তিস্তা ইস্যুতে খোলামেলা অবস্থান এবং নিজ সুবিধা অনুযায়ী সহযোগিতা নেবে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে ভারত ও চীন উভয়ে সহযোগিতা করতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

উপদেষ্টা বলেছেন, তিস্তা ইস্যুতে খোলামেলা অবস্থানে সরকার। এ ক্ষেত্রে ভারত ও চীনের সঙ্গে সহযোগিতা সম্ভব। কোনোটিতে কোনো বাধা নেই। আমরা দেখব যে, কোনদিকে কোন প্রকল্পে সহায়তা নিলে আমাদের জন্য সুবিধা হবে। সুবিধা অনুযায়ী পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় তাদের কাজ করবে।

সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার বেইজিংয়ের সঙ্গে তিস্তা প্রকল্প ও দিল্লির সঙ্গে তিস্তা পানিবণ্টন আলোচনায় অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, অগ্রগতি সময়সাক্ষেপ বিষয়। আমরা এখনই কোনো কিছু প্রত্যাশা করছি না। চীনের সঙ্গে পানি নিয়ে আমাদের সার্বিক একটি সমঝোতা রয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান খোলামেলা। 
ইউনূস-মোদি বৈঠকে শেখ হাসিনাকে ফেরত আনা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে। কিন্তু এটা নিয়ে চূড়ান্ত কোনো আলাপ হয়নি। আমরা তো তাদের কাছে ফেরত চেয়েছি, বলেছি তাকে বিচারের সম্মুখীন করা হোক। 

এমন মন্তব্য যাতে না করা হয়, যাতে সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি হয়– ভারতের এ বার্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা নিয়ে আমরা নিজেরাও একমত। এটা যে একতরফাভাবে হচ্ছে তা তো না। একই কাজ ভারত থেকেও হয়ে থাকে। 
ব্যাংককে ইউনূস-মোদি বৈঠক আন্তরিক পরিবেশে হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সাক্ষাৎ ইতিবাচক পরিবেশে হয়েছে। দুই পক্ষই আসলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ভালো রাখার এবং ভালো করার ওপর জোর দিয়েছে। মোদি স্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক দেশের সঙ্গে, মানুষের সঙ্গে; এটা কোনো দলের সঙ্গে নয়। এটাকে আমরা একটা ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখতে চাই।
ভারতের ভিসা চালু নিয়ে তিনি বলেন, প্রকৃতিতে কোনো শূন্যস্থান থাকে না। এখানে ভিসার অভাবে লোকজন না যেতে পারলে তারা অন্য কোথাও যাবে। আমরা তাতে সহায়তা করব যেন লোকজনের সমস্যা না হয়। আমাদের লোকজন যে কারণে ভারতে যেত, সেটা যদি অন্য কোনো দেশে সমাধান করা যায় আমরা সমাধানের চেষ্টা করব। ভারত যদি ভিসা দেয় তাতে তাদেরও স্বার্থ উদ্ধার হবে, আমাদেরও হবে। ভিসা না দেওয়ার কারণে তাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ভিসা হচ্ছে একটা দেশের সম্পূর্ণ স্বাধীন অধিকার। এ নিয়ে আপনি কিছুই করতে পারবেন না। আপনি তাদের বলতে পারবেন না, কেন দিচ্ছেন না।
নরেন্দ্র মোদি বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেছেন, সে বিষয়ে 
জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, নির্বাচন নিয়ে যে কোনো জায়গায় কথাবার্তা হলে তারা এমন বলেন। এই সরকার তো নিজে থেকে বলেছে, যথাশিগগির সম্ভব দায়িত্ব শেষ করে নির্বাচন দিয়ে

রাজনীতিবিদদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেওয়া এই সরকারের অঙ্গীকার। 
ইতালির ভিসার অপেক্ষায় থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ইতালির বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগে আছি। কিছু সমস্যা আছে, যেটাতে আমাদেরও দোষ আছে। নিজেদের ত্রুটি স্বীকার করা উচিত। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট সহয গ ত আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফে অগ্নিকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত চায় ঢাবি ছাত্রদল 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা উদ্‌যাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফ আগুনে পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে ঢাবি ছাত্রদল। শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটি এ দাবি জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস এবং সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আগুন লাগার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

ঢাবি ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিন তামী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান—   এই প্রতিপাদ্যে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে সামনে রেখে পয়লা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে আনন্দ শোভাযাত্রার অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রতিকৃতি তৈরির কাজে যুক্ত আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কিছুদিন ধরে আনন্দমুখর পরিবেশে এ কার্যক্রম চললেও শনিবার ভোর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে কিছু দুর্বৃত্ত অনুষদ প্রাঙ্গণে নির্মিতব্য ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ও শান্তির পায়রার প্রতিকৃতিতে অগ্নিসংযোগ করে তা ভস্ম করে দিয়েছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলা এবং ক্যাম্পাসে ফ্যাসিস্টদের মুক্ত পদচারণার বিষয়ে ঢাবি ছাত্রদল এর আগে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল, এই ন্যক্কারজনক ঘটনাটি তার সত্যতা প্রমাণ করে প্রতি একটি ভয়াবহ বার্তা দিয়ে গেল।’

ঢাবি ছাত্রদল বলেছে, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ এবং ফ্যাসিবাদী শাসনামলের বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলাকারীরা এখনো আবাসিক হলগুলোতে বহাল তবিয়তে অবস্থান করছে। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিনা বাধায় চলাফেরা করছে। ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করে দেশের পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত করছে। তাঁদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চরম উদাসীনতা দেখিয়েছে। এই অগ্নিসংযোগের ঘটনার মাধ্যমে সেটিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করছে ঢাবি ছাত্রদল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ