সেই মেসি-জাভিদের সময় ৩৫ গোলের রেকর্ড গড়েছিল বার্সা। তারপর এই এবার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখন পর্যন্ত ৩২ গোল করেছেন লেভানডস্কি-ইয়ামালরা। অবশ্য ইউরোপিয়ান সর্বোচ্চ এই আসরে সবচেয়ে বেশি ৪৫ গোল করার রেকর্ড তাদের সেই ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে। এবার যে ফর্মে ছুটছে দলটি, তাতে হয়তো সেই রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে। আজ নিজেদের মাঠে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে নামছে বার্সা। 

জার্মান জায়ান্টদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এ পর্যন্ত যে পাঁচবার মুখোমুখি হয়েছে, কোনোটিতেই হারেনি তারা। তিন জয়ের শেষটি এসেছিল গেল ডিসেম্বরে ডর্টমুন্ডের মাঠেই। তথ্য পরিসংখ্যান ইঙ্গিত করছে ম্যাচে বার্সা নিশ্চিত ফেভারিট। ‘এসব রেকর্ড, পরিসংখ্যান, অতীতে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। যা হবে তা নতুন কিছু। আমরা ইউরোপের শীর্ষে থাকার মিশনে নেমেছি, সেখানে আমাদের সামনে প্রতিপক্ষ বরুশিয়া। যারা অত্যন্ত শক্তিশালী একটি দল।’ গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই নিজেদের হালকা রাখার চেষ্টা করেন বার্সার জার্মান কোচ হ্যান্সি ফ্লিক।

এদিন আরও একটি আকর্ষণীয় ম্যাচ হতে চলেছে প্যারিসে। যেখানে ইংলিশ ক্লাব অ্যাস্টন ভিলা মুখোমুখি হবে প্যারিসের ঘরের ক্লাব পিএসজির। ম্যাচে একটি অন্য লড়াইও চলবে। যেখানে একদিকে অ্যাস্টন ভিলার আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, অন্যদিকে প্যারিসের পুরো গ্যালারি! কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল জিতে মার্টিনেজের উদযাপনে ফরাসিদের নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক একটি ব্যাপার ছিল বলে মনে করে অনেক প্যারিসবাসী। ‘জানি প্যারিস আমার জন্য ভালোবাসা নিয়ে অপেক্ষা করবে না। তারা আমাকে দুয়ো শুনিয়ে যাবে। তবে আমিও তাদের ওখান থেকে জয় নিয়ে ফিরে আসতে চাই।’ 

মার্টিনেজের এমন ঘোষণা ম্যাচের আগেই উত্তাপ ছড়িয়ে দিয়েছে। সেই হিসেবে বার্সেলোনায় তেমন কিছু নেই। এখানে এসে ডর্টমুন্ডের ক্রোয়েশিয়ান কোচ নিকো কোভাক বরং তাঁর সাবেক কোচিং স্টাফ ফ্লিকের প্রশংসা করে পরিবেশটাই শান্ত করে দিয়েছেন। ‘এটা একটা দারুণ ব্যাপার যে এক সময়কার সহকারীর সঙ্গে এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে হচ্ছে। ফ্লিক অসাধারণ কোচ, ভীষণ কৌশলী।’

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চলার মাঝেই গেল জানুয়ারিতে কোচ নুরি শাহিনকে ছাঁটাই করে বরুশিয়া নিকো কোভাককে নিয়োগ দেয়। ইউরোপিয়ান ফুটবলে রক্ষণাত্মক কোচ হিসেবে পরিচিতি তাঁর। তাই আজ ড্র করাতেই মনোযোগ থাকবে তাঁর।

৩-৫-২ ফরমেশনে তাঁর রক্ষণ বেশ শক্তিশালী। তবে গায়ানিয়ান ফরোয়ার্ড শেরু গুরুসে দারুণ ফর্মে রয়েছেন এ আসরে। রাফিনিয়াহর ১১ গোলের চেয়ে একটি কম করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল সংগ্রহকারী এখন গুরুসে। লেভা-রাফিনিয়াহ-গাভি-ইয়ামালদের দিয়ে বার্সা শুরুর একাদশ হতে পারে। সেখানে তোরেসকে হয়তো দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে নামতে পারেন ফ্লিক। কেননা এই বরুশিয়ার সঙ্গেই গেল ডিসেম্বরে জোড়া গোল করেছিলেন তিনি। 

আজকের ম্যাচে ইয়ামালের কাছ থেকে দারুণ কিছু দেখা যেতে পারে– ব্রাজিলের কিংবদন্তি রোনালদিনহো অন্তত দর্শক হিসেবে সেটাই দেখতে চান। স্প্যানিশ এক দৈনিকে দেওয়া প্রতিক্রিয়াতে তিনি জানিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল দেখতে চান বার্সেলোনা বনাম পিএসজির মধ্যে। রোনালদিনহোর সেই আশা পূরণের প্রথম ধাপ অন্তত আজ পার করতেই হবে দুটি দলকে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অ য স টন ভ ল প এসজ বর শ য় র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা

কিশোরগঞ্জ শহরের আলোচিত পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে বর্তমানে আছে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৬ টাকা। সর্বশেষ শনিবার দান বাক্সের টাকা রূপালী ব্যাংকে জমার পর পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিাটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। 

প্রতি তিন মাস বা তার কিছু বেশি সময় পরপর মসজিদের দান বাক্সগুলো খোলা হয়। তাতে প্রতিবারই কয়েক কোটি টাকা পাওয়া যায়। সর্বশেষ শনিবার ১১টি দান বাক্স খুলে মিলেছে ২৮ বস্তা টাকা। গণনা শেষে পাওয়া গেছে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা। পাওয়া গেছে বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার। 

সেনা সদস্য, পুলিশ ও আনসারের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মিলে মোট ৩৯৪ জন মানুষ টাকা গণনায় অংশ নেন। সব টাকা রূপালী ব্যাংকের হিসাবে জমা করা হয়েছে। বিদেশি মুদ্রা আর অলংকারের মূল্য নির্ধারণ করে সেসব টাকাও ব্যাংকে রাখা হবে।

জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেছেন, দান বাক্সে পাওয়া টাকার লভ্যাংশ থেকে অসহায় জটিল রোগীদের অনুদান দেওয়া হয়। মসজিদ কমপ্লেক্স মাদ্রাসার এতিম ছাত্রের সব খরচ, আনসার সদস্যদের বেতনসহ মসজিদ পরিচালনার যাবতীয় খরচও মেটানো হয়। জমানো টাকা থেকে পুরুষ ও মহিলাদের নামাজের আরও দুটি শেড নির্মাণ করা হবে। এছাড়া একটি আধুনিক পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। এর জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। ৬ তলা বিশিষ্ট নতুন মসজিদ কমপ্লেক্সে একসঙ্গে প্রায় ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। ৫ হাজার নারী মুসল্লির জন্যও পৃথক ব্যবস্থা থাকবে।

কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম দিকে নরসুন্দা নদীর দক্ষিণ তীরে হারুয়া এলাকায় প্রায় পৌনে দুইশ’ বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন মসজিদ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে ১৯৭৯ সাল থেকে। তখন থেকে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি হন। সাধারণত পৌর মেয়ররা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ