Samakal:
2025-04-14@15:48:04 GMT

বৈশাখী সাজে

Published: 8th, April 2025 GMT

বৈশাখী সাজে

বৈশাখের প্রথম দিনে শুরু হয় বাংলা নতুন বছরের উৎসবমুখর যাত্রা। বাংলা নতুন বছর বরণ করে নেওয়া বাঙালির কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এ উৎসব ঘিরে বাঙালির ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রায় সবার মাঝেই লক্ষ্য করা যায় ভিন্ন ধাঁচের সাজসজ্জার আয়োজন। বিশেষ করে নারীর মাঝে দেখা যায় ভিন্ন আঙ্গিকের সাজের বাহার।
বৈশাখের সাজ নিয়ে জারা’স বিউটি লাউঞ্জের স্বত্বাধিকারী ও রূপ বিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি বলেন, ‘পহেলা বৈশাখের সাজে সবাই চায় শতভাগ বাঙালিয়ানা ফুটিয়ে তুলে নিজেকে নতুনভাবে দেখতে। গরম আবহাওয়ার কথা ভেবে এমনভাবে ফেস মেকআপ করতে হবে, যাতে মেকআপ হালকা হওয়ার পাশাপাশি তা যেন দীর্ঘস্থায়ী হয়। তাই প্রথমেই যা করতে হবে তা হলো স্কিন মেকআপের উপযোগী করে নেওয়া। 
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে মুখ পরিষ্কার করতে ফেসওয়াশ, আইস কিউব দিয়ে ফেস ভালোভাবে সেট করতে হবে। তারপর একটি ভালো মানের টোনার দিয়ে নিতে হবে। বিশেষ করে গরমে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি। শরীরের যে জায়গাগুলো এক্সপোজার থাকবে, সেগুলোতে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। মেকআপ গরমে সব সময় হালকা হওয়া প্রয়োজন।
রুমি বলেন, ‘মেকআপ হালকা রাখার জন্য প্রথমে প্রাইমার অ্যাপ্লাই করে নেওয়া প্রয়োজন। এরপর লাইটওয়েট ফাউন্ডেশন অথবা ওয়াটার রেসিস্ট্যান্স ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা যায়, তাহলে মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী হয়। চাইলে ভালো মানের ক্রিম লাগিয়ে নিতে পারেন, এতে একটা হালকা বেজ তৈরি হবে। মুখে যে জায়গাগুলো আনইভেন থাকে, সেই জায়গাগুলো ইভেন করার জন্য ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার পর কনসিলার ব্যবহার করতে হবে। তারপর পুরো জিনিস পাউডার দিয়ে সেট করে নিতে হবে। কারণ, প্রচণ্ড গরমে পাউডার দিয়ে সেট না করলে মেকআপ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এরপর সেটিংস স্প্রে ব্যবহার করতে হবে; যাতে মেকআপ অনেকক্ষণ থাকে। এর ফলে পহেলা বৈশাখের একটা সুন্দর অবয়ব তৈরি করা যাবে।
চোখের মেকআপের ব্যাপারে এই রূপ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘একটি লাইট বেজের ওপর চোখে মেকআপ করা যায়। চোখের হালকা মেকআপের জন্য কনসিলার ব্যবহার করে হালকা সেট করে নিতে হবে। যেহেতু এটা বাঙালি লুক তাই অনেকে কাজল পছন্দ করেন। কাজল যদি ব্ল্যাক আইশ্যাডো দিয়ে সেট করা হয় তাহলে সুন্দর দেখাবে।’ 
তিনি আরও বলেন, ‘চোখের সাজে আধুনিক ভাব আনতে দিতে পারেন বিভিন্ন কালারের কাজল বা আইলাইনার। যাদের চোখ ছোট, চাইলে লাইনারের সঙ্গে ওয়াটার লাইনে সাদা বা নুড কালারের কাজল দিতে পারেন। এতে চোখ বড় দেখাবে।’
রুমি জানান, দিনের বেলায় হালকা লিপস্টিক এবং রাতে মেরুন বা হালকা লাল ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে বৈশাখের সাজ খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠবে। সঙ্গে কপালে ছোট বা বড় টিপ পরা যায়। এতে করে ট্র্যাডিশনাল লুক ফুটে উঠবে।
এখন যেহেতু আবহাওয়া গরম তাই শাড়ির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চুলে খোঁপা করার পরামর্শ দেন রূপবিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি। তিনি জানান, সামনে সিঁথি কেটে হালকা পাফ করে সেট করে পেছনে খোঁপা করতে পারেন অথবা সামনে ফ্রেঞ্চ বেণি করে পনি টেইল কিংবা মেসি বান করতে পারেন চুলে। তাঁর মতে, এখন যেহেতু চুল কার্ল করার একটা ট্রেন্ড চলছে, চাইলে একটু ফ্রন্ট সেটিং করে পেছনের চুলগুলো হালকা কার্ল করে ছেড়ে রাখা যেতে পারে। চাইলে চুলে কাঁচা ফুল পরা যায়। এতে আরও বেশি সুন্দর দেখাবে।
নববর্ষের উৎসবে নিজেকে সাজাতে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে পরতে পারেন গহনাও। এ প্রসঙ্গে রুমি বলেন, ‘বৈশাখে মাটির গহনার প্রচলন সেই শুরু থেকেই। বৈশাখের সাজকে মাটির গহনা আরও বেশি ইউনিক করে তোলে। এ ছাড়া পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে অ্যান্টিক জুয়েলারি পরতে পারেন। এতে বাঙালিয়ানা ব্যাপারটা আরও বেশি ফুটে উঠবে।’ v

ছবি সৌজন্য: হরিতকী

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব শ খ উৎসব ব যবহ র কর স ট কর ম কআপ আরও ব

এছাড়াও পড়ুন:

বেলীর অভাবের ঘরে আলো হয়ে এলো ফুটফুটে ছেলে

স্বামী বাকপ্রতিবন্ধী, তাই কাজে নিতে চাননা কেউ। কখনও কাজ মেলে কখনও মেলে না। বেলী আক্তারের সংসারে তাই অভাব। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হয়। এই অভাবের সংসারে নববর্ষের ভোরে তার ঘরে আলো হয়ে এসেছে এক নতুন মুখ। ফুটফুটে ছেলে সন্তান জন্ম দিয়েছেন তিনি। আনন্দের এই সময়ও বেলীর দুশ্চিন্তা! স্বামী সোহেল রানা কাজের সন্ধানে তখন অনেক দূরে, সিলেটে। অন্যদিকে, গত সোমবার মারা গেছেন বেলীর মা।

সোমবার ভোর ৫টায় ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ছেলে সন্তান জন্ম দেন বেলী। হাসপাতালে তখন চিকিৎসক ছিলেন না। আয়াদের চেষ্টায় তার নরমাল ডেলিভারি হয়।

২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সোহেল ও বেলীর বিয়ে হয়। সোহেলের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কিসমত চামেশ্বরী গ্রামে। আর বেলীর বাড়ি একই উপজেলার রাজগাঁও গ্রামে। 

রোববার রাত ২ টার দিকে বেলীর প্রসব ব্যথা ওঠে। দ্রুত তাকে ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে নেন স্বজনরা। স্বজনরা জানান, হাসপাতালে তখন চিকিৎসক ছিলেন না। আয়াদের চেষ্টায় তার নরমাল ডেলিভারি হয়। এটি তার প্রথম সন্তান। 

‘সোহেল রানা কথা বলতে পারে না। অভাবের কারণে টাকার জন্য দেশের এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়ান তিনি। এমনকি প্রথম সন্তানের বাবা হয়েও স্ত্রী-সন্তানের পাশে থাকার সৌভাগ্য হয়নি তার। কাজের খোঁজে সিলেটে আছেন তিনি। তবে অন্যের মোবাইলে ভিডিও কলে তার ছেলে সন্তানের মুখ দেখে অনেক খুশি হয়েছেন। খুশিতে কান্না করে ফেলেছে সোহেল, বলেন সোহেলের ছোটভাই মিন্টু।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বেলীর মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। গম্ভীর হয়ে রয়েছেন। মুখে হাসি নেই। শারীরের অবস্থাও তেমন ভালো না।

বেলী জানান, এই সময় স্বামী পাশে না থাকায় খারাপ লাগছে। তাছাড়া কয়েকদিন আগে তার মা মারা গেছেন। কষ্ট লাগছে, নাতির মুখ তিনি দেখে যেতে পারলেন না।

বেলী বলেন, 'কিছু খেতে মন চাইলেও টাকার অভাবে খেতে পারিনি। দুই বেলা ভাতই ঠিকমতো জোটে না!'

তবে বাচ্চাকে অভাব বুঝতে দেবেন না বলে জানান তিনি। বেলী বলেন, 'ছেলেকে পড়ালেখা করাব, ডাক্তার বানাবো। আমার অভাবের সংসারে সেই এখন আলো।’

সোহেল রানার বাবা খাদেমুল ইসলাম বলেন, 'জন্মের পর থেকে সোহেল কথা বলতে পারে না। সংসারে অভাব থাকায় ছোট থেকে অন্যের বাড়িতে কাজ করত। এলাকায় কাজ না থাকলে অন্য জেলায় যেত।'

তিনি বলেন, 'বছরের প্রথম দিনে নাতিকে কোলে নিয়ে আনন্দ লাগছে। সোহেল ভিডিও কলে ছেলেকে দেখেছে। বাড়িতে থাকলে অনেক খুশি হতো।' 

নাতির জন্য সবার কাছে দোয়া চান সোহেলের মা সালেহা বেগম। 

বেলীর দাদী ফাতেমা বেওয়া বলেন, ‘চার ভাই-বোনের মধ্যে বেলী সবার ছোট। আমার নাতনির ছেলে হওয়ায় আমরা খুব খুশি। কয়েকদিন আগে বেলীর মা মারা যাওয়ায় আমি এখন তার বাড়িতে আছি। তাদের দেখাশুনা করছি।’

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রকিবুল আলম চয়ন জানান, সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বেলী আক্তার ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'বাংলা বছরের প্রথম দিন সন্তানের মা হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। মা-সন্তান সুস্থ্ রয়েছে।'

সম্পর্কিত নিবন্ধ