রতি শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। খেলাধুলার মধ্য থাকবে দাবা, লুডু, ক্যারম, দড়ি লাফ ও ব্যাডমিন্টন। এ ছাড়াও থাকবে ছবি আঁকা, হস্তশিল্প ও সামাজিকীকরণের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাঠ ও পার্কের অপ্রতুলতা ঢাকা শহরের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। শিশুদের খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি একটি কার্যকর সমাধান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে, শহর হবে প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্কুল অব লাইফের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অনুপম হোসেন বলেন, ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরি করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। অর্থ ও স্থান সংকুলান বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষে দ্রুত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। তবে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের স্থান গড়ে তোলা সম্ভব। নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব লাইফের সদস্যসচিব সাবরিনা নওরিন লিমু, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মকর্তা, মিরপুর সেকশন- ৭ এর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের এলাকাবাসী ও শিশু-কিশোরেরা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিঠুন।