গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৫৮ ফিলিস্তিনি নিহত
Published: 8th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২১৩ জন। আজ মঙ্গলবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ হালনাগাদ তথ্য দিয়েছে।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ নতুন করে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর অব্যাহত হামলায় ১ হাজার ৪৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৪৭ জন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৫০ হাজার ৮১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৬৮৮ জন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় বিধ্বস্ত ভবন ও স্থাপনার ধ্বংসস্তূপে এবং সড়কে এখনো অনেক মরদেহ পড়ে আছে। অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে না পারায় এসব মরদেহ উদ্ধার করা যাচ্ছে না।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আহত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক আহমেদ মনসুর মারা গেছেন। গাজার নাসের হাসপাতালের কাছে সাংবাদিকদের অস্থায়ী তাঁবুতে গত সোমবার হামলা চালায় ইসরায়েল। তাঁবুতে আগুন ধরে গেলে তিনি গুরুতর দগ্ধ হন। এ ঘটনায় আরও দুই সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন হেলমি আল-ফাকাবি ও ইউসুফ আল-খাজানদার। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আটজন।
‘নতুন চুক্তি নিয়ে কাজ চলছে’এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মিদের মুক্ত করতে নতুন চুক্তি নিয়ে কাজ চলছে। যুক্তরাষ্ট্র সফররত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাশে বসা ছিলেন। দুই নেতা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্য দেশে বিতাড়িত করা নিয়েও কথা বলেছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন আরেকটি চুক্তি নিয়ে কাজ করছি এবং আমরা আশা করছি, তা করতে পারব। সব জিম্মিকে মুক্ত করে আনতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এ সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা জিম্মিদের মুক্ত করতে কঠিন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আরেকটি যুদ্ধবিরতি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। দেখি কী হয়।’
আরও পড়ুন‘গায়ে আগুন দেওয়ার পর তা নেভাতে আমি পশুর মতো এদিক-ওদিক ছুটছিলাম’ ৮ ঘণ্টা আগেইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার পর এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান নেতানিয়াহু। ওই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। সর্বশেষ যুদ্ধবিরতির সময় আট মরদেহসহ ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। বিপরীতে ইসরায়েলি কারাগার থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনি মুক্তি পান।
জিম্মিদের মুক্ত করতে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। তবে তাঁদের দাবি উপেক্ষা করে বাকি জিম্মিদের জীবিত অথবা মৃত উদ্ধার করতে হামাসের ওপর সামরিক চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছেন নেতানিয়াহু ও তাঁর সরকার।
আরও পড়ুনইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত১৫ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রূপনগরে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা উদ্বোধন
এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিশুদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা (মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে স্কুল অব লাইফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে এটির উদ্বোধন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেন রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা।
আয়োজকেরা জানান, প্রতি শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। খেলাধুলার মধ্য থাকবে দাবা, লুডু, ক্যারম, দড়ি লাফ ও ব্যাডমিন্টন। এ ছাড়াও থাকবে ছবি আঁকা, হস্তশিল্প ও সামাজিকীকরণের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাঠ ও পার্কের অপ্রতুলতা ঢাকা শহরের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। শিশুদের খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি একটি কার্যকর সমাধান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে, শহর হবে প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্কুল অব লাইফের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অনুপম হোসেন বলেন, ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরি করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। অর্থ ও স্থান সংকুলান বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষে দ্রুত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। তবে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের স্থান গড়ে তোলা সম্ভব। নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব লাইফের সদস্যসচিব সাবরিনা নওরিন লিমু, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মকর্তা, মিরপুর সেকশন- ৭ এর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের এলাকাবাসী ও শিশু-কিশোরেরা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিঠুন।