বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ
Published: 8th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম মূখ্য সংগঠক তাকবির আমানসহ (২৪) চার জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ভুক্তভোগীর পিতা মো. সালাম (৪৫) বাদী হয়ে অভিযোগটি দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন- চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার তাকবির আমান (২৪), মিনহাজ (২৫), সৈকত (২৪) ও মিজমিজি কালু হাজির রোড এলাকার তানবির (২৪)। তাকবির আমান নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম মূখ্য সংগঠক।
অভিযোগে বাদী জানান, আমার মেয়ে মিজমিজি পাইনাদি রেকতম আলী উচ্চ বিদ্যালয় ৮ম শ্রেনীতে পড়াশুনা করে। আমার মেয়ে স্কুলে যাতায়াতের সময় বিবাদী তাকবির আমান (২৪) বিভিন্ন সময়ে আমার মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব নিয়ে আসছিল। বিষয়টি আমার মেয়ে আমাদের জানালে আমরা তাকে সতর্ক করি এবং তার অভিভাবকদের ঘটনা জানাই।
এর জেরে সোমবার ৭ এপ্রিল আমি এবং আমার স্ত্রী ছেলে-মেয়েকে বাসায় রেখে কাজে গেলে বিকেলে তাকবির আমার বাসায় যায়। এসময় আমি বাসায় ফোন করলে ছেলের কাছ থেকে জানতে পারি যে আমার মেয়েকে তাকবির জোরপূর্বক ধর্ষনের চেষ্টা করে। এসময় আমার মেয়ের ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে বিবাদীকে ঘরে তালা বন্ধ করে রাখে।
পরবর্তীতে তাকবিরের পবিবারের লোকজনদের খবর দিলে তার আরো ৫০/৬০জন অজ্ঞাত লোকজন ডেকে নিয়ে এসে তাকবিরকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য নারায়ণগঞ্জ মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম মূখ্য সংগঠক তাকবির আমানের মুঠো ফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছেন জানিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনুর আলম জানান, ওদের একে অপরের সাথে প্রেম ছিল। মেয়েটি বিয়ের জন্য দাবি করে আসছিল। ছেলেটি বিয়ে না করায় মেয়েটি এই অভিযোগ আনছে।
.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ আম র ম য় স গঠক
এছাড়াও পড়ুন:
বাবাকে হাত-পা বেঁধে মাথায় গরম পানি ঢেলে নির্যাতনের অভিযোগ সন্তানদের বিরুদ্ধে
লাকসামে বাবার সম্পত্তি সন্তানদের নামে লিখে না দেওয়ার জন্য বাবাকে হাত-পা বেঁধে গরম পানি মাথায় ঢেলে দিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে সন্তানদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে লাকসাম পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের গোপালপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার এ ঘটনার ১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, গোপালপুর গ্রামের বাড়ির উঠানে বৃদ্ধ বাবার হাত ধরে করছে টানাহেঁচড়া করছেন তার সন্তানরা। এসময় তারা বাবার গায়ের গেঞ্জিটাও টানতে টানতে ছিঁড়ে ফেলেন। বাবাকে টেনেহিঁচড়ে জবরদস্তি করে তাকে হাত পা বাঁধা হয়, এরপর গরম পানি বাবার মাথা ও মুখে ঢালেন তারই সন্তানেরা। এসময় ওই বৃদ্ধ বাবার আত্নচিৎকার করে বলেন ‘ও আল্লাহ রে, ও আল্লাহ, ও মা গো মা, ও ভাইরে ভাই, ও জসিমের মারে..., জসিমের মা আমারে বাঁচান, কে কোথায় আছেন- আমাকে বাঁচান, আমাকে মাইরা ফেলছে তারা...’। ওই নির্যাতন দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা বৃদ্ধকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার ওই বাবার নাম আবদুল জলিল (৬০)। আর নির্যাতনকারীরা তার ছেলে, মেয়ে ও তার স্ত্রী। তারা হলেন- ছেলে শান্ত (২৮), নোমান (২০), রকি (১৬), মেয়ে নাজমিন (২৬), নুপুর (১৩) ও জলিলের স্ত্রী রিনা আক্তার (৪৫)।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী আবদুল জলিল বাদী হয়ে সন্তান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, গোপালপুর গ্রামের মৃত হাজী ওয়ালীউল্লার ছেলে আবদুল জলিলের নামে বসতবাড়ি ও মাঠে ১২০ শতাংশ সম্পত্তি রয়েছে। জলিলের স্ত্রীসহ তিন ছেলে ২ মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে শান্ত প্রবাসে থাকেন, সে প্রবাস থেকে ওই সম্পত্তি তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় আবদুল জলিলকে হুমকি দেয় এবং বাড়িতে থাকা জলিলের অন্য সন্তানরা তাকে মারধর করেন। এছাড়া বাবাকে ভরণপোষণও দিচ্ছিলেন না তারা। এ নিয়েই সন্তান ও স্ত্রী সঙ্গে জলিলের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় অনেক বার সামজিকভাবে শালিসও হয়েছে।
প্রতিবেশিরা বলছেন, বৃহস্পতিবার জলিলের সঙ্গে তার স্ত্রী-সন্তানদের কথা-কাটাকাটি হয়। এসময় জলিল ঘরের দরজা জানালা ভাঙচুরের চেষ্টা চালাতে গেলে তার ছেলে মেয়েরা বাবার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে এ কাণ্ড চালায়।
নির্যাতনের শিকার আবদুল জলিল জানান, অনেক দিন ধরে আমার সন্তানরা সম্পত্তি নেওয়ার জন্য আমাকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিচ্ছে। আমার স্ত্রী রিনা আক্তার এর প্রতিবাদও করে না। আমাকে তারা ভরণপোষণও দেয় না। ছোটখাটো ঘটনা নিয়ে ঝামেলা করে। ওই দিন আমার সন্তানরা বাড়ির উঠানের মধ্যে আমাকে হাত-পা বেঁধে অনেক মেরেছে। হাত-পায়ে শরীরে এখনও দাগ আছে।
লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা শুক্রবার রাতে সমকালকে বলেন, নির্যাতনের ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। পারিবারিক কলহ থেকে এ ঘটনা। এ ঘটনায় নির্যাতিত আবদুল জলিল থানায় স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তবে পারিবারিক শান্তি বজায় রাখতে অভিযোগটি আবার প্রত্যাহার করেছেন।
ওসি বলেন, এলাকায় বিষয়টি সামাজিকভাবে বিরোধ নিরসন ছাড়াও পরিবার নিয়ে থানায় এসেছেন। স্ত্রী ও সন্তানরাও বিষয়টি নিয়ে অনুতপ্ত।