গাজায় ইসরায়েলের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটি অবিলম্বে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানায়।

দলটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ এই বিবৃতি পাঠান।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, জাতিসংঘ ও বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে ইসরায়েল একের পর এক অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করে গাজা উপত্যকাকে এক বিরান ভূমিতে পরিণত করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তা ও দায়মুক্তির কারণে ইসরায়েল গাজাবাসীকে হত্যা করছে। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় কিছুদিন যুদ্ধবিরতি মেনে চললেও গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রেখেছে। যুদ্ধের সব নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তারা মসজিদ ও হাসপাতালে নির্বিচার হামলা অব্যাহত রেখেছে। অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলা করেছে, ডাক্তারদের হত্যা করেছে, শিশুদের হত্যা করছে।

বিবৃতিতে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা সমালোচনা করেন যুক্তরাষ্ট্রেরও। তাঁরা বলেন, বিশ্বের মানুষ যখন এই বর্বর ও নৃশংসতায় স্তম্ভিত, তখন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সামরিক সরঞ্জামসহ সব ধরনের সহায়তা আরও বাড়ানোর কথা বলেছে, যা নিন্দনীয় ও ক্ষমার অযোগ্য।

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে অবিলম্বে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের এবং জাতিসংঘকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে একটা যৌক্তিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। পাশাপাশি মুক্তিকামী ও মানবতাবাদী মানুষকে ইসরায়েলিদের প্রতিরোধ ও বিচারের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

রাজস্ব আদায়ে পদক্ষেপ নিন

স্টেশন বন্ধ। কিন্তু ট্রেন আসে, ট্রেন যায়। যাত্রীরাও ওঠানামা করেন। তবে টিকিট ছাড়া। কারণ, স্টেশন বন্ধ থাকায় কোনো টিকিট বিক্রি হয় না। কুমিল্লার লাকসাম থেকে রেলপথে নোয়াখালী পর্যন্ত প্রায় ৫২ কিলোমিটারের দূরত্বে এ রকম ছয়টি স্টেশন আছে। প্রায় দুই দশক ধরে বিভিন্ন সময়ে স্টেশনগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এতগুলো স্টেশন থেকে বিনা টিকিটে যাত্রী ওঠানামা করেন। ফলে প্রতিনিয়ত রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, দীর্ঘ রেলপথটিতে মোট ১২টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে লাকসামের দৌলতগঞ্জ, মনোহরগঞ্জের খিলা ও বিপুলাসার, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর বজরা, নোয়াখালী সদরের মাইজদী ও হরিনারায়ণপুর স্টেশনের কার্যক্রম ২০০৩ সালের পর থেকে পর্যায়ক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ ২০১৭ সালে লাকসাম পৌর শহরের দৌলতগঞ্জ স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আগে এই রেলপথে প্রতিদিন আন্তনগর, এক্সপ্রেস, লোকাল, ডেমুসহ অন্তত ১২টি ট্রেন চলাচল করত। এ রেলপথে এখন আন্তনগর উপকূল এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেন চলাচল করে। আর তিনটি ভিন্ন নামে আরেকটি এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে, যেটি স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে লোকাল ট্রেন হিসেবে পরিচিত।

পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের কর্মকর্তাদের বক্তব্য, জনবলসংকটসহ নানা কারণে বিভিন্ন সময়ে এসব স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। তবে মানুষের কথা চিন্তা করে এখনো ট্রেনসেবা চালু রাখা হয়েছে। এসব স্টেশনে বিনা টিকিটে যাত্রী ওঠার পাশাপাশি বুকিং ছাড়াই মালামালও পারাপার হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও প্রতিনিয়ত রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হয় যে মানুষের কথা চিন্তা করে ট্রেনসেবাটি তারা বন্ধ করেনি। তবে স্টেশনগুলো আবার চালু করাও সময়ের দাবি। কারণ, স্থানীয় লোকজনই বলছেন স্টেশনগুলো দিয়ে বিপুল মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। এক ব্যক্তি বলছেন, ‘খিলা ও বিপুলসার স্টেশন আমাদের গ্রামের দুই দিকে কাছাকাছি। একসময় এই স্টেশনগুলো জমজমাট ছিল। দিনরাত ট্রেনের হুইসেল বাজত। কিন্তু এখন জৌলুশ নেই। স্টেশনগুলো বন্ধ থাকায় রাতে সেখানে মাদকসেবীদের আড্ডাসহ অসামাজিক কার্যক্রমও চলে। আমরা চাই, রেলের সোনালি দিনগুলো ফিরে আসুক।’

দৌলতগঞ্জ স্টেশনটি দেড় দশক আগেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। স্টেশনটি ডাকাতিয়া নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় নদীপথে আসা মালামাল ট্রেনে আনা-নেওয়ার জন্য এটিকে ব্যবহার করা হতো। এখন টিকিট বেচা ও মালামাল পরিবহনে বুকিং কার্যক্রম বন্ধ। কিছু জায়গা এখন দখল হয়ে কয়েক শ অস্থায়ী দোকান বসে গেছে, যার মধ্যে গড়ে উঠেছে লাকসামের বৃহৎ কাঁচাবাজার।

আমরা আশা করব, প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করে স্টেশনগুলো আবারও চালু করা হবে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে আমরা জানতে পারছি। এখন কবে নাগাদ পরিবর্তন দেখতে পাব আমরা, সেটিরই অপেক্ষা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ