নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের পুকুর থেকে কিশোরের লাশ উদ্ধার
Published: 8th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জে জেলা কারাগারের সামনের পুকুর থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক কিশোরের লাশ উদ্ধার হয়েছে। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুর বারোটায় মরদেহটি উদ্ধার করে ফতুল্লা থানা পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বেলা এগারোটার সময় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে অবস্থিত জেলা কারাগারের সামনের পুকুরে এক কিশোরের লাশ ভাসতে দেখে এলাকাবাসি ফতুল্লা থানা পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহরের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) মো.
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ওই কিশোর মাদ্রাসার ছাত্র হতে পারে এবং পুকুরে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে।
তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পারব। তার পরিচয় শনাক্ত করতে থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলার আইন শৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।
ওসি শরীফুল ইসলাম আরও বলেন, পুকুরটি জেলা কারাগারের সামনে হলেও কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। ফলে পুকুরটিতে দিনে রাতে যখন তখন বহিরাগত নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোররা নেমে গোসল করেন। পুকুরটি এভাবে নিরাপত্তাহীনভাবে রাখা ঠিক নয়।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের সুপার মোহাম্মদ ফোরকান ওয়াহিদ বলেন, পুকুরটি কারাগারের সামনে হলেও এটি সড়ক বিভাগের স্থানে হওয়ায় আমরা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারছি না। তবে আজকের ঘটনার পর পুকুরটির নিরাপত্তার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দিয়েছি।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ক র গ র র স মন ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ভয়ে স্ত্রীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে থানায় তরুণ
প্রেমের সম্পর্কের জেরে পরিবারের অসম্মতিতে পালিয়ে বিয়ে করেন শাকিল হোসেন (২৪) ও মিতা খাতুন। দুজনের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারায় হলেও বিয়ের পর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে থাকতেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে তিন দিন আগে ‘আত্মহত্যা’ করেন মিতা। রূপগঞ্জ থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত করে শাকিলের কাছে লাশ হস্তান্তর করে।
শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অভিযোগ, পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে মিতাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে দেন শাকিল। এ ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ‘মারধরের ভয়ে’ স্ত্রীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গ্রামে না গিয়ে বাগমারা থানায় যান শাকিল। পরে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে লাশ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহীর বাগমারা থানায় এ ঘটনা ঘটেছে। মারা যাওয়া মিতা খাতুন (১৮) উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে। পুলিশি হেফাজতে থাকা শাকিল হোসেন একই ইউনিয়নের ভটখালী গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের সাত মাস বয়সী একটি শিশুসন্তান আছে। পেশায় এক্সকাভেটরচালক (খননযন্ত্র) শাকিল পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বসবাস করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে বাগমারা থানায় ঢোকে লাশবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্স। এ সময় শাকিল নামের এক তরুণ পুলিশকে জানান, অ্যাম্বুলেন্সে তাঁর স্ত্রীর লাশ আছে। তিন দিন আগে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে এবং নারায়ণগঞ্জে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন এমন আশঙ্কায় তিনি লাশ নিয়ে থানায় আসেন।
পুলিশ ও স্বজনেরা জানান, তিন বছর আগে মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্কের জেরে পালিয়ে বিয়ে করেন মিতা ও শাকিল। বিয়ের পর তাঁরা নারায়ণগঞ্জে চলে যান। সেখানে এক্সকাভেটর চালাতেন। পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রী ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (টিকটক) পোস্ট করতেন। গত মঙ্গলবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়। এর জেরে স্ত্রীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে মিতা গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেন। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় শাকিল একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। পরে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল লাশ হস্তান্তর করা হয়। খবর পেয়ে নিহত মিতার স্বজনেরা গতকাল লাশ আনতে নারায়ণগঞ্জে গিয়ে ফিরে আসেন। তার আগেই লাশ নিয়ে সটকে পড়েন শাকিল।
মিতার বাবা জালাল উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘জামাই এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। এই কারণে মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয় বলে জানতে পেরেছি। তাঁর মেয়েকে মেরে ফেলে লাশ জানালার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়েছে। লাশটি বাগমারা থানায় আছে জানার পর আজ থানা থেকে লাশ নিয়ে এসেছি।’ শাকিলকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
অভিযুক্ত শাকিল পুলিশি হেফাজতে থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। শাকিলের বরাত দিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিতা আত্মহত্যা করেছে বলে সে (শাকিল) জানিয়েছে। লাশ হস্তান্তর করতে দেরি হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে কিছু লোক তাঁকে অনুসরণ করছিল, এই ভয়ে লাশ নিয়ে গোপনে চলে এসেছে।’ তিনি বলেন, দুর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে মেয়ে পক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে লাশ দাফনের জন্য মেয়ের বাবার কাছে দেওয়া হয়েছে। শাকিল এখনো (বেলা তিনটা) পুলিশি হেফাজতে আছে। পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
স্থানীয় যোগীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম জানান, শাকিল ও মিতা পরিবারের অসম্মতিতে বিয়ে করার পর নারায়ণগঞ্জে থাকতেন। দাফনের জন্য লাশ বাগমারা থানা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন দাফনের প্রক্রিয়া চলছে।