'অন্য সিনেমার নেগেটিভ রিভিউ 'দাগির' নামে চালিয়ে দিচ্ছে একটা চক্র’
Published: 8th, April 2025 GMT
ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলোকে ঘিরে দর্শকদের ব্যাপক উন্মাদনা লক্ষ্য করা গেছে। সিঙ্গেল হল থেকে শুরু করে মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে টিকিট নিয়ে চলছে হাহাকার। এরই মধ্যে ‘দাগি’ সিনেমা নিয়ে ঘটলো বিরূপ ঘটনা। অন্য এক সিনেমার নেতিবাচক রিভিউ দাগি বলে সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দিয়েছে একটি গ্রুপ। যা দৃষ্টিগোচর হয়েছে দাগি টিমের। তাই অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল।
সোমবার রাতে রাজধানীর এয়ারপোর্ট রোডের সেন্টারপয়েন্ট শপিং মল স্টার সিনেপ্লেক্সে বিশেষ প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিল ‘দাগি’ টিম। প্রদর্শনীর আগে কথা বলেন ‘দাগি’ সিনেমার প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিলসহ নিনেমার কথা কুশলীরা।
শাহরিয়ার শাকিল বলেন, “আমরা দেখেছি কোনো একটি সিনেমার রিভিউ ‘দাগি’ সিনেমার বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং সেটা সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। একটি ভিডিওতে দেখেছি যেখানে বলা হচ্ছে, এটি একটি জঘন্য সিনেমা। আমরা টিকিট না পেয়ে এই সিনেমা দেখেছিলাম। পাশে দাগির পোস্টার, যেন এটা দাগির রিভিউ।”
এরপর হুঁশিয়ারি দিয়ে এই প্রযোজক বলেন, ‘এতদিন ধরে একটাও নেগেটিভ রিভিউ পেলাম না, হঠাৎ করে কেন এই ধরনের রিভিউ যে, এত খারাপ সিনেমা! এটা পরিকল্পিত অপপ্রচার। আবারো যদি কেউ এরকম ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে আমরা অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।’
পরে বিশেষ প্রদর্শনীতে উপস্থিত অভিনয়শিল্পী, সংগীতশিল্পী, নির্মাতা, প্রযোজক এবং সাংবাদিকরা ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের চালানো গণহত্যার প্রতিবাদে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে মৌন প্রতিবাদে অংশ নেন।
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ৭ এপ্রিল সারা বিশ্বে ডাকা হয় ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক’। এতে সমর্থন জানান এদেশের সাধারণ মানুষ। পূর্ব পরিকল্পিত হওয়ায় একইদিনে অনুষ্ঠিত হয় ‘দাগি’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী। তবে শিল্পী ও সাংবাদিক সমাজের যারা এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন তারা সেই প্রতিবাদকে সমর্থন করতে ভোলেননি। গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে এক মিনিট নীরবতার মাধ্যমে অংশ নিয়েছেন বিশেষ প্রদর্শনীতে।
আলফা আই প্রযোজিত ‘দাগি’ নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন। এতে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো, তমা মির্জা, সুনেরাহ বিনতে কামাল, শহিদ্দুজামান সেলিম, গাজী রাকায়েত, রাশেদ মামুন অপু প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফর ন ন শ ঈদ র স ন ম
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাইব্যুনালে ৩৩৯ অভিযোগ, ২২ মামলায় গ্রেপ্তার ৫৪
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ৩৩৯টি অভিযোগ জমা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ২২ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৪১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭০ বেসামরিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৬২ ও ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছেন। ইতোমধ্যে ৫৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা, আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো, চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ড ও রামপুরায় ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা ব্যক্তিকে গুলি করা মামলায় তদন্ত শেষ পর্যায়ে। শিগগির এগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, মামলা তদন্তের স্বার্থে এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এক হাজারের বেশি মানুষের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। পরোয়ানা জারির পরও ৮৭ আসামি পলাতক।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড, সুপিরিয়র কমান্ড, সরাসরি সম্পৃক্ত এবং যাদের কারণে রাষ্ট্র এমন হয়েছে, তাদের আগে বিচার করতে চাই। আমরা ভুক্তভোগীদের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, বিচার কার্যক্রমে গতি আনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের বেশ কিছু ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এটি হতে পারে। যাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। কবে নাগাদ বিচার শুরু করা যাবে– প্রশ্নে তিনি বলেন, সময় বেঁধে দিয়ে বিচার করা যাবে না। সেটি যুক্তিযুক্তও নয়।
মতবিনিময়ের শুরুতে তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেড়-দুই হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। ২৫ হাজারের মতো ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন। সব ঘটনার জলজ্যান্ত প্রমাণ রয়েছে। ট্রাইব্যুনালে আমরা সেটি প্রমাণ করতে সক্ষম হবো এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোপন বন্দিশালা থেকে টাইম বোমা উদ্ধার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমিসহ গুমের মামলার তদন্তে যাওয়া দলের সদস্যদের হত্যার উদ্দেশ্যে টাইমার বোমা রাখা হয়েছিল। তবে ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে কোনো তথ্য-উপাত্ত যেন ফাঁস না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, গুমের বিষয়ে আমরা উত্তরায় একটা বড় বন্দিশালায় তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক কিছু আমরা আবিষ্কার করেছি। টাইমার বোমা দেখেছি। হয়তো এ বোমা রাখা হয়েছিল তদন্তকারী দলকে হত্যার পরিকল্পনা থেকে। আমাদের পরিদর্শনের ঠিক দু’দিন পর সেখানে প্রধান উপদেষ্টার পরিদর্শন করার কথা ছিল। তিনি অন্য জায়গায় গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করেন।
মতবিনিময় সভায় প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম, গাজী এম এইচ তামিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।