গাজীপুরে বাটা শো রুমে ভাঙচুর, ১২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 8th, April 2025 GMT
গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকায় বাটা শোরুমে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত ১২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার রাতে মহানগরের গাছা থানায় মামলাটি দায়ের করেন তানভীর সু-স্টোর নামে বাটা শো রুমের ম্যানেজার তসলিম উদ্দিন।
হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়া ৪ জনকে ৫ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গত সোমবার দুপুরে তৌহিদী জনতার ব্যানারে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শেষে বোর্ড বাজার এলাকার বাটা শো রুমসহ ৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় লোকজন।
অভিযোগ উঠেছে, বিক্ষোভ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় পরিকল্পিতভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আক্রমণ করে বিক্ষোভকারীরা। তারা বোর্ড বাজারের বড় মসজিদের নিচতলায় স্থানীয় ফেরদৌস হোসেনের মালিকানাধীন বাটা জুতার শো রুমের সামনে সাইনবোর্ড ভেঙ্গে ফেলে। একই মালিকের অন্য আরেকটি বাটা শো রুমের সামনের সাইনবোর্ডও ভেঙ্গে ফেলে। এরপর মহাসড়কের পাশের তৃপ্তি হোটেল, রাঁধুনী হোটেল ও লবলঙ্গ হোটেলের সামনে অংশে ভাঙচুর চালায়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বাটা কোম্পানির ডিলার ফেরদৌস হোসেন বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতা তার দোকানের সামনের সাইনবোর্ড ভাঙচুর করেছে। তবে দোকানের ভেতরে যেতে পারেনি। এর আগেই আমরা দোকান বন্ধ করি। এরই মধ্যে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে সিয়াম খান অনিক, শিমুল আহামেদ শাওন, শাহীন আলম ও জয়নাল আবেদীন নামে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী উপ-পুলিশ কমিশনার হাফিজুল ইসলাম সোমবার মধ্য রাতের পর গাছা থানায় সংবাদ সম্মেলন করে গ্রেপ্তার হওয়ার খবরটি সাংবাদিকদের জানান।
গ্রেপ্তাররা হলে- ময়মনসিংহে নতুন বাজার বালিপাড়া গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে শিমুল আহামেদ শাওন (২০), নোয়াখালির সবুজ মিয়ার ছেলে সিয়াম খান অনিক (১৮), শরীয়তপুরের নাজিমুদ্দিন মোল্লার কান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে শাহীন আলম (১৯) ও গাছা থানার পূর্ব কলমেশ্বর এলাকার আমির হোসেনের ছেলে জয়নাল আবেদীন।
গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী মোহাম্মদ রাশেদ জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ৪ জনকেই ৫দিনের করে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাটা শো রুমের ম্যানেজার তসলিম উদ্দিন বাদী হয়ে সোমবার রাতেই ১ হাজার ২শ অজ্ঞাত লোকের বিরুদ্ধে গাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
বোর্ড বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাটা শো রুম দু’টি বন্ধ রয়েছে। তবে হোটেলগুলো চলছে। তৃপ্তি হোটেলের তত্বাবধায়ক লাল মিয়া জানান, আমাদের হোটেলের সামনে এসে বিক্ষোভ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা এসে কোকাকোলা ও সেভেন আপের ব্যানার সরিয়ে ফেলতে চাপ দেয়। পরে আমরা সেগুলো সরিয়ে ফেলি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুরো এলাকায় তারা আতংক সৃষ্টি করে ফেলে।
গাছা থানার ওসি জানান, দোকানে হামলার ঘটনার সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত ও ইন্ধন দিয়েছে পুলিশ তাদেরকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র এল ক স মব র র স মন
এছাড়াও পড়ুন:
রূপনগরে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা উদ্বোধন
এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিশুদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা (মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে স্কুল অব লাইফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে এটির উদ্বোধন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেন রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা।
আয়োজকেরা জানান, প্রতি শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। খেলাধুলার মধ্য থাকবে দাবা, লুডু, ক্যারম, দড়ি লাফ ও ব্যাডমিন্টন। এ ছাড়াও থাকবে ছবি আঁকা, হস্তশিল্প ও সামাজিকীকরণের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাঠ ও পার্কের অপ্রতুলতা ঢাকা শহরের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। শিশুদের খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি একটি কার্যকর সমাধান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে, শহর হবে প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্কুল অব লাইফের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অনুপম হোসেন বলেন, ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরি করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। অর্থ ও স্থান সংকুলান বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষে দ্রুত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। তবে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের স্থান গড়ে তোলা সম্ভব। নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব লাইফের সদস্যসচিব সাবরিনা নওরিন লিমু, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মকর্তা, মিরপুর সেকশন- ৭ এর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের এলাকাবাসী ও শিশু-কিশোরেরা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিঠুন।