রেলওয়ের প্রকল্প গ্রহণে অপ্রয়োজনীয় ও বাড়তি ব্যয় পরিহারের পরামর্শ দিয়েছেন এই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ভবিষ্যতে কোনো প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বৃদ্ধি করা হবে না বলে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার রেল ভবনে এক মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা এ কথা বলেন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রেল পরিচালনা ও সামগ্রিক কার্যক্রম পর্যালোচনা এবং আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করা হয়।

ফাওজুল কবির খান বলেন, রেলের ইঞ্জিন ও কোচের সংকট রয়েছে। পর্যাপ্ত কোচ ও ইঞ্জিন সংগ্রহের জন্য চেষ্টা চলছে। এর আগে ২০০ কোচ কেনার যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তা দ্রুততম সময়ে শেষ করতে হবে। পার্বতীপুরে কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানাকে অ্যাসেম্বলিং (সংযোজন) ও মেরামত কারখানায় রূপান্তর করতে হবে। এ জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির নির্দেশ দেন তিনি।

প্রকল্প গ্রহণে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার করার তাগিদ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ক্রয়ধর্মী প্রকল্পের মেয়াদ এক থেকে দুই বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে অনলাইন টিকেটিং সেবা প্রদানকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকমকে আরও আন্তরিক ও সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশ দেন রেল উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। তিনি উপস্থিত সহজ ডটকমের প্রতিনিধির উদ্দেশে বলেন, টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে তাঁরা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে বিদ্যমান চুক্তি পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে যারা টিকিট কালোবাজারি করে, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে রেলওয়ের একটি নিজস্ব ইন্টেলিজেন্স টিম থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ঈদুল ফিতরে রেলের যাত্রীসেবায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে রেল উপদেষ্টা বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় মানুষ স্বস্তিতে ও নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পেরেছেন। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আরও উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে। এবারের ঈদযাত্রায় সাফল্যের ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখতে হবে।

রেলওয়ের আয় বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে ফাওজুল কবির খান বলেন, অপ্রয়োজনীয় ও বাড়তি খরচ, অর্থাৎ অপচয় কমাতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.

ফাহিমুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেনসহ রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট প রকল প র লওয

এছাড়াও পড়ুন:

নববর্ষ উপলক্ষে ব্যস্ততা বেড়েছে মৃৎশিল্পীদের

বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখে দেশের বিভিন্ন স্থানে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এসব মেলা সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে হবিগঞ্জের মৃৎশিল্পীদের। দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করে তৈরি করা মাটির খেলনা, পুতুল ও ব্যাংকসহ নানান জিনিসপত্র আগুনে পুড়িয়ে ও রংতুলির আঁচড় শেষে বৈশাখী মেলায় তোলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন শিল্পীরা। 
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুরাবই গ্রামে পালপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে মাটি দিয়ে তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, ব্যাংক, কলস, দইয়ের কাপ ও সরাসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী। এসব জিনিসপত্র তৈরি করার পর তা রোদে শুকানো হচ্ছে। আবার কেউ কেউ রংতুলির আঁচড় দিচ্ছেন। পালপাড়ার ছোট-বড় ছেলেমেয়ে সবাই উৎসবের মতো করে এ কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন। ছোট ছোট শিশুরাও তাদের বাবা-মায়েদের এই কাজে সহযোগিতা করছে। শিল্পীরা বলছেন, পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। বছরের এই সময়টাতেই তাদের ভালো আয় রোজগার হয়। 
স্থানীয়রা জানালেন, বাজারে প্লাস্টিক পণ্যের ছড়াছড়ির কারণে এক সময়ে গ্রামগঞ্জের জনপ্রিয় মাটির তৈরি জিনিসপত্র এখন তাদের ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। এ কারণে মৃৎশিল্পীদের আগের সুদিন নেই। পালপাড়ায় একসময় এই পেশার 
সঙ্গে ৫০টিরও অধিক পরিবার জড়িত ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে এখন মাত্র ১০ থেকে ১৫টি পরিবার এই পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। উপকরণের দাম বাড়ায় এ কাজে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকেই। ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তারা। 
পালপাড়ার বাসিন্দা শিক্ষার্থী অনন্যা রানী পাল জানান, এটা আমাদের পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি মা-বাবাকে এই কাজে সহযোগিতা করেন। কারণ, এই মাটির জিনিসপত্র বিক্রি করেই তার পড়ালেখাসহ সংসারের খরচ চলে। 
রণজিত পাল নামে এক মৃৎশিল্পী বলেন, এ পেশায় এখন টিকে থাকা মুশকিল। সরকার সহযোগিতা না করলেই অচিরেই এই পেশা থেকে নতুন প্রজন্ম মুখ ফিরিয়ে নেবে। 
ইতোমধ্যে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দিয়েছে। আমরা যারা এই পেশায় রয়েছি, খুব কষ্টে আছি। আমাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। –বলছিলেন তুলসী রানী পাল। 
হবিগঞ্জ বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. বিল্লাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, মৃৎশিল্প গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের একটি অংশ। মাটির তৈরি এসব জিনিসপত্র আধুনিকায়নে এবং মৃৎশিল্পীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ঋণ প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা করতে চেষ্টা করবেন তারা। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাষ্ট্র ও সমাজকে পথশিশুদের প্রতি মানবিক হতে হবে
  • চন্দনাইশের ‘হাতপাখা’ গ্রামে ১০ কোটি টাকার ব্যবসা
  • তাড়াশে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ভাদাই মেলা
  • বাংলা নববর্ষে আসছে পারিবারিক গল্পের সিরিজ ‘ননসেন্স’ 
  • বৈশাখে স্মৃতির ঝাঁপি খুলবেন বিজরী-দিনার
  • শহুরে পরিবারের দ্বন্দ্ব নিয়ে ‘ননসেন্স’
  • বৈসাবি উপলক্ষে রাঙামাটিতে ঐতিহ্যবাহী বলী খেলা অনুষ্ঠিত
  • ট্রেন্ডিংয়ের শীর্ষে অপূর্ব-নীহা
  • আমিরাতের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
  • নববর্ষ উপলক্ষে ব্যস্ততা বেড়েছে মৃৎশিল্পীদের