পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। এ বিষয়ে একটি চুক্তি সই করতেও প্রস্তুত তারা। তবে শর্ত দিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হুমকি বন্ধ করলে পারমাণবিক চুক্তি সইয়ে প্রস্তুত ইরান এ কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, আলোচনা ও চুক্তি সইয়ের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রথমেেই সামরিক হুমকি দেওয়া থেকে সরে আসতে হবে। ইরান কখনও জোরজবরদস্তি মেনে নেবে না। 

এর আগে ১ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি সই নিয়ে পাল্টাপাল্টি হুমকি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। ইরানকে হুমকি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরান পরমাণু চুক্তি না করলে দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্র বোমাবর্ষণ করবে। এমনকি এই আক্রমণের তীব্রতা হবে অভূতপূর্ব। ট্রাম্পের এমন হুমকির পর পাল্টা হুমকি দিয়ে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালালে এর উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। যেকোনো বহিরাগত আগ্রাসনের কঠোর প্রতিশোধ নেওয়া হবে।

আব্বাস আরাগচি বলেন, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ওমানে সমঝোতা আলোচনা পরোক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে। তবে এর আগে সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হবে সরাসরি। তিনি জানান, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে শনিবার দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা শুরু হবে। হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেন তিনি।

সোমবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ট্রাম্প বলেন, তেহরানের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। তবে আলোচনা ব্যর্থ হলে ইরান মহাবিপদে পড়বে বলে হুঁশিয়ার করেছেন তিনি। এর কয়েক ঘণ্টা পর তেহরান নিশ্চিত করেছে, শনিবার ওমানে আলোচনা হবে। তবে তারা এটাকে পরোক্ষ আলোচনা বলে উল্লেখ করেছেন।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র শনিবার ওমানে উচ্চ পর্যায়ের পরোক্ষ আলোচনার জন্য মিলিত হবে। এটা যতটা সুযোগ, ঠিক ততটাই পরীক্ষা। বল এখন যুক্তরাষ্ট্রের কোর্টে।

ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ইরানিদের সঙ্গে কাজ করছি। শনিবার আমাদের খুব বড় বৈঠক আছে এবং আমরা সরাসরি তাদের সঙ্গে কাজ করছি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, তেহরানের পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে মঙ্গলবার মস্কোতে রাশিয়া, চীন ও ইরানের মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রস ত ত পর ক ষ বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

আজ সকাল ৯টায় শুরু ঢাবির বর্ষবরণ ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’

বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হয়েছে বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ কর্মসূচি। ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে বের হবে ঐতিহ্যবাহী ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।

গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামীকাল সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ বের করা হবে। সকাল ৮টা থেকে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি চলবে।

এতে বলা হয়, শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র, দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা শুধু নীলক্ষেত ও পলাশী মোড় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। শোভাযাত্রা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য প্রবেশ পথ ও সংলগ্ন সড়ক বন্ধ থাকবে। শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য রক্ষার্থে আশপাশ দিয়ে শোভাযাত্রায় প্রবেশ করা যাবে না। নিরাপত্তার স্বার্থে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের নিজ নিজ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

পহেলা বৈশাখ উদযাপন নিয়ে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুদিনের ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা অব্যাহত রেখে অধিকতর অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য লোক-ঐতিহ্য ও ২৪-এর চেতনাকে ধারণ করে আরও বড় পরিসরে এবং বৈচিত্র্যপূর্ণভাবে এ বছর শোভাযাত্রায় সর্বজনীন অংশগ্রহণের আয়োজন করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শোভাযাত্রায় এ বছর ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিরা অংশ নেবেন। এই বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় এ বছর থাকবে সাতটি বড় মোটিফ, সাতটি মাঝারি মোটিফ এবং সাতটি ছোট মোটিফ।

ঢাবির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে চারুকলা অনুষদ কর্তৃক প্রস্তুত করা মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা চলাকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সামনের রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেইট, চারুকলা অনুষদের সামনে ছবির হাটের গেট এবং বাংলা একাডেমির সামনের রমনা কালী মন্দির সংলগ্ন গেট বন্ধ থাকবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ক্যাম্পাসে নববর্ষের সব ধরনের অনুষ্ঠান আগামীকাল বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে। ৫টার পর কোনোভাবেই প্রবেশ করা যাবে না, শুধু বের হওয়া যাবে। নববর্ষ উপলক্ষ্যে আজ রোববার সন্ধ্যা ৭টার পর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। 

নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের যানবাহন চালানো যাবে না এবং মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরত কোনো ব্যক্তি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের জন্য শুধুমাত্র নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন গেট ও পলাশী মোড় সংলগ্ন গেট ব্যবহার করতে পারবেন।

ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেল্প ডেস্ক, কন্ট্রোল রুম এবং অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প থাকবে। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠ সংলগ্ন এলাকা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র সংলগ্ন এলাকা, দোয়েল চত্বরের আশে-পাশের এলাকা ও কার্জন হল এলাকায় মোবাইল পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হবে।

নববর্ষ উপলক্ষ্যে নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ