ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় বসার পর অভিবাসীদের ওপর খড়্গহস্ত হয়েছেন। তিনি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করছেন। এমনকি এই কঠোরতার শিকার হচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ বহু অভিবাসী। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পকে যুদ্ধকালীন ক্ষমতার আইন ব্যবহার করে অভিযুক্ত অপরাধ চক্রের সদস্যদের দ্রুত নির্বাসন দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। এই অনুমতি এখনকার জন্য বা সাময়িক সময়ের জন্য দেওয়া হয়েছে। সোমবার এই রায় দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। 

ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই অভিবাসীরা অপরাধচক্র ত্রেন দে আরাহুয়ার সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে অনিয়মিত যুদ্ধ ও আগ্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিল অপরাধচক্রটি। ফলে তাদের এই আইনের আওতায় দেশ থেকে বের করে দেওয়া যেতে পারে।

যদিও ট্রাম্প প্রশাসন এই রায়কে জয় হিসেবে দেখছে, বিচারপতিরা আদেশ দিয়েছেন যে, নির্বাসিতদের তাদের অপসারণ বা নির্বাসন চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ দিতে হবে। ট্রাম্প এই রায়কে ‘আমেরিকায় ন্যায়ের একটি মহান দিন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট আমাদের জাতির আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রেখেছে’, একজন প্রেসিডেন্টকে, যেই হোক না কেন, আমাদের সীমান্ত রক্ষা এবং আমাদের পরিবার ও দেশের সুরক্ষার ক্ষমতা দিয়েছে।

গত ১৫ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের একটি নিম্ন আদালত অস্থায়ীভাবে ভেনেজুয়েলার অভিযুক্ত গ্যাং সদস্যদের এল সালভাদরে নির্বাসন বন্ধ করেছিল। রায়ে বলা হয়েছিল, স্বল্প ব্যবহৃত ১৭৯৮ সালের বহিঃশত্রু আইন (এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্ট) ব্যবহার করে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর আরও তদন্ত প্রয়োজন।

এ আইনটি সর্বশেষ ব্যবহার করা হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে শত্রু দেশগুলোর নাগরিকদের আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই আটক বা নির্বাসনের ব্যাপক ক্ষমতা দেয়। আইনটি ১৭৯৮ সালে পাস হয়, যখন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করছিল, তারা ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে।
ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, সব নির্বাসিতই ত্রেন দে আরাহুয়ার সদস্য। এই শক্তিশালী আন্তর্জাতিক অপরাধী গোষ্ঠীটির অপহরণ, চাঁদাবাজি, সংঘবদ্ধ অপরাধ, মাদক পাচার এবং চুক্তিভিত্তিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। একে ট্রাম্প সম্প্রতি বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করেছেন।

মার্কিন অভিবাসন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আটকদের ‘সতর্কভাবে যাচাই করা’ হয়েছে এবং গ্যাং সদস্য হিসেবে শনাক্ত হওয়ার পর এল সালভাদরে পাঠানো হয়েছে। তবে অনেক নির্বাসিতের কোনো মার্কিন অপরাধমূলক রেকর্ড নেই বলে আদালতের নথিতে স্বীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ সংস্থার এক কর্মকর্তা।

নির্বাসিতদের কয়েকজন আত্মীয় বিবিসিকে জানিয়েছেন, এই মানুষগুলো ভুলভাবে অভিবাসন অভিযানে ধরা পড়েছেন এবং তারা নির্দোষ। অনেক পরিবার বলেছে, শুধু উল্কির কারণে তাদের প্রিয়জনদের গ্যাং সদস্য হিসেবে ভুলভাবে শনাক্ত করা হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থা এবং কিছু আইন বিশেষজ্ঞ এই আইন প্রয়োগকে নজিরবিহীন বলেছে। কারণ এটি আগে শুধু তখনই ব্যবহৃত হয়েছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল, যা মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী কেবল কংগ্রেসই করতে পারে।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ছ ন অপর ধ সদস য ক ষমত র আইন

এছাড়াও পড়ুন:

‘মার্চ ফর ড. ইউনুস’ আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচনের দাবিতে মানববন্ধন

‘মাচ ফর ড. ইউনুস’ আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচন, এই দাবিতে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে শহরের চাষাড়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের জনগনের ব্যানারে এ কর্মসুচি পালন করা হয়।

এসময় বক্তারা বলেন, ১৭ বছর মানুষ নির্বাচনে ভোট দিতে পারে নাই কিন্ত এখন দেশের অধিকাংশ মানুষই নির্বাচন চায় না। তারা চায় আগে সংবিধান ঠিক হোক। আপনারা জনগণের মতামত নেন একটা গণপরিষদ নির্বাচন করে দেখেন অধিকাংশ মানুষই এবার ভোটের বিপক্ষে। 

আমরা নারায়ণগঞ্জ থেকে সর্বপ্রথম আওয়াজ উঠিয়েছি। এখন এই আওয়াজ বাকি ৬৩ জেলায় গিয়ে জড়ো হবে। খুনি হাসিনার বিচার আর দেশ সংস্কার এর আগে কোন নির্বাচন হবে না।

বক্তারা আরও বলেন, আপনারা যারা নির্বাচন রোড ম্যাপ চাচ্ছেন, সংস্কার চাচ্ছেন না। তাদের বলছি, আমরাও নির্বাচন চাই তবে তার আগে জুলাই হত্যার বিচার, সংবিধান সংস্কার, বিচার ব্যবস্থা সংস্কার, শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার, ব্যাংকিং খাত সংস্কার, আইন শৃঙ্খলা সংস্কার, দেশের বাণিজ্য সংস্কার, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান, সরকারি নিয়োগ ব্যবস্থা সংস্কার, সামাজিক ব্যবস্থা সংস্কার, পার্বত্য বিশৃঙ্খলা সংস্কার, ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট সংস্কার, রাজনৈতিক নেতাদের সংস্কার, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার, স্থানীয় সরকার নির্বাচন, তারপর আপনারা নির্বাচন করুন আমাদের দেশের জনগণের কোনো আপত্তি নাই।

বক্তারা বলেন, আমাদেরকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। খুনি হাসিনাই আমাদের ভয় দেখাতে পারেনি এখন যদি কেউ আবারও আওয়ামীলীগ হওয়ার চেষ্টা করে তাদের উচিত ২৪ থেকে শিক্ষা নেয়া।

পৃথিবীতে সাদা কালো, ধনী গরিব, দেশি বিদেশি এগুলা কোনো বিষয় নয়, বিষয় হচ্ছে পৃথিবীতে দুই ধরনের লোক থাকে উইনার এন্ড লুজার। ড. ইউনূস ইউ উইল বি দা উইনার ইফ ইউ মেক এভরি লুজার টার্ন ইন্টু ওইনার।

এসময় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, মো. আলিফ দেওয়ান, রবিউল ইসলাম রবিন, আল আমিন বিন আরশাদ আলী, ফাহিম খন্দকার অনিক ও রাব্বী ইসলাম নিলয়সহ আরো অনেক নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য, একই দাবিতে গত ১৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ