নিগারের জ্যোতিতে টানা দ্বিতীয় জয় বাংলাদেশের
Published: 8th, April 2025 GMT
বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তান ‘এ’ দলকে ১৬৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। আজ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৯.৪ ওভারে ২৭৬ রানে অলআউট হয় নিগার সুলতানার দল। তাড়া করতে নেমে ৩৯.১ ওভারে মাত্র ১০৯ রানেই অলআউট হন পাকিস্তানের মেয়েরা। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতি ম্যাচে টানা দ্বিতীয় জয় পেলেন মেয়েরা। গত রোববার স্কটল্যান্ডের মেয়েদের ৫ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ
আরও পড়ুনজিম্বাবুয়ে সিরিজে নেই তাসকিন, নতুন মুখ তানজিম৩ ঘণ্টা আগেমারুফা–রাবেয়াদের বোলিংয়ের সামনে পাকিস্তানের কোনো ব্যাটসম্যান ৪০ রানও করতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৩২ এসেছে দুয়া মাজিদের ব্যাট থেকে। আটে নেমে ২৬ রান করেন উম–ই–হানি। অন্যদের রানসংখ্যা যেন মুঠোফোনের নম্বর! প্রস্তুতি ম্যাচ বলেই সম্ভবত মোট ৯ জন বোলার ব্যবহার করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার। মারুফা, ফাহিমা ও রাবেয়া ২টি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা তেমন ভালো হয়নি। ইনিংসের নবম (৮.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সোমবার মধ্যরাত থেকে সাগরে শুরু হচ্ছে মাছ ধরায় ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা
বঙ্গোপসাগরে আজ সোমবার মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে ৫৮ দিনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা, বলবৎ থাকবে ১১ জুন পর্যন্ত। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় এ নিষেধাজ্ঞা আগে শুরু হতো ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময় এবার সাত দিন কমানো হয়েছে। সেই সঙ্গে তা ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য করা হয়েছে।
দেশের মৎস্যগবেষক, জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিন্যাসের দাবি করে আসছিলেন। সেই সঙ্গে ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন রয়েছে কি না, তার ওপর কারিগরি গবেষণার তাগিদ দিয়ে আসছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সময়সীমা পুনর্বিন্যাস করে ১৬ মার্চ এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে মৎস্যগবেষক, জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুনসমুদ্রসীমায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা কমিয়ে ৫৮ দিন নির্ধারণ, খুশি জেলেরা১৮ মার্চ ২০২৫ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের জলসীমায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিন্যাস করার বিষয়টিকে যুগান্তকারী বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক মৎস্য গবেষণা সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশের সাবেক গবেষক ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, ‘এটা দেশের সামুদ্রিক মৎস্য খাতের জন্য সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এমন দাবি করে আসছিলাম। কারণ, আগে সরকার যে উদ্দেশে এই নিষেধাজ্ঞা দিত, তা দুই দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকায় প্রতিবেশী দেশকে লাভবান করত। এটা আমাদের মৎস্যসম্পদের জন্য একটি বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।’
বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, মাছের বংশবিস্তার, বেড়ে ওঠা ও টেকসই আহরণের জন্য বঙ্গোপসাগরে ভারত ও বাংলাদেশ সরকার বছরের নির্দিষ্ট একটি সময়ে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয়। প্রতিবছর বাংলাদেশের জলসীমায় এই নিষেধাজ্ঞা থাকে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই ৬৫ দিন। আর ভারতের জলসীমায় তা থাকে ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন, ৬১ দিন।
বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, এত দিন বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকার মধ্যে প্রায় ৩৯ দিন ভারতীয় জেলেরা দেদার বাংলাদেশের জলসীমায় সুন্দরবন, কুয়াকাটাসহ উপকূলে প্রবেশ করে মাছ ধরে নিয়ে যেতেন। এতে দেশের লাখ লাখ জেলে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। এবার নিষেধাজ্ঞা একই সময়ে হওয়ায় এমনটা হবে না।
মেরিন ফিশারিজ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। শুরুতে শুধু ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলারগুলো এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকলেও ২০১৯ সাল থেকে সব ধরনের নৌযানকে এর আওতায় আনা হয়। ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে উপকূলের কয়েক লাখ জেলে দুর্বিষহ অবস্থার মুখোমুখি হন।
দক্ষিণের জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মা ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ধরায় ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা, মার্চ-এপ্রিলের দুই মাসের অভয়ারণ্যের নিষেধাজ্ঞা এবং সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা—সব মিলিয়ে বছরে ১৪৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা পালন করতে হতো তাঁদের। কিন্তু এখন তা আট দিন কমে যাওয়ায় ১৩৯ দিন নিষেধাজ্ঞা থাকবে। বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার জেলে ট্রলারের মাঝি জাফর হোসেন বলেন, ‘সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। এখন আমরা এই নিষেধাজ্ঞার যথাযথ বাস্তবায়ন চাই।’
নিষেধাজ্ঞাকে কেন্দ্র করে সাগর থেকে উপকূলে ফিরতে শুরু করেছে মাছ ধরা ট্রলারগুলো। বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী রাত সাড়ে আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের মালিক সমিতির আওতায় ৪০০ ট্রলার রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৩০০-এর মতো ট্রলার ফিরেছে। বাকিগুলো ফিরবে। সেই সঙ্গে বরগুনা সদরের নলী, তালতলীর ফকিরহাট, নিদ্রা, পটুয়াখালীর মহিপুর, আলীপুরেও অনেক ট্রলার ফিরে আসছে।