চুমু তো একা খাওয়া যায় না, কৌশানীর সঙ্গে চুম্বন দৃশ্য নিয়ে পরমব্রত
Published: 9th, April 2025 GMT
ভারতীয় বাংলা সিনেমার গুণী পরিচালক সৃজিত মুখার্জি। ২০১২ সালে তিনি নির্মাণ করেন ‘হেমলক সোসাইটি’। আলোচিত এ সিনেমার আদলে সৃজিত নির্মাণ করছেন ‘কিলবিল সোসাইটি’। পূর্বের মতো সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছেন পরমব্রত চ্যাটার্জি। তবে কোয়েল মল্লিকের পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে কৌশানী মুখার্জিকে।
‘কিলবিল সোসাইটি’ সিনেমায় পরমব্রত-কৌশানীর চুম্বন দৃশ্য রয়েছে। প্রথমবার সিনেমায় চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করলেন কৌশানী। সেই অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে পরমব্রতকে বলিউডের সিরিয়াল কিসার ইমরান হাশমির সঙ্গে তুলনা করলেন এই অভিনেত্রী। এরপর বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। এবার কৌশানীর মন্তব্য নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন পরমব্রত।
‘বাইশে শ্রাবণ’খ্যাত অভিনেতা পরমব্রত চ্যাটার্জি বলেন, “এটা আর নতুন কী! লোকজন এটা মজা করে বলেন! এতে কোনো সমস্যা নেই। কে কতটা কী করতে পছন্দ করে, তার একটা নিজস্ব সীমারেখা থাকে। প্রত্যেকেরই নিজস্ব পছন্দ থাকে। আমি যখন অভিনেতা তখন চরিত্রের প্রয়োজনে এমন দৃশ্য করতে প্রস্তুত। কারণ চুম্বন ভালোবাসার একটা বহিঃপ্রকাশ। তাই অভিনেতা হিসেবে কোনো ছুৎমার্গ থাকা উচিত নয় বলে আমার মনে হয়। তবে এটা আমার ভাবনা, অন্যেরও একই ভাবনা হবে তার মানে নেই। প্রত্যেকের ভাবনাকে আমি সম্মান করি।”
আরো পড়ুন:
সড়ক দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত, মদ্যপ পরিচালক গ্রেপ্তার
কবে বিয়ে করবি, কবে বাচ্চা হবে, দেবের কাছে মায়ের প্রশ্ন
চুমু একা খাওয়া যায় না। কৌশানীর সম্মতিতে চুম্বন দৃশ্যের শুটিং হয়। তা জানিয়ে পরমব্রত চ্যাটার্জি বলেন, “আমাকে অনেক সিনেমায় এমন দৃশ্যে দেখা গিয়েছে। তবে পরিচালক আমাকে জানিয়েছেন, যে আমার বিপরীতে যিনি আছেন তিনিও রাজি। কারণ চুমু তো আর একা খাওয়া যায় না। অপরপক্ষের সম্মতিতেই শুট করেছি। পরিবেশটাও সেভাবে তৈরি করা হয়েছিল।”
পরমব্রত চ্যাটার্জির সঙ্গে চুম্বন দৃশ্যের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে কৌশানী বলেছিলেন, “আলাদা করে কোনো প্রস্তুতি নিতে হয়নি। সেটে ‘ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর’ থাকেন। স্বাচ্ছন্দ হতে অনেকটা সাহায্য করেছেন তিনি। শটের আগে আমি ভীষণ চাপে ছিলাম। সকাল থেকে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। কারো সঙ্গে কথা বলছিলাম না। আমার বিপরীতে পরমদা, পরমব্রত চ্যাটার্জি। পরমদা তো ইমরান হাশমি, দারুণ চুমু খায়। পর্দায় অনেককে চুমু খেয়েছে। তবে সৃজিতদাকে বলে রেখেছিলাম, এটা যেন এক টেকেই হয়ে যায়। এই দৃশ্যের রিটেক করা যাবে না।”
পরিচালনার পাশাপাশি সিনেমাটির চিত্রনাট্য রচনা করেছেন সৃজিত। পরমব্রত-কৌশানী ছাড়াও ‘কিলবিল সোসাইটি’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন— বিশ্বনাথ বসু, সন্দীপ্তা সেন, সৌমেন চক্রবর্তী প্রমুখ। আগামী ১১ এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চ ম বন দ শ য স স ইট
এছাড়াও পড়ুন:
বেলীর অভাবের ঘরে আলো হয়ে এলো ফুটফুটে ছেলে
স্বামী বাকপ্রতিবন্ধী, তাই কাজে নিতে চাননা কেউ। কখনও কাজ মেলে কখনও মেলে না। বেলী আক্তারের সংসারে তাই অভাব। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হয়। এই অভাবের সংসারে নববর্ষের ভোরে তার ঘরে আলো হয়ে এসেছে এক নতুন মুখ। ফুটফুটে ছেলে সন্তান জন্ম দিয়েছেন তিনি। আনন্দের এই সময়ও বেলীর দুশ্চিন্তা! স্বামী সোহেল রানা কাজের সন্ধানে তখন অনেক দূরে, সিলেটে। অন্যদিকে, গত সোমবার মারা গেছেন বেলীর মা।
সোমবার ভোর ৫টায় ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ছেলে সন্তান জন্ম দেন বেলী। হাসপাতালে তখন চিকিৎসক ছিলেন না। আয়াদের চেষ্টায় তার নরমাল ডেলিভারি হয়।
২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সোহেল ও বেলীর বিয়ে হয়। সোহেলের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কিসমত চামেশ্বরী গ্রামে। আর বেলীর বাড়ি একই উপজেলার রাজগাঁও গ্রামে।
রোববার রাত ২ টার দিকে বেলীর প্রসব ব্যথা ওঠে। দ্রুত তাকে ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে নেন স্বজনরা। স্বজনরা জানান, হাসপাতালে তখন চিকিৎসক ছিলেন না। আয়াদের চেষ্টায় তার নরমাল ডেলিভারি হয়। এটি তার প্রথম সন্তান।
‘সোহেল রানা কথা বলতে পারে না। অভাবের কারণে টাকার জন্য দেশের এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়ান তিনি। এমনকি প্রথম সন্তানের বাবা হয়েও স্ত্রী-সন্তানের পাশে থাকার সৌভাগ্য হয়নি তার। কাজের খোঁজে সিলেটে আছেন তিনি। তবে অন্যের মোবাইলে ভিডিও কলে তার ছেলে সন্তানের মুখ দেখে অনেক খুশি হয়েছেন। খুশিতে কান্না করে ফেলেছে সোহেল, বলেন সোহেলের ছোটভাই মিন্টু।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বেলীর মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। গম্ভীর হয়ে রয়েছেন। মুখে হাসি নেই। শারীরের অবস্থাও তেমন ভালো না।
বেলী জানান, এই সময় স্বামী পাশে না থাকায় খারাপ লাগছে। তাছাড়া কয়েকদিন আগে তার মা মারা গেছেন। কষ্ট লাগছে, নাতির মুখ তিনি দেখে যেতে পারলেন না।
বেলী বলেন, 'কিছু খেতে মন চাইলেও টাকার অভাবে খেতে পারিনি। দুই বেলা ভাতই ঠিকমতো জোটে না!'
তবে বাচ্চাকে অভাব বুঝতে দেবেন না বলে জানান তিনি। বেলী বলেন, 'ছেলেকে পড়ালেখা করাব, ডাক্তার বানাবো। আমার অভাবের সংসারে সেই এখন আলো।’
সোহেল রানার বাবা খাদেমুল ইসলাম বলেন, 'জন্মের পর থেকে সোহেল কথা বলতে পারে না। সংসারে অভাব থাকায় ছোট থেকে অন্যের বাড়িতে কাজ করত। এলাকায় কাজ না থাকলে অন্য জেলায় যেত।'
তিনি বলেন, 'বছরের প্রথম দিনে নাতিকে কোলে নিয়ে আনন্দ লাগছে। সোহেল ভিডিও কলে ছেলেকে দেখেছে। বাড়িতে থাকলে অনেক খুশি হতো।'
নাতির জন্য সবার কাছে দোয়া চান সোহেলের মা সালেহা বেগম।
বেলীর দাদী ফাতেমা বেওয়া বলেন, ‘চার ভাই-বোনের মধ্যে বেলী সবার ছোট। আমার নাতনির ছেলে হওয়ায় আমরা খুব খুশি। কয়েকদিন আগে বেলীর মা মারা যাওয়ায় আমি এখন তার বাড়িতে আছি। তাদের দেখাশুনা করছি।’
ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রকিবুল আলম চয়ন জানান, সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বেলী আক্তার ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'বাংলা বছরের প্রথম দিন সন্তানের মা হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। মা-সন্তান সুস্থ্ রয়েছে।'