পরপর দুবার ভিক্ষা চাওয়ায় ভিক্ষুকের কান কেটে দিলেন যুবক, পরে আটক
Published: 8th, April 2025 GMT
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে পরপর দুবার ভিক্ষা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এক ভিক্ষুকের কান কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মো. সোহেল রানা (২৮) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বগারপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
আটক সোহেল রানা উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বগারপাড় গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি এলাকায় কৃষিকাজ করেন। তাঁকে বর্তমানে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। আহত আবদুস সাত্তার (৫৫) উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের বাসিন্দা। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। গুরুতর আহত হওয়ায় তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে আবদুল সাত্তার প্রতিদিনের মতো বাড়ি থেকে ভিক্ষা করতে বের হন। তিনি বাড়ি বাড়ি ঘুরতে ঘুরতে পোগলদিঘা ইউনিয়নের বগারপাড় গ্রামে ভিক্ষা করতে যান। পরে সোহেল রানার বাড়িতে ঢুকে তাঁর কাছে ভিক্ষা চান। তখন সোহেল ভিক্ষা নেই বলে জানান। এরপর আবার ভিক্ষা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সোহেল তাঁর বাঁ কান কেটে দেন। ভিক্ষুকের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। বিকেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোহেলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কানে আঘাত পাওয়ার জন্য এক ব্যক্তি চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছিল। ওই ব্যক্তির কানে সেলাই লাগবে। এ জন্য উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চাঁদ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ওই ভিক্ষুক আটক যুবকের কাছে পরপর দুবার ভিক্ষা চেয়েছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই যুবক ভিক্ষুকের কান কেটে দেন। ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রী-ছেলেসহ তিন খুনের দায় স্বীকার, ১০ দিনের রিমান্ড
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে তিন খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. ইয়াসিন পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দায় স্বীকার করেছে। শনিবার বিকেলে তাকে তোলা হয় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বেলায়েত হোসেনের আদালতে। সেখানে ১০ দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান।
শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকায় ময়লার স্তূপ খুঁড়ে ইয়াসিনের স্ত্রী লামিয়া আক্তার (২২), চার বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ ওরফে রাফসান লাবিব ও লামিয়ার বড় বোন স্বপ্না আক্তারের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকেই এলাকাবাসী ইয়াসিনকে (২৪) ধরে পুলিশে দেন। সে মিজমিজি দক্ষিণপাড়ার মো. দুলালের ছেলে। আগে ইয়াসিন ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাত। পুলিশ জানিয়েছে, ছিঁচকে চোর ও মাদকাসক্ত হিসেবেও পরিচিত সে।
শুক্রবার রাতেই লামিয়ার মেজো বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে ইয়াসিন ছাড়াও তার বাবা মো. দুলাল (৫০) ও বোন মোসা. শিমুকে (২৭) আসামি করা হয়েছে। মুনমুন জানিয়েছেন, লামিয়া সিদ্ধিরগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। ৫ বছর আগে ইয়াসিনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বড় বোন স্বপ্নাও লামিয়ার সঙ্গে পশ্চিমপাড়ার ভাড়া বাসায় থাকতেন। ৭ এপ্রিল দুপুরে ওই বাসায় বোনদের সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ কথা হয়। এর পর থেকে তাদের মুঠোফোনটি বন্ধ ছিল।
মামলায় মুনমুন উল্লেখ করেছেন, মাদকাসক্ত ইয়াসিন কোনো কাজ করত না। প্রায় সময় টাকার জন্য লামিয়াকে মারধর করত ও হত্যার হুমকি দিত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার ইয়াসিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।