মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) আইপিলের দুই ম্যাচের চার ইনিংসেই এসেছে দুইশর বেশি রান! তবে রাতের ম্যাচে আলাদা উত্তেজনা ছিল। পাঞ্জাব কিংসের মোকাবেলা করেছিল চেন্নাই সুপার কিংস। আর হলুদ শিবিরের ম্যাচ মানেই মহেন্দ্র সিং ধোনির মাঠে নামা। ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক ম্যাচ জেতাতে পারুক বা না পারুক, বাইশ গজে তার উপিস্থিতি মানেই একটা উৎসব। তবে ধোনির থেকে অন্তত গতরাতের জন্য হলেও লাইমলাইটা কেড়ে নিয়েছেন প্রিয়াংশ আর্য নামেরে এক তরুণ।

আর্যের ৩৯ বলের সেঞ্চুরিতে পাঞ্জাব নির্ধারিত কুড়ি ওভারে ৬ উইকেটে করেছিল ২১৯ রান। জবাবে ৫ উইকেটে ২০১ রান পর্যন্ত যেতে পেরেছে চেন্নাই। ১৮ রানে ম্যাচ জেতে পাঞ্জাব।

মুল্লানপুরে ঘরের মাঠে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রেয়াস আইয়ার। তবে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। ৮৩ রান তুলতেই হারিয়েছিল ৫ উইকেট। সেই পাঁচ ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। অর্থাৎ, প্রথম ৫ উইকেট হারানোর পর পাঞ্জাব স্কোরবোর্ডে তুলেছে আরও ১৩৬ রান। আইপিএলে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পতনের পর সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহের নতুন রেকর্ড এটি।

আরো পড়ুন:

হারের হ্যাটট্রিক গড়ল চেন্নাই

আইপিএলের জন্য ধোনির থাকা আবশ্যক: ক্রিস গেইল

ম্যাচে ৭ চার ও ৯ ছক্কায় সেঞ্চুরি করেছেন প্রিয়াংশ, যা আইপিএলে চতুর্থ দ্রুততম। শেষ পর্যন্ত ৪২ বলে ১০৩ রান করে আউট হন তিনি। ৮৩ রানে একাদশের অর্ধেক প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান হারানোর পর শশাঙ্ক সিংকে নিয়ে খেলতে থাকেন প্রিয়াংশ। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দুজন মাত্র ৩৪ বলে ৭১ রান যোগ করেন। দলীয় ১৫৪ রানে প্রিয়াংশ আউট হলে, প্রোটিয়া অলরাউন্ডার মার্কো ইয়ানসেনকে সাথে নিয়ে এগুতে থাকেন শশাঙ্ক। সেই জুটিতে ৩৮ বলে আসে ৬৫ রান।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে চেন্নাই শুরুটা ভালোই করে। ওপেনার রাচিন রবিন্দ্র ২৩ বলে ৩৬ রান করেন। আরেক কিউই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ৪৯ বলে ৬৯ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন। শিভম দুবে ২৭ বলে ৪২ রান করে ম্যাচে উত্তেজনা ফিরিয়ে আনেন। এরপরও বল ও রানের পার্থক্য অনেক বেশি ছিল। ধোনি মাত্র ১২ বলে ৩ ছক্কা ও ১ চারে ২৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ পর্যন্ত চেন্নাই থামে ৫ উইকেটে ২০১ রানে।

পাঞ্জাব ৪ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে আছে। অন্যদিকে ৫ ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটি জিতে নবম স্থানে অবস্থান করছে চেন্নাই।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৫ উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

এই ৭ বদভ্যাসে আপনার কিডনি হতে পারে বিকল

১. ব্যথানাশক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার

আমরা প্রায়ই সাধারণ সমস্যায় ফার্মেসি থেকে ব্যথানাশক ওষুধ কিনে খাই। যেমন আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসপিরিন। এসব ওষুধ বেশি পরিমাণে বা অনেক দিন ধরে খেলে কিডনির ভেতরের ছোট নালিগুলোর ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা বয়স্ক বা যাঁদের আগে থেকেই কোনো রোগ আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এসব ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়। এ ধরনের ওষুধ কিডনির রক্তপ্রবাহ কমিয়ে দেয়। যদি ব্যথা কমাতে হয়, তাহলে কম ডোজের ওষুধ এবং অবশ্যই অল্প সময়ের জন্য খাবেন। তবে সবচেয়ে ভালো হয় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেলে।

২. যথেষ্ট পানি না খাওয়া

কিডনির প্রধান কাজ হলো পানির সাহায্যে শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়া। পানি কম খেলে কিডনি ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। গরমের দিনে পানি না খেলে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তখন প্রস্রাব ঘন ও গাঢ় হয়ে যায় এবং তাতে খনিজ উপাদান ও বর্জ্যের মাত্রা বেড়ে কিডনিতে পাথর বা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। তাই প্রতিদিন অন্তত দেড় থেকে দুই লিটার বা ছয়-আট গ্লাস পানি খাওয়া ভালো। অবশ্য গরমের দিনে বা ব্যায়াম করার সময় আরও বেশি পানি খাওয়া ভালো। তবে হৃদ্‌রোগ বা লিভারের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানি খেতে হবে।

আরও পড়ুনডাবের পানি কিডনির জন্য উপকারী হলে কিডনি রোগে খেতে নিষেধ করা হয় কেন২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪৩. অতিরিক্ত মদ্যপান

অ্যালকোহল আমাদের শরীরকে পানিশূন্য করে ফেলে। ফলে কিডনির স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হয়। বেশি অ্যালকোহল পান করলে রক্তচাপও বেড়ে যায়। এটা কিডনির জন্য ক্ষতিকর। আমরা জানি, অ্যালকোহল লিভারের ক্ষতি করে। লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেই চাপ পড়ে কিডনির ওপর। তাই অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকাই ভালো।

৪. ধূমপান করা

ধূমপান করলে ফুসফুসের সঙ্গে কিডনিরও ক্ষতি হয়। সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকা বিষাক্ত পদার্থ কিডনির কোষগুলোকে সরাসরি আঘাত করতে পারে। এ ছাড়া ধূমপাপের ফলে রক্তনালিগুলো সরু হয় এবং কিডনিতে রক্ত চলাচল কমিয়ে দেয়। ফলে কিডনি ঠিকভাবে করতে পারে না। ধূমপান ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিও বাড়ায়। এই দুটি রোগই কিডনির ক্ষতির অন্যতম কারণ। তাই ধূমপান ত্যাগ করা সবচেয়ে ভালো।

৫. অতিরিক্ত ওজন

যাঁদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, তাঁদের কিডনি রোগের ঝুঁকি বেশি। অতিরিক্ত ওজন হৃদ্‌রোগ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগ ডেকে আনে। এতে কিডনির কার্যকারিতা কমে যায়। শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কিডনির স্বাভাবিক কাজে বাধা দিতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। পেটের চর্বি বাড়াও কিডনির জন্য ক্ষতিকর। বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) অনুযায়ী ১৮.৫–২৪.৯–এর মধ্যে স্কোর থাকলে তা স্বাস্থ্যকর ধরা হয়। নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া এবং ব্যায়াম করলে ওজন কমে। গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে পাঁচ দিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁট বা হালকা দৌড়ানো কিডনির জন্য উপকারী।

আরও পড়ুনআপনার কিডনি কি সুস্থ আছে১৩ মার্চ ২০২৫৬. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার, যেমন ফাস্ট ফুড বা কোমল পানীয় কিডনির জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। এমনকি বেশি লবণ খাওয়াও বিপজ্জনক। ফাস্ট ফুডে প্রচুর লবণ, চিনি, ক্ষতিকর চর্বি ও রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে। বেশি লবণ খেলে শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং রক্তচাপ বাড়ে। আর আগেই বলেছি, রক্তচাপ বাড়া কিডনির জন্য ক্ষতিকর। প্রতিদিন ৬ গ্রামের (এক চা চামচ) বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়।

৭. পর্যাপ্ত না ঘুমানো

ঘুমের অভাবেও কিডনির সমস্যা হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা প্রতিদিন ৬ ঘণ্টার কম বা ১০ ঘণ্টার বেশি ঘুমায়, তাঁদের দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তাই বেশির ভাগ মানুষের জন্য প্রতিদিন ৭–৯ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের শরীরকে বিশ্রাম দেয় এবং কিডনিকেও ভালোভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। অনিদ্রা বা বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়ার মতো ঘুমের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

এসবের বাইরেও বয়স বা বংশগত ইতিহাস আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তবুও আমরা এসব বভ্যাস ত্যাগ করতে পারলে কিডনি সুস্থ রাখা সম্ভব।

সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট ও দ্য কনভারসেশন

আরও পড়ুনকিডনি ভালো রাখবে সকালের এই ৫ অভ্যাস০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ