নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীরের ব্যানার নামানোর কথা বলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সানি সরকার নামে এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার তিনি এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দায়ের করেছেন। সানি সরকার ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

সোমবার ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদেরও হেনস্তার শিকার হন।

এ ঘটনায় আগামীকাল বুধবার সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রতিবাদী কর্মসূচি ডেকেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তারা সানি সরকারের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধের দাবিতে মানববন্ধন করবেন।

লিখিত অভিযোগে সানি সরকার উল্লেখ করেন, দুপুর একটার দিকে টিএসসিতে গিয়ে দেখেন বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রোগ্রাম করছে। সেখানে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের পতাকা ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে তিনি বাধা দেন।

সানি অভিযোগপত্রে লেখেন, ‘আমিও একজন মুসলমান, তবে অনুরোধ করব এই নিষিদ্ধ পতাকাটি নামিয়ে ফেলুন। রাজু ভাস্কর্যের সামনে যেকোনো আন্দোলন বা প্রোগ্রাম অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। এসবের ছবি বা ভিডিও যদি আন্তর্জাতিকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তবে তা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।’

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, অনুরোধের পর দু–একজন পতাকা নামিয়ে পকেটে রেখে দেন। এরপর কাদের ভাই (আব্দুল কাদের), খালেদ ভাই ও তানভীর ভাইয়েরাও বাকিদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কিছু (নিষিদ্ধ সংগঠন) হিযবুত তাহ্‌রীরপন্থি বিষয়টি বুঝতেই চায়নি। তারা আমাদেরকে ‘ইসলামবিদ্বেষী’ আখ্যা দিয়ে মারতে আসে। ভিড়ের মধ্যে আমাকে ইচ্ছেমতো মারধর করা হয়।’

প্রক্টর অফিসে দেওয়া অভিযোগে সানি সরকার আরও উল্লেখ করেন, ‘স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নিষিদ্ধ সংগঠন কীভাবে প্রোগ্রাম করতে পারে? যেখানে বহিরাগতদের কোনো কর্মসূচি করার অধিকার নেই, সেখানে আমরা এতটাই অনিরাপদ হয়ে পড়েছি যে বাইরের কেউ এসে প্রোগ্রাম বা তাদের প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।’

সানির ওপর হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিন নিয়ে কর্মসূচিগুলোতে বিভিন্ন সময় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের পতাকা উড়তে দেখা গেছে। এর আগেও ফিলিস্তিনের পক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে এ ধরনের পতাকা উত্তোলন আন্দোলনের ভাবমূর্তিকে আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিল।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঘটনার পরপরই প্রক্টরিয়াল টিমকে জানানো হলেও তারা দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেয় এবং আহত শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে কোনো কার্যকর ভূমিকা নেয়নি। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের উপস্থিতি ও কার্যক্রম প্রতিহত করতে দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।

এ দিকে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেছেন, তারা একটি অভিযোগপত্র পেয়েছেন। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ স গঠন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চীনের তৈরি জাহাজ যুক্তরাষ্ট্রে ভিড়লে বাড়তি মাশুল

চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের পাশাপাশি আরেক দিক দিয়ে দেশটির ওপর চড়াও হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনে নির্মাণ করা জাহাজ পণ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে ভিড়লে বাড়তি মাশুল আদায়ের পরিকল্পনা করছে তারা। নিজেদের জাহাজনির্মাণ শিল্প আবার চাঙা করার জন্য এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে ওয়াশিংটন।

এ নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতেই পরিকল্পনা করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) দপ্তর। তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, চীনে নির্মিত কোনো পণ্যবাহী জাহাজ প্রতিবার যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে ভিড়লেই ৩৫ লাখ ডলার করে দিতে হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আপত্তির মুখে শেষ পর্যন্ত ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।

ইউএসটিআর জানিয়েছে, চীনা জাহাজের ওপর বাড়তি মাশুল আগামী ১৮০ দিনের মধ্যে কার্যকর হবে। এমন জাহাজে আমদানি করা প্রতি টন পণ্যের মাশুল ১৮ ডলার থেকে শুরু হবে। আর প্রতিটি কনটেইনারের জন্য মাশুল ১২০ দিতে হবে ডলার। সে হিসাবে একটি জাহাজে ১৫ হাজার কনটেইনার থাকলে মোট মাশুল দিতে হবে ১৮ লাখ ডলার।

মাশুলের পরিমাণ প্রতি পাঁচ বছর পরপর পর্যালোচনা করা হবে। আর চীনা জাহাজের মালিকানা থাকা কোনো প্রতিষ্ঠান যদি যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত জাহাজ কেনে, তাহলে মাশুল কমানো হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রির বলেন, চীনের আধিপত্য কমাতে, যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ শৃঙ্খলে হুমকি মোকাবিলায় এবং যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত জাহাজের চাহিদাসংক্রান্ত তথ্য পেতে ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করবে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাহাজনির্মাণ শিল্পে আধিপত্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। তবে বর্তমানে বিশ্বে চলাচল করা পণ্যবাহী জাহাজের মাত্র ১ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি। এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় পণ্যবাহী ১০টি জাহাজের বেশির ভাগই চীনে নির্মাণ করা। এ ছাড়া এশিয়ার অন্য দুই দেশ জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ারও জাহাজনির্মাণ শিল্পে বড় আধিপত্য রয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর উচ্চ হারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। পরে ৯০ দিনের জন্য সেই শুল্ক স্থগিত করা হলেও ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল না চীনের। দেশটির ওপর বরং ধাপে ধাপে শুল্ক বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করা হয়। পাল্টা জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ