দিল্লির বাঙালিপাড়ার মাছবাজার বন্ধের হুমকি গেরুয়াধারীদের
Published: 9th, April 2025 GMT
ছবি: থামে মাছের ছবি এবং ভেতরে https://x.com/MahuaMoitra?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1909610390700671162%7Ctwgr%5E0f47f73e19ebaf9ff53fbee18992435844d44fc2%7Ctwcon%5Es1_&ref_url=https%3A%2F%2Ftimesofindia.indiatimes.com%2Fcity%2Fdelhi%2Ffish-sellers-threatened-in-c-r-park-video-circulated%2Farticleshow%2F120104486.
দিল্লির বহুপরিচিত বাঙালি এলাকা চিত্তরঞ্জন পার্কে মন্দিরঘেঁষা এক মাছের বাজার বন্ধের হুমকি দিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। বাজারে গিয়ে মাছ ব্যবসায়ীদের তাঁরা জানিয়েছেন, এই বাজার বন্ধ করতে হবে। কারণ, মন্দিরলাগোয়া এই বাজার মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট করছে।
গেরুয়াধারী ওই যুবকেরা দোকানি ও ক্রেতাদের বলেন, এই বাজার সনাতন ধর্ম পরিপন্থী কাজ করছে। সনাতন ধর্মে প্রাণী হত্যা নিষিদ্ধ। মন্দির ও মাছবাজার একেবারে লাগোয়া। এই বাজার তাই বন্ধ করতে হবে।
গেরুয়াধারী যুবকদের একজন ক্রেতা-বিক্রেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘এটা আমার নির্দেশ।’
১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর দক্ষিণ দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে চলে আসা বাঙালি হিন্দু উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বিস্তীর্ণ এলাকায় বাঙালিদের জমি দিয়েছিল সরকার। সেখানকার পুরোনো বাসিন্দা ও বাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত ৬০ বছরে এই ধরনের হুমকি এই তল্লাটের কোনো বাজারের দোকানিদের দেওয়া হয়নি। তাঁরা বলেন, বাঙালি ও মাছ প্রায় সমার্থক। এ কথা অবাঙালিদের জানা।
তৃণমুল কংগ্রেস নেত্রী ও সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র গতকাল মঙ্গলবার একটি ভিডিও শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘অনুগ্রহ করে দেখুন কীভাবে বিজেপির গুন্ডারা চিত্তরঞ্জন পার্কের মৎস্যপ্রেমী বাঙালিদের হুমকি দিচ্ছেন। স্থানীয় লোকজনের দাবি, ৬০ বছরে এমন ঘটনা এই প্রথম।’
ভিডিওতে দেখা যায়, ১ নম্বর মার্কেটের এক দোকানি ওই যুবকদের বলছেন, এই বাজার দিল্লি উন্নয়ন পর্ষদের (ডিডিএ) তৈরি করা। তাঁরাই এই বাজারে মাছ বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন।
এর জবাবে এক গেরুয়াধারীকে বলতে শোনা যায়, ডিডিএ এমন বহু অকাজ করেছে। তাদের ব্যবস্থাও করা হবে। আপনাদের বলা হচ্ছে এখানে মাছ বিক্রি না করতে। সনাতন ধর্মে প্রাণী হত্যা অপরাধ।
এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, আসামের কামাক্ষ্যা মন্দিরে পশু-প্রাণী বলি হয়। তাঁকে থামিয়ে ওই যুবক বলেন, সেসবের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেখানেও প্রতিবাদ হচ্ছে। তাঁর দাবি, মন্দির ও বাজারের দেয়াল লাগোয়া। মাছ বিক্রির দরুন মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট হচ্ছে।
দোকানিদের দাবি, বাজারের মাছ বিক্রেতারাই ওই মন্দির তৈরি করেছিলেন। সেখানে নিয়মিত পূজা করা হয়। কেউ কোনো দিন কোনো রকম আপত্তি বা প্রতিবাদ করেননি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মহুয়া মৈত্রের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লি বিজেপির সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেব গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে ভিডিওটি ভুয়া। ওটা যাঁরা করেছেন তাঁরা চিত্তরঞ্জন পার্ক এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চান।’ সচদেব বলেন, তাঁরা এই হুমকির কড়া নিন্দা করেন ও পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
সচদেব বলেন, মন্দিরের পবিত্রতা প্রত্যেকেরই রক্ষা করা উচিত। এই বাজারের দোকানিরা প্রত্যেকেই সব সময় সেই পবিত্রতা রক্ষা করে চলেছেন। তিনি বলেন, এই বাজার বেআইনি নয়। তা ছাড়া এই তল্লাটের বাসিন্দাদের কাছেও মাছ প্রয়োজনীয়। মাছ বিক্রেতারাও সব সময় পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করে ব্যবসা করেন। অঞ্চলের সামাজিক-ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও তাঁরা নিয়মিত অংশ নেন।
দিল্লিতে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে মাত্র তিন মাস। আম আদমির পার্টির আমলে অবশ্য সনাতন ধর্মাবলম্বীরা রাম নবমী উপলক্ষে কোনো কোনো এলাকায় মাছ–মাংসের দোকান বন্ধ রাখার ফরমান জারি করেছেন। উত্তর প্রদেশের কোনো কোনো জেলা শহরেও এই হুকুম জারি হয়েছে। কিন্তু বাঙালি অধ্যুষিত চিত্তরঞ্জন পার্কে এই জাতীয় হুমকি এই প্রথম। ওই গেরুয়াধারী যুবকেরা নিজেদের সনাতনী পরিচয় দিলেও কোন সংগঠনের পক্ষে ওই হুকুম জারি করছেন, তা জানা যায়নি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই ব জ র ব যবস থ মন দ র
এছাড়াও পড়ুন:
রাবির ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ‘বি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
‘বি’ ইউনিটে সর্বমোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৪২ হাজার ৪৩৩ জন। এর মধ্যে, বাণিজ্য গ্রুপের ১৭ হাজার ৬৮৪ জনের মধ্যে ৬ হাজার ২১৮ জন (৩৫.১৬ শতাংশ) এবং অ-বাণিজ্য গ্রুপে ১৭ হাজার ৪০৩ জনের মধ্যে ৯৫০ জন (৫.৪৬ শতাংশ) উত্তীর্ণ হয়েছেন। অ-বাণিজ্য গ্রুপে বিজ্ঞান শাখায় ৬১৮ জন ও মানবিক শাখায় ৩৩২ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। উভয় গ্রুপ মিলিয়ে গড় পাশের হার ২০.৪৩ শতাংশ।
পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত সর্বোচ্চ নম্বর বাণিজ্য গ্রুপে ৭৭.৫০ এবং অ-বাণিজ্য গ্রুপে ৬০.২৫। এই ইউনিটটিতে মোট আসন সংখ্যা ৫৫৯টি। এর মধ্যে, বাণিজ্য গ্রুপের জন্য ৩৬৭টি, অ-বাণিজ্য গ্রুপে বিজ্ঞান শাখার জন্য ১৬৬টি এবং মানবিক শাখার জন্য ২৬টি আসন বরাদ্দ রয়েছে।
উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পরবর্তী করণীয় নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে https://admission.ru.ac.bd/ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ University of Rajshahi থেকে দেখা যাবে।
বিজনেস স্টাডিজ অনুষদভুক্ত ছয়টি বিভাগ ও ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট ‘বি’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত। ভর্তি সংক্রান্ত রাবি ওয়েবসাইটে https://application.ru.ac.bd/ লগইন করে ভর্তিচ্ছুরা নিজ নিজ ফলাফল দেখতে পারবে।
এজন্য এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষার রোল নম্বর, শিক্ষা বোর্ডের নাম ও পাশের বছর প্রয়োজন হবে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী