সয়াবিন তেলের দামের বিষয়ে আজও সিদ্ধান্ত হয়নি, ফের বৈঠক কাল
Published: 8th, April 2025 GMT
সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আজ মঙ্গলবার ও গত রোববার দুই দিন বৈঠক করেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তাই আগামী কাল বুধাবার সচিবালে এ বিষয়ে আবারও বৈঠক ডেকেছেন তিনি। ওই বৈঠকের পরই জানা যাবে কত দাম বাড়ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১৩ টাকা করে বাড়াতে চায় কোম্পানিগুলো। বিষয়টি গত ২৭ মার্চ বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে (বিটিটিসি) জানিয়েছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। ১ এপ্রিল থেকেই তারা নতুন দর কার্যকর করতে চেয়েছিল।
বাণিজ্য উপদেষ্টার সভাপতিত্বে গতকাল অনুষ্ঠিত বৈঠকে ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খানের পাশাপাশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ও ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রগুলো জানায়, কারখানার মালিকদের পক্ষ থেকে বৈঠকে জানানো হয়েছে, আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত মাসে। দাম বাড়াতে চাওয়ার মূল কারণ এটাই। তবে রেয়াত সুবিধা বজায় থাকলে দাম বাড়াতে চান না তারা।
এদিকে কর রেয়াতের সুবিধা বহাল রাখার বাস্তবতায় এনবিআর নেই বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ধারণা পেয়েছে। এ কারণেই এবারের রোজার মাঝামাঝি সময়ে ট্যারিফ কমিশন ভোজ্যতেলে আমদানি পর্যায়ের শুল্ক-কর রেয়াতের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির সুপারিশ করে এনবিআরকে চিঠি দেয়। কিন্তু এনবিআর এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
ঈদের ছুটির আগে শেষ কর্মদিবস ২৭ মার্চ ট্যারিফ কমিশনে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে ১ এপ্রিল থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৯৩ টাকা করার প্রস্তাব দেয় পরিশোধন কারখানার মালিকদের সংগঠন। সে হিসেবে লিটারে ১৮ টাকা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আর পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ৯৩৫ টাকা।
একইভাবে খোলা সয়াবিন ও খোলা পাম তেলের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে লিটারপ্রতি ১৭০ টাকা। বর্তমানে সরকার নির্ধারিত দাম লিটারপ্রতি ১৫৭ টাকা। এ হিসাবে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৩ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৫ থেকে ১৭৬ টাকা। আর ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৮৪৫ থেকে ৮৫০ টাকা। আর এক লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৭ থেকে ১৬৫ টাকা ও এক লিটার পাম তেলের দাম ১৪৪ থেকে ১৫০ টাকা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রূপনগরে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা উদ্বোধন
এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিশুদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা (মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে স্কুল অব লাইফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে এটির উদ্বোধন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেন রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা।
আয়োজকেরা জানান, প্রতি শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। খেলাধুলার মধ্য থাকবে দাবা, লুডু, ক্যারম, দড়ি লাফ ও ব্যাডমিন্টন। এ ছাড়াও থাকবে ছবি আঁকা, হস্তশিল্প ও সামাজিকীকরণের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাঠ ও পার্কের অপ্রতুলতা ঢাকা শহরের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। শিশুদের খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি একটি কার্যকর সমাধান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে, শহর হবে প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্কুল অব লাইফের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অনুপম হোসেন বলেন, ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরি করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। অর্থ ও স্থান সংকুলান বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষে দ্রুত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। তবে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের স্থান গড়ে তোলা সম্ভব। নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব লাইফের সদস্যসচিব সাবরিনা নওরিন লিমু, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মকর্তা, মিরপুর সেকশন- ৭ এর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের এলাকাবাসী ও শিশু-কিশোরেরা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিঠুন।