নিতাইগঞ্জে কোকাকোলার গুদামে হামলার চেষ্টা, আটক ৪
Published: 8th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ শহরের নিতাইগঞ্জে কোকাকোলার এজেন্টের গুদামে গিয়ে সব ধরনের কোমলপানীয় ধ্বংসের হুমকি প্রদান ও হামলার চেষ্টার অভিযোগে চার যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
আটকরা হলেন- হামদাদ শরীফ রাইয়ান (২৪), মো. জহির (৩০), মো. রিয়াদ (২৭) এবং মো. সুজন (১৮)। তারা সবাই জেলা সদরের মুসলিমনগর এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে নিতাইগঞ্জের নলুয়া রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানাগেছে, মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বেলা পৌনে ১২টার সময় বাপ্পী চত্বর এলাকার জাহিদ ওরফে জহিরের নেতৃত্বে ৬ থেকে ৭ জন যুবক বাংলাদেশ বেভারেজ লিমিটেডের কোমল পানীয় কোকা কোলার পরিবেশক 'দি জামাল অ্যান্ড কোম্পানি'র গুদামে প্রবেশ করেন।
জাহিদ ওরফে জহির এবং তার সঙ্গে থাকা আজমীর শেখ সজলসহ সবাই নিজেদের তারেক জিয়া প্রজন্ম দল নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন। তারা গুদামে মজুদকৃত কোকা কোলার সব ধরনের কোমলপানীয় পণ্য ধ্বংসের জন্য সেখানে দায়িত্বেরত নিরাপত্তা কর্মী ও অন্যান্য কর্মচারীদের হুমকি দেন এবং গুদামে হামলার চেষ্টাও করেন।
এ সময় হুমকি ও হামলার চেষ্টার বিষয়টি কোকা কোলার পরিবেশক ‘দি জামাল এন্ড কোম্পানি’র পক্ষ থেকে সদর থানা পুলিশকে জানানো হয়। পরে সদর মডেল থানা পুলিশের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে হামদাদ শরীফ রাইয়ান, মো.
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটকৃতরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে কিনা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নই। তবে তাদের সবার ব্যক্তিগত বিষয়ে আমরা খতিয়ে দেখছি এবং যাবতীয় তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছি।
তিনি আরও জানান, এ আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আটককৃতরা একেকজন একেক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ভয়ে স্ত্রীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে থানায় তরুণ
প্রেমের সম্পর্কের জেরে পরিবারের অসম্মতিতে পালিয়ে বিয়ে করেন শাকিল হোসেন (২৪) ও মিতা খাতুন। দুজনের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারায় হলেও বিয়ের পর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে থাকতেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে তিন দিন আগে ‘আত্মহত্যা’ করেন মিতা। রূপগঞ্জ থানা-পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত করে শাকিলের কাছে লাশ হস্তান্তর করে।
শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অভিযোগ, পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে মিতাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে দেন শাকিল। এ ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ‘মারধরের ভয়ে’ স্ত্রীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গ্রামে না গিয়ে বাগমারা থানায় যান শাকিল। পরে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে লাশ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহীর বাগমারা থানায় এ ঘটনা ঘটেছে। মারা যাওয়া মিতা খাতুন (১৮) উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে। পুলিশি হেফাজতে থাকা শাকিল হোসেন একই ইউনিয়নের ভটখালী গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের সাত মাস বয়সী একটি শিশুসন্তান আছে। পেশায় এক্সকাভেটরচালক (খননযন্ত্র) শাকিল পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বসবাস করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে বাগমারা থানায় ঢোকে লাশবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্স। এ সময় শাকিল নামের এক তরুণ পুলিশকে জানান, অ্যাম্বুলেন্সে তাঁর স্ত্রীর লাশ আছে। তিন দিন আগে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে এবং নারায়ণগঞ্জে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন এমন আশঙ্কায় তিনি লাশ নিয়ে থানায় আসেন।
পুলিশ ও স্বজনেরা জানান, তিন বছর আগে মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্কের জেরে পালিয়ে বিয়ে করেন মিতা ও শাকিল। বিয়ের পর তাঁরা নারায়ণগঞ্জে চলে যান। সেখানে এক্সকাভেটর চালাতেন। পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রী ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (টিকটক) পোস্ট করতেন। গত মঙ্গলবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়। এর জেরে স্ত্রীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে মিতা গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেন। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় শাকিল একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। পরে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল লাশ হস্তান্তর করা হয়। খবর পেয়ে নিহত মিতার স্বজনেরা গতকাল লাশ আনতে নারায়ণগঞ্জে গিয়ে ফিরে আসেন। তার আগেই লাশ নিয়ে সটকে পড়েন শাকিল।
মিতার বাবা জালাল উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘জামাই এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। এই কারণে মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয় বলে জানতে পেরেছি। তাঁর মেয়েকে মেরে ফেলে লাশ জানালার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়েছে। লাশটি বাগমারা থানায় আছে জানার পর আজ থানা থেকে লাশ নিয়ে এসেছি।’ শাকিলকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
অভিযুক্ত শাকিল পুলিশি হেফাজতে থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। শাকিলের বরাত দিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিতা আত্মহত্যা করেছে বলে সে (শাকিল) জানিয়েছে। লাশ হস্তান্তর করতে দেরি হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে কিছু লোক তাঁকে অনুসরণ করছিল, এই ভয়ে লাশ নিয়ে গোপনে চলে এসেছে।’ তিনি বলেন, দুর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে মেয়ে পক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে লাশ দাফনের জন্য মেয়ের বাবার কাছে দেওয়া হয়েছে। শাকিল এখনো (বেলা তিনটা) পুলিশি হেফাজতে আছে। পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
স্থানীয় যোগীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম জানান, শাকিল ও মিতা পরিবারের অসম্মতিতে বিয়ে করার পর নারায়ণগঞ্জে থাকতেন। দাফনের জন্য লাশ বাগমারা থানা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন দাফনের প্রক্রিয়া চলছে।