বৈশ্বিক তাপমাত্রা ঐতিহাসিক সর্বোচ্চে
Published: 8th, April 2025 GMT
ইউরোপের জলবায়ু পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা জানিয়েছে, মার্চ মাসে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ঐতিহাসিক সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। এটি নজিরবিহীন তাপপ্রবাহকে দীর্ঘায়িত করেছে এবং এটি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার সীমানা পেরিয়ে গেছে।
কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস জানিয়েছে, ইউরোপে এটি ছিল উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে রেকর্ড করা সবচেয়ে উষ্ণতম মার্চ মাস। ইউরোপ মহাদেশে বৃষ্টিপাতের মাত্রাকে অন্য যেকোনো মহাদেশের তুলনায় দ্রুত উষ্ণ করে তুলেছে।
ইতিমধ্যে বিশ্ব কোপার্নিকাস তাদের উপাত্তে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উষ্ণতম মার্চ মাস দেখেছিল। গত মাসে প্রায় অবিচ্ছিন্ন রেকর্ড বা প্রায় রেকর্ড ভঙ্গকারী তাপমাত্রা বজায় ছিল যা ২০২৩ সালের জুলাই থেকে অব্যাহত রয়েছে।
মার্চ মাসের তাপমাত্রা প্রাক শিল্প যুগের চেয়ে ১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেশি ছিল, যা একটি অস্বাভাবিকতাকে এতটাই অস্বাভাবিক করে তুলেছে যে বিজ্ঞানীরা এখনো এটি সম্পূর্ণরূপে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছেন।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গ্রান্থাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড দ্য এনভায়রনমেন্টের ফ্রিডেরিক অটো বলেন, “আমরা এখনো প্রাক-শিল্পায়নের চেয়ে ১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আছি, এটা সত্যিই ব্যতিক্রম। আমরা খুব শক্তভাবে মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কবলে আছি।”
বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে ২০২৪ সালের গোড়ার দিকে উষ্ণায়নের এল নিনোর ঘটনা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর পর বৈশ্বিক তাপমাত্রার চরম প্রবাহ কমে যাবে। তবে তাদের সেই কথাকে মিথ্যা প্রমাণ করে বৈশ্বিক তাপমাত্রার চরম প্রবাহ এখনো রয়েছে।
জাতিসংঘের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ প্যানেল আইপিসিসির একজন শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী রবার্ট ভাউটার্ড এএফপিকে বলেছেন, “আমরা এখনো বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রার সম্মুখীন হচ্ছি। এটি একটি ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চুরির অপবাদ দেওয়ায় শরীরে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা, দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে
কুমিল্লার চান্দিনায় চুরির অপবাদ দেওয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার এক চালক শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চান্দিনা উপজেলা সদরের সরকারি হাসপাতালসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মো. সবুজ নামের ওই চালককে চান্দিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, আগুনে সুবজের শরীরের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সবুজ চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা ইউনিয়নের গড়ামারা গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চান্দিনা উপজেলা সদরের বেলাশহর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চান্দিনা সদরের হাসপাতাল সড়কের ইউনুছ মিয়ার অটোরিকশা গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে সবুজসহ তিনজন ওই গ্যারেজে তাঁদের অটোরিকশা রাখেন। পালাক্রমে তাঁরা তিনজন পাহারাও দেন। প্রায় চার মাস আগে এক রাতে পাহারার দায়িত্ব ছিলেন সবুজ। ওই দিন রাত আনুমানিক দুইটার দিকে গ্যারেজে তালা দিয়ে সবুজ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যান। ওই সময় চোরচক্র দুটি অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন ওই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মানিক নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়। সেদিন রাতেই পুলিশ মানিককে ছেড়ে দেয়। পরে স্থানীয় কয়েকজন মাতবর সবুজকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু সবুজ জানান, তিনি ওই রায় মানেন না এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার ক্ষমতাও তাঁর নেই।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় কয়েকজন মাতবরের প্ররোচনায় সালাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি সবুজকে আটক করে তাঁর অটোরিকশা নিয়ে যান। এ সময় তাঁকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে চাপ দেওয়া হয়। একপর্যায়ে সে প্রকাশ্যে শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
সুবজের স্ত্রী খুশি আক্তার বলেন, ‘মাতবররা চোর ধরে ছেড়ে দিছে আর আমার স্বামীরে চুরির অপবাদ দিয়ে জরিমানা করেছে। আমার স্বামী চোর আখ্যা দেওয়ার এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গরিবের জন্য আইন নাই, বিচার নাই। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
গতকাল রাতে চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবেদ উল ইসলাম বলেন, ‘অটোরিকশা চুরির ঘটনায় সময় মানিক, সাইফুল ও নাজমুল নামের তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা হয়। ওই চুরির ঘটনায় সবুজকে দায়ী করে চাপ সৃষ্টি করলে সে অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জেনেছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’