চারঘাটে মদপানে দুজনের মৃত্যু, পরিবারের দাবি গ্যাস্ট্রিক
Published: 8th, April 2025 GMT
রাজশাহীর চারঘাটে মদ পানের পর অসুস্থ হয়ে মাসুদ রানা (৩৫) ও নাদিম ইসলাম (২৮) নামের দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকালে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে তাদের মৃত্যু হয়। তাদের দুজনের বাড়ি উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নে। তবে পরিবারের দাবি গ্যাস্ট্রিক জনিত কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
মাসুদ রানা ইসলাম সকালে সাড়ে সাতটার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ও নাদিম ইসলাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে মারা যান। এ ঘটনায় মোহাম্মদ টনি (২৯) নামের আরও এক ব্যক্তি গুরুতর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।
মারা যাওয়া মাসুদ রানা নিমপাড়া ইউনিয়নের কালাম আলীর ছেলে এবং নাদিম নিমপাড়া ইউনিয়নের হাবিবপুর এলাকার শামসুল হকের ছেলে। চিকিৎসাধীন টনি নিমপাড়া ইউনিয়নের হাবিবপুর এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে। টনি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মদ খেয়ে চিকিৎসাধীন মোহাম্মদ টনি বলেন, “আমার গাড়ি না থাকায় মাসুদ রানার ভ্যান রিজার্ভ নিয়ে চলাফেরা করি। আর নাদিম আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মাসুদ রানা, নাদিম আমি ও মেহেদী নামে একজনসহ চারজন উপজেলার ঝিকরা এলাকার মামুন নামের এক ব্যাক্তির কাছে মদ খেতে গিয়েছিলাম। আমি সামান্য একটু খেতেই শরীর ঝিম ঝিম লাগে এজন্য বেশি খাইনি। কিন্তু নাদিম ও রানা বেশি পরিমাণে মদ পান করে।”
তিনি আরো বলেন, “সেদিন রাত থেকেই আমরা তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়ি। শরীর খারাপ থাকায় ও ঘুমে বিছানা থেকে সোমবার কেউ উঠতে পারিনি। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে মাসুদ রানা ও নাদিম আরো বেশি অসুস্থ হয়ে যায়। পরবর্তীতে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে। আমারও অসংখ্যবার বমি হয়েছে। এখনো বিছানা থেকে উঠতে পারছি না। মদ পানের কারণেই আমার বন্ধুদের মৃত্যু হয়েছে।”
মৃত মাসুদ রানার স্ত্রী সাবিনা খাতুন বলেন, “আমার স্বামী রবিবার রাত ৮টার দিকে বাড়িতে এসেছে। মদ খেয়ে এসেছিল কিনা আমাকে কিছু বলেনি। রাতে দুইটি বিস্কুট ছাড়া আর কিছু খায়নি। গতকাল সারাদিন ঘুমিয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে পেট ব্যাথা শুরু হলে অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা ভেবে রাত দুইটার দিকে হাসপাতালে নিলে সকালে তার মৃত্যু হয়।”
চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, “নিমপাড়া এলাকার দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে আছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/কেয়া/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রূপনগরে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা উদ্বোধন
এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিশুদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর আবাসিক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ খেলার জায়গা (মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড) উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে স্কুল অব লাইফ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও হেলথ ব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে এটির উদ্বোধন করা হয়। এই আয়োজনে সহযোগিতা করেন রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা।
আয়োজকেরা জানান, প্রতি শনিবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কে নিয়মিত মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ডে খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। খেলাধুলার মধ্য থাকবে দাবা, লুডু, ক্যারম, দড়ি লাফ ও ব্যাডমিন্টন। এ ছাড়াও থাকবে ছবি আঁকা, হস্তশিল্প ও সামাজিকীকরণের মতো বিভিন্ন কার্যক্রম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মাঠ ও পার্কের অপ্রতুলতা ঢাকা শহরের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের ৩৭টিতে কোনো খেলার মাঠ বা পার্ক নেই। শিশুদের খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য এলাকাভিত্তিক মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি একটি কার্যকর সমাধান। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে উঠবে, শহর হবে প্রাণবন্ত ও বাসযোগ্য।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্কুল অব লাইফের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অনুপম হোসেন বলেন, ঘরবন্দী জীবনে শিশুরা হাঁপিয়ে উঠেছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন ঘরে থাকার ফলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাভিত্তিক স্বল্প ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে মোবাইল প্লে-গ্রাউন্ড তৈরি করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরি করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার মানসিকতা গড়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ-পার্ক নেই। অর্থ ও স্থান সংকুলান বিবেচনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষে দ্রুত বড় আকারের মাঠ-পার্ক তৈরি সম্ভব নয়। তবে খুব কম খরচে ও স্বল্প জায়গায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের স্থান গড়ে তোলা সম্ভব। নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অব লাইফের সদস্যসচিব সাবরিনা নওরিন লিমু, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মকর্তা, মিরপুর সেকশন- ৭ এর রূপনগর আবাসিক এলাকার ১৫ নম্বর সড়কের এলাকাবাসী ও শিশু-কিশোরেরা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মিঠুন।