শেখ হাসিনার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি: আদালতকে তুরিন
Published: 8th, April 2025 GMT
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ আদালতে বলেছেন, ‘‘বলা হচ্ছে, আমি ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সাপোর্ট করেছি। অথচ তার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ৬ বছর ধরে বঞ্চিত। বুঝলাম না, আমি কোন পক্ষের লোক।’’
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আব্দুল জব্বার নামে এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় রিমান্ড শুনানিতে এসব দাবি করেন তুরিন আফরোজ।
এর আগে, সোমবার রাতে উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তুরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার সাব-ইন্সপেক্টর সুমন মিয়া।
বেলা ১টার দিকে তুরিন আফরোজকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। শুনানিকালে তাকে এজলাসে তোলা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তুরিন আফরোজের পক্ষে শুনানি করতে কয়েকজন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত হন। তবে তুরিন আফরোজ জানান, তার আইনজীবী আছে। তখন বিচারক জানতে চান, কে আপনার আইনজীবী। তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘সাইফুল করিম।’’ তবে তাকে খুঁজে পাননি তুরিন আফরোজ।
তখন তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘মাননীয় আদালত, আমি আপনার অনুমতি নিয়ে কথা বলতে চাই।’’ আদালত তাকে অনুমতি দেন। তখন বিচারককে উদ্দেশ করে তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘আমি দুই, তিন, পাঁচ মিনিট, কতটুকু সময়ে শেষ করব বললে ভালো হয়।’’ আদালত বলেন, ‘‘বলেন আপনি।’’
তখন তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘গত ৪ তারিখে আমার বিরুদ্ধে নীলফামারীতে মামলা। পরদিন ৫ আগস্ট ঢাকায় মামলা।’’
তখন আদালত বলেন, ‘‘ঢাকায় মামলা হয়েছে ২৭ মার্চ। ঘটনা ৫ আগস্টের। নীলফামারীর তথ্য এখানে নেই।’’ তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘আচ্ছা, যাই হোক।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমার লার্নেড ফ্রেন্ড (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) সাংঘর্ষিক কথা বলেছেন। নীলফামারীতে ৪ আগস্ট এবং ঢাকায় ৫ আগস্টের ঘটনায় মামলা। মামলাগুলো ফেব্রিকেটেড। ৫ আগস্টের আগে পুরো সময় কোথায় ছিলাম সব ডকুমেন্ট দিতে পারব। এ সময় আমার টিউমারের অপারেশন হয়।’’
তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘গত চার বছর আমি মিডিয়াতে কিছু বলিনি, লিখিনি। বলা হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সাপোর্ট করেছি। ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সাপোর্ট করলাম। আবার তার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ৬ বছর ধরে চাকরি থেকে বঞ্চিত। বুঝলাম না আমি কোন পক্ষের লোক।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমি আইনের প্রতি আস্থাশীল। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না। তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছেন। আপনি ২০ দিন দিলেও দিয়ে দেন। কারণ আমি জানি, আমি কোনো অন্যায় করিনি। আমি ন্যায়বিচার পাব।’’
পরে আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেষ দিন ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে আবদুল জব্বার উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর বিএনএস সেন্টারের সামনে গুলিবিদ্ধ হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। গত ২৭ মার্চ উত্তরা পশ্চিম থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা মামলাটি দায়ের করেন। এজাহারনামীয় ৩০ নং আসামি তুরিন আফরোজ।
ঢাকা/মামুন/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৫ আগস ট আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপিকর্মী নিহতের ঘটনায় মানহানি মামলা
রংপুরের বদরগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপিকর্মী নিহতের ঘটনায় বহিষ্কৃত ৮ নেতার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। বুধবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল আমলী আদালতে (বদরগঞ্জ) মামলা দায়ের করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট শফি কামাল।
মামলার আসামি হলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার, বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির মানিক, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল হক মানিক, মধুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, বদরগঞ্জ পৌর যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সুমন সরদার, উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হক কয়েল, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া, কালুপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছামছুল হক। এছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয় ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, আসামিরা দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ করেছে। আসামিদের হামলায় লাবলু মিয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং ৬ এপ্রিল তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল নির্দেশ দিলে রংপুর জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দোকান ভাড়াকে কেন্দ্র করে গত শনিবার সকালে সাবেক বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলী সরকার, হুমায়ুন কবির মানিকের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সাবেক বিএনপি নেতা ও কালুপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিকের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে মোহাম্মদ আলী সরকারের অনুসারী বিএনপিকর্মী লাবলু মিয়া নিহত হন এবং সাংবাদিকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন।