নরসিংদীতে দুই ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় না গিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে ‘বিচার’
Published: 9th, April 2025 GMT
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় দুই স্কুলছাত্রী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তাদের পরিবার। ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর বাবা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত আটজন এলাকায় প্রভাবশালী এবং তাঁদের পূর্বপরিচিত। তাঁদের মামলার করার মতো সামর্থ্য নেই। তাই থানায় না গিয়ে তাঁরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চেয়েছেন।
দুই ছাত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই দুই স্কুলছাত্রী গত সোমবার বিকেলে দুই তরুণের সঙ্গে নদীতে নৌকায় বেড়াতে গিয়েছিল। সন্ধ্যায় ওই দুই তরুণ নৌকাটি তীরে ভিড়িয়ে আনেন। এ সময় কৌশলে তাঁরা দুই ছাত্রীকে একটি বিদ্যালয়ের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে যান। পরে তাঁরা আরও ছয় বন্ধুকে ডেকে আনেন। এরপর তাঁরা ভয় দেখিয়ে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। পরে সেখানেই দুজনকে রেখে চলে যান তাঁরা। ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী যার যার বাড়িতে ফিরলে তাদের পরিস্থিতি দেখে কারণ জানতে চান তাদের পরিবারের সদস্যরা। একপর্যায়ে তারা ঘটনার বিস্তারিত জানায়।
ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘ঘটনা জানার পরই চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে বিচার চেয়েছি। তিনি আমাদের বলেছেন, বিচার করে দেবেন। মেয়ের ভবিষ্যতের চিন্তা থেকে থানা-পুলিশের ঝামেলায় যেতে চাই না।’
ভুক্তভোগী আরেক ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘রাতে বাড়িতে ফেরার পর ঘটনা শুনে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। তারা খুবই প্রভাবশালী। আমরা কি আর তাদের সঙ্গে পারব? আমরা গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই, থানা-পুলিশ করার মতো সামর্থ্য আমার নেই। মেয়েকে ভবিষ্যতে বিয়ে দিতে হবে, এই চিন্তায় এলাকার চেয়ারম্যানের কাছেই বিচার দিয়েছি।’
এ বিষয়ে ওই ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর পরিবার ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছে। তারা থানা-পুলিশ চায় না, আমার কাছেই বিচার চায়। বিস্তারিত জানার জন্য আমি লোক পাঠিয়েছি। এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে দ্রুতই বিচারে বসব।’ ধর্ষণের ঘটনা গ্রাম আদালতে মীমাংসাযোগ্য কি না, তা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান কোনো মন্তব্য করেননি।
এ ব্যাপারে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল মাহমুদ বলেন, ধর্ষণের ঘটনা জানা নেই। কেউ থানায় এসে লিখিত অভিযোগও দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অবশেষে মামলা করলেন ধর্ষণের শিকার দুই ছাত্রীর বাবা
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় দুই স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় অবশেষে থানায় মামলা হয়েছে। দুটি মামলাতেই আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২-৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলা হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ। তিনি জানান, বুধবার রাতে দুই ছাত্রীর বাবা লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেন। অভিযোগটি রাতেই মামলা হিসেবে নেওয়া হয়।
দুই মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন ইমরান মিয়া (১৯), রাজ্জাক মিয়া (২৫), আবদুর রহমান (২৭), ইস্রাফিল মিয়া (২৩), সাইফুল মিয়া (২৮), রমজান মিয়া (২২), কাইয়ুম মিয়া (২১) ও মুন্না মিয়া (২৩)।
এর আগে ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর বাবা জানিয়েছিলেন, ধর্ষণে অভিযুক্ত আটজন এলাকায় প্রভাবশালী এবং তাঁদের পূর্বপরিচিত। তাঁদের মামলা করার মতো সামর্থ্য নেই। তাই থানায় না গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চেয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুননরসিংদীতে দুই ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় না গিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে ‘বিচার’ ০৯ এপ্রিল ২০২৫দুই মামলার এজাহারে বলা হয়, ওই দুই স্কুলছাত্রী গত সোমবার বিকেলে দুই তরুণের সঙ্গে নৌকায় নদীতে বেড়াতে যায়। সন্ধ্যায় ওই দুই তরুণ নৌকাটি তীরে ভেড়ান। এ সময় কৌশলে তাঁরা দুই ছাত্রীকে একটি বিদ্যালয়ের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে যান। পরে তাঁরা আরও ছয় বন্ধুকে ডেকে আনেন। এরপর তাঁরা ভয় দেখিয়ে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। পরে ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী বাড়ি ফিরে ঘটনাটি জানায়।
জানতে চাইলে রায়পুরা থানার ওসি আদিল মাহমুদ বলেন, মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।