যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। জোটভুক্ত দেশগুলোর ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের প্রতিশোধ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিচ্ছে তারা। তবে নতুন শুল্কের আওতায় থাকছে না যুক্তরাষ্ট্রের বোরবন হুইস্কি। ইউরোপের মদকে মার্কিন প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ থেকে বাঁচাতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার এএফপির হাতে আসা একটি নথি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। ওই নথি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে সয়াবিন, পোলট্রি, চাল, ভুট্টা, ফল, বাদাম, কাঠ, মোটরসাইকেল, প্লাস্টিক, টেক্সটাইল পণ্য, চিত্রকর্ম, ইলেকট্রিক সরঞ্জাম ও সৌন্দর্যবর্ধক প্রসাধনীসামগ্রী।

তবে ফ্রান্স ও ইতালির অনুরোধে এই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত বোরবন হুইস্কি রাখা হয়নি। ইউরোপের এই দুই দেশ মদের (ওয়াইন) বড় রপ্তানিকারক। ইউরোপের অ্যালকোহল পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকির পর বড় শঙ্কায় রয়েছে প্যারিস ও রোম।

যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের এই তালিকা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যদেশগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল বুধবার এ নিয়ে ভোটাভুটি হবে। শেষ পর্যন্ত তা অনুমোদন পেলে আগামী মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে অধিকাংশ পণ্যের ওপর শুল্ক কার্যকর হবে। আর আমন্ডসহ (কাঠবাদাম) অন্য কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ শুরু হতে পারে ডিসেম্বরে।

গত মাস থেকে ইউরোপের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে। তার জবাবেই মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এ ছাড়া ২ এপ্রিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। তবে এর বিপরীতে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

আরও পড়ুনট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরাই এখন শুল্ক আরোপের সমালোচনা করছেন১ ঘণ্টা আগে

ইউরোপীয় ইউনিয়নের হিসাবে, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের লক্ষ্যবস্তু হবে জোটের দেশগুলোর ২৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৫ শতাংশ শুল্ক আগামীকাল অনুমোদন পেলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা একই মূল্যের পণ্যের ওপর প্রভাব পড়বে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্যপ্রধান মারোস সেফকোভিক গতকাল সোমবার বলেন, ‘এটি ২৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি হবে না। কারণ, আমরা সদস্যদেশগুলোর কথা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিচ্ছি।’

আরও পড়ুনএশিয়ার ৬ দেশসহ যে ১০ দেশের ওপর সবচেয়ে বেশি শুল্কারোপ করলেন ট্রাম্প৭ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে মন্দার পদধ্বনি, বাকি বিশ্বের কী হবে৫ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প র প র শ ল ক আর প পদক ষ প ইউর প র

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফে অগ্নিকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত চায় ঢাবি ছাত্রদল 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা উদ্‌যাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফ আগুনে পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে ঢাবি ছাত্রদল। শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটি এ দাবি জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস এবং সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আগুন লাগার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

ঢাবি ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিন তামী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান—   এই প্রতিপাদ্যে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে সামনে রেখে পয়লা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে আনন্দ শোভাযাত্রার অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রতিকৃতি তৈরির কাজে যুক্ত আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কিছুদিন ধরে আনন্দমুখর পরিবেশে এ কার্যক্রম চললেও শনিবার ভোর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে কিছু দুর্বৃত্ত অনুষদ প্রাঙ্গণে নির্মিতব্য ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ও শান্তির পায়রার প্রতিকৃতিতে অগ্নিসংযোগ করে তা ভস্ম করে দিয়েছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলা এবং ক্যাম্পাসে ফ্যাসিস্টদের মুক্ত পদচারণার বিষয়ে ঢাবি ছাত্রদল এর আগে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল, এই ন্যক্কারজনক ঘটনাটি তার সত্যতা প্রমাণ করে প্রতি একটি ভয়াবহ বার্তা দিয়ে গেল।’

ঢাবি ছাত্রদল বলেছে, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ এবং ফ্যাসিবাদী শাসনামলের বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলাকারীরা এখনো আবাসিক হলগুলোতে বহাল তবিয়তে অবস্থান করছে। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিনা বাধায় চলাফেরা করছে। ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করে দেশের পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত করছে। তাঁদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চরম উদাসীনতা দেখিয়েছে। এই অগ্নিসংযোগের ঘটনার মাধ্যমে সেটিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করছে ঢাবি ছাত্রদল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ