বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার দুই ছাত্রী
Published: 8th, April 2025 GMT
নরসিংদীতে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির দুই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার সন্ধ্যায় রায়পুরা উপজেলার চরআড়ালিয়া ইউনিয়নের বাঘাইকান্দী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তারা দু’জন পূর্ব বাঘাইকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং ওই গ্রামের বাসিন্দা।
এলাকাবাসী জানায়, সোমবার বিকেলে বাঘাইকান্দী গ্রামের কাইয়ুম (২১) ও মুন্না (২২) নামে দুই তরুণের সঙ্গে নৌকা নিয়ে ঘুরতে যায় দুই বান্ধবী। এক পর্যায়ে কৌশলে কাইয়ুম ও মুন্না সন্ধ্যায় নৌকা তীরে ভেড়ায় এবং দুই বান্ধবীকে পূর্ব বাঘাইকান্দী এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে কাইয়ুম ও মুন্না তাদের আরও ছয় বন্ধুকে ডেকে আনে। পরে সবাই মিলে ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে যায়। সেখান থেকে উভয় কিশোরী বাড়িতে ফিরে পরিবারের সদস্যদের ঘটনা খুলে বলে। অভিযুক্ত কাইয়ুম চরআড়ালিয়া গ্রামের সেন্টু মিয়ার ছেলে ও মুন্না একই গ্রামের শাহ মিয়ার ছেলে। এ ছাড়া কাইয়ুম ও মুন্নার ডেকে আনা অন্য বন্ধুরা হলো বাঘাইকান্দী গ্রামের কাদির মিয়ার ছেলে সাইফুল মিয়া, একই গ্রামের খলিল মিয়ার ছেলে রমজান মিয়াসহ অজ্ঞাত আরও চারজন।
ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীর বাবা বলেন, আমরা স্থানীয় চরআড়ালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চেয়েছি। তিনি বলেছেন, বিচার করে দেবেন। আমরা বিচারের অপেক্ষায় আছি। থানা পুলিশের ঝামেলায় যেতে চাই না। তা ছাড়া মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় আছি।
আরেক কিশোরীর বাবা বলেন, রাতে বাড়ি ফিরে ঘটনা শুনেই আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। ধর্ষণকারীরা প্রভাবশালী। আমরা তাদের সঙ্গে লড়তে পারব না। তাছাড়া মেয়েকে ভবিষ্যতে বিয়ে দেওয়ার বিষয়টি চিন্তা করে এলাকার চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিয়েছি। চেয়ারম্যান যে বিচার করবেন, আমি তাই মেনে নেব। আমি গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই। থানা পুলিশ করার সামর্থ্য নেই।
এ ব্যাপারে চরআড়ালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদা জামান সরকার ফোনে বলেন, ‘তারা আমাকে ঘটনাটি জানিয়েছেন। বিস্তারিত জেনে বিষয়টি নিয়ে এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে বসব।’ ধর্ষণের ঘটনা সালিশে মীমাংসা করা যায় কিনা– এমন প্রশ্ন করা হলে চেয়ারম্যান ফোন কেটে দেন। এরপর থেকে তাঁর ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রী-ছেলেসহ তিন খুনের দায় স্বীকার, ১০ দিনের রিমান্ড
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে তিন খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. ইয়াসিন পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দায় স্বীকার করেছে। শনিবার বিকেলে তাকে তোলা হয় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বেলায়েত হোসেনের আদালতে। সেখানে ১০ দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান।
শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকায় ময়লার স্তূপ খুঁড়ে ইয়াসিনের স্ত্রী লামিয়া আক্তার (২২), চার বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ ওরফে রাফসান লাবিব ও লামিয়ার বড় বোন স্বপ্না আক্তারের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকেই এলাকাবাসী ইয়াসিনকে (২৪) ধরে পুলিশে দেন। সে মিজমিজি দক্ষিণপাড়ার মো. দুলালের ছেলে। আগে ইয়াসিন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাত। পুলিশ জানিয়েছে, ছিঁচকে চোর ও মাদকাসক্ত হিসেবেও পরিচিত সে।
শুক্রবার রাতেই লামিয়ার মেজো বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে ইয়াসিন ছাড়াও তার বাবা মো. দুলাল (৫০) ও বোন মোসা. শিমুকে (২৭) আসামি করা হয়েছে। মুনমুন জানিয়েছেন, লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ৫ বছর আগে ইয়াসিনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বড় বোন স্বপ্নাও লামিয়ার সঙ্গে পশ্চিমপাড়ার ভাড়া বাসায় থাকতেন। ৭ এপ্রিল দুপুরে ওই বাসায় বোনদের সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ কথা হয়। এর পর থেকে তাদের মুঠোফোনটি বন্ধ ছিল।
মামলায় মুনমুন উল্লেখ করেছেন, মাদকাসক্ত ইয়াসিন কোনো কাজ করত না। প্রায় সময় টাকার জন্য লামিয়াকে মারধর করত ও হত্যার হুমকি দিত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার ইয়াসিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।