ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে ছাত্রদলের ২ পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৪
Published: 8th, April 2025 GMT
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ফেসবুকে স্ট্যাটাস নিয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অন্তত চারজন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) উপজেলার চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজে ঘটনাটি ঘটে।
চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাকের আহমেদ সবুজ অভিযোগ করে জানান, কয়েকদিন আগে তিনি চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটির সমালোচনা করে ফেসবুক একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেন কলেজ ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি হৃদয়। আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি হৃদয়ের নেতৃত্বে কলেজ প্রাঙ্গণে ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়।
আরো পড়ুন:
ক্যারাম খেলা নিয়ে ২ গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ২০
লক্ষ্মীপুরে স্বেচ্ছাসেবক দল ও কৃষক দলের সংঘর্ষে নিহত ১
সবুজ বলেন, “দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রদল নেতা প্রান্ত, রাফি ও তমাল কলেজ প্রাঙ্গণে পাল্টা কর্মসূচি পালন করে। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুক স্ট্যাটাস ও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জেরে হৃদয় আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে হৃদয়ের নেতৃত্বে তার সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কলেজের পাশে আমার দোকানে হামলা-ভাঙচুর চালায়। তারা আমাকে আহত করে। খবর পেয়ে পুলিশ এলে পুনরায় পুলিশের সামনে হৃদয়ের অনুসারীরা আমার দোকানে হামলা চালায়।”
চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ইয়াসিন হৃদয় অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, “কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমার নেতৃত্বে কলেজ প্রাঙ্গণে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। ওই কর্মসূচিতে বহিরাগত সবুজের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এতে আমিসহ ছাত্রদলের তিনজন নেতাকর্মী আহত হন।”
বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষা চন্দ্র দাস বলেন, “বহিরাগত কয়েকজন যুবক কলেজে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় বলে শুনেছি। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।”
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি লিটন দেওয়ান বলেন, “কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে বিশৃঙ্খলা হয়। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/সুজন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ছ ত রদল আহত চ ম হন ফ সব ক স ঘর ষ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
টাকা আত্মসাৎকারীকে জামিন দেওয়ায় গ্রাহকদের ক্ষোভ
উপজেলার রামশালা গ্রামের মিতু আক্তারের প্রবাসী স্বামী আক্কেলপুর ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট শাখায় পাঠান। সে টাকা কৌশলে আত্মসাৎ করে জমি-বাড়ি করেছে ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা। টাকার জন্য মিতুর সংসারে অশান্তি শুরু হয়েছে। টাকা না পেলে সংসার ভেঙে যাবে তাঁর।
একই ব্যাংকে আমানতকারী জামাল উদ্দীনের প্রবাসী তিন ছেলে নিয়মিত টাকা পাঠান। ওই ব্যাংকের ক্যাশিয়ার তাদের কষ্টার্জিত ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। গোপীনাথপুরের লিপি বেগম এ শাখায় স্থায়ী আমানত রেখেছিলেন। তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ১১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় মিতু আক্তার, জামাল উদ্দিন, লিপি বেগমসহ অসংখ্য গ্রাহক বুধবার সকাল থেকে ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট শাখা ও উপজেলা পরিষদের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন করেছেন। ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচিতে প্রতারিত গ্রাহক ছাড়াও দারুল কোরআন মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এর আগে তারা প্রতারকদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। কর্মসূচি থেকে ১৩ এপ্রিল একই দাবিতে ইসলামী ব্যাংক জয়পুরহাট শাখার সামনে মানববন্ধন করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা জানান, ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখার ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা কৌশলে গ্রাহকদের আঙুলের ছাপ নিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিতেন। তিনি বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদসহ ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে দেড় কোটি টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন। ২৩ মার্চ ঘটনাটি জানাজানি হলে গ্রাহকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিয়ে মাসুদ রানাকে অবরুদ্ধ করেন। তিনি সাংবাদিকসহ সবার সামনে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করেন। ওইদিনই আক্কেলপুর দারুল কোরআন মাদ্রাসার মুহতামিম (প্রধান শিক্ষক) ফিরোজ আহম্মেদ বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এক দিন পর আদালত থেকে তারা জামিনে ছাড়া পান। তিনি বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এতে গ্রাহকরা আমানতের টাকা পাওয়া ও জড়িতদের শাস্তির বিষয়টি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। তারা জামিন বাতিল করে আসামিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
মানববন্ধনে আক্কেলপুর দারুল কোরআন মাদ্রাসার মুহতামিম ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট শাখায় মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য এতিম ছাত্রদের দান-খয়রাতের টাকা রাখা ছিল। ডিজিটাল প্রতারণার মাধ্যমে কর্মকর্তারা মাদ্রাসার সাড়ে ৩৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এখন মাদ্রাসা পরিচালনা করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এতিমদের টাকা দ্রুত ফেরত চাই।
ইসলামী ব্যাংক জয়পুরহাট শাখার ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত দেড় কোটি টাকারও বেশি আত্মসাতের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এ ঘটনায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত করা হচ্ছে। আপাতত ওই শাখায় লেনদেন বন্ধ রাখা হয়েছে।