আর্সেনালের বিপক্ষে রিয়ালের প্রতিশোধের ম্যাচ
Published: 8th, April 2025 GMT
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে মাঠে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ। লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামে প্রথম লেগে লস ব্ল্যাঙ্কসদের প্রতিপক্ষ আর্সেনাল। এই ম্যাচটা রিয়ালের প্রতিষোধের ম্যাচ।
তর্কাতীত ভাবেই চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসের সেরা দল রিয়াল মাদ্রিদ। নামের পাশে ১৫টি শিরোপা সেই দাবিকে সত্যতা দেয়। তবে লস ব্ল্যাঙ্কসরা ২০০৪/০৫ থেকে ২০০৯/১০ মৌসুম পর্যন্ত কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারেনি। সেটা তাদের চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত।ততদিনে রিয়াল গড়ে ফেলেছিল প্রথম গ্যালাকটিকো, ঝুড়িতে ছিল ৯টি ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা। এই কালো অধ্যায়ের সময় তারা যথাক্রমে জুভেন্তাস, আর্সেনাল, বায়ার্ন মিউনিখ, রোমা, লিভারপুল ও অলিম্পিক লিওর বিপক্ষে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেরা আটে উঠতে ব্যর্থ হয়।
আরো পড়ুন:
পেনাল্টি মিস করে বাজি হেরেছেন ভিনিসিয়ুস
ভিনির পেনাল্টি মিসে রিয়ালের শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার পথে
এই ৬ প্রতিপক্ষের পাঁচটিকেই ২০১০/১১ মৌসুম থেকে এখন পর্যন্ত এক বা একাধিকবার হারিয়েছে রিয়াল। কেবল আর্সেনালকে এখনও তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পায়নি।
২০০৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শেষ ষোলোতে থিয়েরি অঁরির দুর্দান্ত এক গোল রিয়ালের বিপক্ষে জিতে আর্সেনাল। বার্নাব্যুতে ১-০ ব্যবধানে জয়ের পর ঘরের মাঠে গোলশূন্য ড্র করে কোয়ার্টারে উঠে গানাররা। এরপর এই দুই দল আর কখনো একে অপরের মুখোমুখি হয়নি।
তবে এবার মিলছে সুযোগ। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এমিরেটসে খেলবে রিয়াল। দেড় যুগের অপেক্ষার পর অবশেষে সুযোগ এসেছে প্রতিশোধটাও নেওয়ার। চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে নিজেদের সবচেয়ে হতাশাজনক সময়টাকে সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলতে এবার শুধু আর্সেনালকে হারানোই বাকি রিয়ালের।
আর্সেনাল বুকায়ো সাকার প্রত্যাবর্তনে উজ্জীবিত। যিনি ১০১ দিন হ্যামস্ট্রিং চোটের কারণে মাঠের বাইরে ছিলেন। ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম ম্যাচে রিয়ালকেই পাচ্ছেন তিনি। গানার্স বস মিকেল আর্তেতা তার মিডফিল্ড ত্রয়ী ডেকলান রাইস, মার্টিন ওডেগার্ড ও থমাস পার্টি নিয়ে কৌশল সাজাবেন। এই ওডেগার্ড রিয়াল থেকেই আর্সেনালে নাম লিখিয়েছেন।
আর্সেনালের রিকারডো ক্যালাফিওরি, কাই হাভার্টজ, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, তাকেহিরো তোমিয়াসু এবং গ্যাব্রিয়েল ম্যাগালহায়েসের চোট সমস্যা আছে। এদের মধ্যে কেবল ক্যালাফিওরি এপ্রিল ১৬ তারিখে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ফিরতি লেগের জন্য স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।
অন্যদিকে, রিয়াল মাদ্রিদের সামনে খেলবেন কিলিয়ান এমবাপে ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। এই দুজন চলমান মৌসুমে ৫১টি গোল করেছেন। কার্লো আনচেলত্তির দলের মিডফিল্ডের মূল চালিকাশক্তি জুড বেলিংহ্যাম, যিনি তার ক্যারিয়ারে প্রথমবার আর্সেনালের বিপক্ষে খেলবেন। চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরতে পারেন গোলরক্ষক থিয়াবো কর্তোয়া।
চোট সমস্যা আছে দানি সেবালিয়োস, এদার মিলিশাও, দানি কারভাহালের। ফরাসি মিডফিল্ডার অরেলিয়েন চৌয়াযমিনির কার্ড জটিলতায় এই ম্যাচটা খেলতে পারবেন না।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ল গ আর স ন ল চ য ম প য়নস ল গ র আর স ন ল
এছাড়াও পড়ুন:
শতবর্ষী ঐতিহ্যে চুনারুঘাটের বৈশাখী মেলা, কৃষিপণ্যের বাহারে মুখর পীরের বাজার
শত বছরের ঐতিহ্য নিয়ে চুনারুঘাট উপজেলার পীরের বাজারে শুরু হয়েছে বৃহৎ বৈশাখী মেলা, স্থানীয়ভাবে যা 'বান্নি' নামে পরিচিত। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এই মেলাটি চুনারুঘাটসহ সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলা হিসেবে পরিচিত।
মঙ্গলবার সকাল থেকে মেলা শুরু হয় এবং মূল আকর্ষণ হিসেবে থাকছে কৃষিপণ্যের বিশাল সমাহার। মেলায় পাওয়া যাচ্ছে লাঙল, জোয়াল, দা, কাঁচি, মই, মাছ ধরার সরঞ্জামসহ অসংখ্য কৃষি উপকরণ। মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা, হস্তশিল্প ও মনিহারি পণ্যেরও ছিলো চোখধাঁধানো উপস্থিতি।
স্থানীয় দোকানিরা জানান, প্রতিবছর বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে এই মেলায় অংশগ্রহণ করেন। শুধু হবিগঞ্জ নয়, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী এমনকি উত্তরবঙ্গ থেকেও বিক্রেতারা অংশ নিয়েছেন এ ঐতিহ্যবাহী আয়োজনে।
চুনারুঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র নাজিম উদ্দিন সামছু বলেন, এই মেলা মূলত কৃষকদের জন্য। এখান থেকে প্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য সংগ্রহ করতেন তারা।
তবে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারের ফলে কৃষিকাজে ব্যবহৃত অনেক সরঞ্জামের প্রয়োজন কমে যাওয়ায় মেলার জৌলুস কিছুটা কমেছে বলে মনে করেন অনেকে। সেইসঙ্গে আশপাশে ঘরবাড়ি গড়ে ওঠায় মেলার পরিসরও সীমিত হয়েছে।
স্থানীয় ইউএনও মোহাম্মদ রবিন মিয়া জানান, মেলায় অংশ নিতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ আসছেন। মেলা চলাকালীন নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে পুলিশ বাহিনী, নিশ্চিত করেন চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, শত বছর আগে এই মেলা শুরু হয়েছিল ছোট পরিসরে পূজা আয়োজনের মাধ্যমে। পরে তা বৃহৎ মেলায় রূপ নেয়।
এখনও অনেকেই শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করতে এই মেলায় আসেন, স্মৃতিচারণ করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। মেলায় পরিবেশিত হচ্ছে গ্রামবাংলার আবহমান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।
চুনারুঘাটের এই বৈশাখী মেলা শুধু একটি উৎসব নয়, বরং এটি এ অঞ্চলের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও কৃষিভিত্তিক জীবনের প্রতিচ্ছবি।