চার বিসিএসের জট কাটিয়ে এক বছরে পরীক্ষা শেষ করার চিন্তা পিএসসির
Published: 8th, April 2025 GMT
একটি নয়, দুটি নয়, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ঘাড়ে এখন চারটি বিসিএস পরীক্ষার জট পড়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনো বিসিএসের কার্যক্রম চলছে সাড়ে তিন বছর ধরে। এগুলোর মধ্যে ৪৪তম, ৪৫তম এবং ৪৬তম বিসিএসের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। আর বর্তমান পিএসসি কর্তৃপক্ষের অধীনে ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যে বিদ্যমান চারটি বিসিএসের জট শেষ করে পরবর্তীতে একেকটি বিসিএস এক বছরের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা করছে বর্তমান পিএসসি। একই সঙ্গে বিসিএস পরীক্ষার পাঠ্যসূচিতেও পরিবর্তন করার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকারি চাকরির নিয়োগ সংক্রান্ত এই প্রতিষ্ঠানটি। এসব লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা সাজাচ্ছে বর্তমান পিএসসি।
পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা আজ মঙ্গলবার পিএসসি ভবনে কয়েকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কর্মপরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তবে এখনো এসব কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়নি বলেও তাঁরা জানিয়েছেন। পিএসসি নিয়ে পাঁচ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা আগামী কিছুদিনের মধ্যে সাংবাদিকদের জানানো হবে।
আরও পড়ুন৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল জুনে১ ঘণ্টা আগেঅবশ্য, নানাবিধ কারণে নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী এক বছরের মধ্যে বিসিএস শেষ করা যাবে কি না তা নিয়ে চ্যালেঞ্জও আছে। এর আগের পিএসসি কর্তৃপক্ষও এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। এরই মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সরকারের কাছে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তাতে দেড় বছরের মধ্যে বিসিএস পরীক্ষা শেষ করে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে বিসিএস পরীক্ষা শেষ করতে হবে এক বছরের মধ্যে। বাকি প্রায় ছয় মাসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ ও নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। এ জন্য প্রিলিমিনারি, লিখিত, মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা বছরের কোনো সময়ে হবে, তারও একটি বার্ষিক পঞ্জিকা বা ক্যালেন্ডার নির্ধারণ করে দিয়েছে কমিশন। এ ছাড়া বিসিএস পরীক্ষার পাঠ্যসূচিতেও বড় পরিবর্তন আনার সুপারিশ করেছে কমিশন।
বর্তমানে পিএসসির অধীন পরীক্ষার মাধ্যমে বিসিএসের ২৬টি ক্যাডারে নিয়োগ হয়। এ ছাড়া নন ক্যাডার পদে নিয়োগেরও সুপারিশ করে সংস্থাটি। অর্থাৎ সহজ করে বললে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে (বর্তমানে গ্রেড হিসেবে পরিচিত) নিয়োগের পরীক্ষা নেয় পিএসসি। তাদের সুপারিশে এসব পদে নিয়োগ হয়।
আরও পড়ুনখুলনা ওয়াসায় চাকরি, বেতন ছাড়াও আছে সার্বক্ষণিক গাড়ির সুবিধা১ ঘণ্টা আগেপরীক্ষার জট২০২১ সালের নভেম্বরে ৪৪তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল পিএসসি। এই বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৭১০ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে। এই পরীক্ষার লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছিল গত বছরের এপ্রিল মাসে। এতে পাস করেন ১১ হাজার ৭৩২ জন প্রার্থী। এরপর মৌখিক পরীক্ষাও শুরু হয়। কিন্তু গত বছর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বিগত কমিশনের নেওয়া মৌখিক পরীক্ষা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে মৌখিক পরীক্ষা নিচ্ছে পিএসসি। এখন এই পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষা চলছে।
পিএসসি চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম বলেছেন, তাঁরা প্রত্যাশা করছেন ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল আগামী ৩০ জুনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে। এটিকে সামনে রেখে নিরলসভাবে কাজ করা হচ্ছে।
২০২২ সালের নভেম্বরে ৪৫তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল পিএসসি। এরপর গত বছরের জুনে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১২ হাজার ৭৮৯ জন। লিখিত পরীক্ষা এ বছরের ২৩ জানুয়ারি শুরু হয়ে চলে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই বিসিএসে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ৩ লাখ ৪৬ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে অংশ নেন ২ লাখ ৬৮ হাজার ১১৯ জন। বর্তমান পিএসসি কর্তৃপক্ষ এই বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষকের মাধ্যমে মূল্যায়ন করছে।
পিএসসির চেয়ারম্যান বলেছেন, তাঁরা আশা করছেন ৩০ জুনের মধ্যে এই বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফলাফলও দিতে পারবেন। আর এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা শেষ করার আশা করছেন তাঁরা।
৪৬তম বিসিএসের ফলাফলও আবারও দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান পিএসসি। এই বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল করা হয়েছিল গত বছরের ৯ মে। এ পরীক্ষায় ১০ হাজার ৬৩৮ প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে আগে নির্বাচিত প্রার্থীদের সঙ্গে আরও সমানসংখ্যক প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্য বিবেচনা করে পুনরায় ফলাফল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী এই বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিমিনারি ফল প্রকাশ করা হয় গত বছরের ২৭ নভেম্বর। এতে আগের ১০ হাজার ৬৩৮ জন প্রার্থীর সঙ্গে নতুন করে লিখিত পরীক্ষার সুযোগ পান ১০ হাজার ৭৫৯ জন প্রার্থী।
পিএসসির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন ৪৬ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা আগামী ৮ মে শুরু হবে।
এদিকে, ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা ৮ মে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা পেছানোর দাবিতে পিএসসির সামনে আজ মঙ্গলবার একদল চাকরিপ্রার্থী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।
৪৭ তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় গত বছরের নভেম্বরে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এই বিসিএসে ক্যাডার পদে শূন্য পদের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৮৭। আর নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা ২০১। এই বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আগামী ২৭ জুন অনুষ্ঠিত হবে।
৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি বর্তমান পিএসসি কর্তৃপক্ষের অধীনে দেওয়া হয়েছে। এই বিসিএস কত দিনে শেষ হতে পারে। সে বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমার কাছে যদি শুধু ৪৭তম বিসিএসের কার্যক্রম থাকত, তাহলে আমি এটি এক বছরে নিতে পারতাম। এখন পরীক্ষাগুলো (চারটি বিসিএস) একসঙ্গে হয়েছে বলে এগুলো আমাদের মতো করে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, কোনো কাজটি কবে করা হবে সে বিষয়ে তাঁরা একটি অভ্যন্তরীণ সূচিও করেছেন। অবশ্য সেটি সুনির্দিষ্ট করে বলেননি তিনি। এভাবে আগামী বছর জট অনেকটাই কমে যাবে বলে আশা করছেন পিএসসি চেয়ারম্যান।
আরও পড়ুনফায়ার সার্ভিসে বড় নিয়োগ, পদ ১৬২৪ ঘণ্টা আগেতবে, কিছু চ্যালেঞ্জের কথাও তুলে ধরেছেন পিএসসি চেয়ারম্যান। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নিজস্ব প্রেস না থাকা (প্রশ্নপত্রসহ অন্যান্য ছাপার কাজের জন্য)। সে ক্ষেত্রে এমন প্রেস খুঁজতে হয় যেখানে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয়। এ ছাড়া পরীক্ষার কেন্দ্র পাওয়ার সমস্যার কথাও উল্লেখ করেন চেয়ারম্যান।
এদিকে, বিসিএস পরীক্ষার এই জটের কারণে চাকরিপ্রার্থী তরুণ-তরুণীদের জীবন থেকেও মূল্যায়ন সময় চলে যাচ্ছে। একেকজনেক একই সঙ্গে একাধিক বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। কখনো প্রিলিমিনারির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, আবার একই সঙ্গে লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। এসব নিয়ে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভও আছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা চাকরিপ্রার্থী ইমরান আলী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আবার আগামী ৮ মে থেকে শুরু হওয়া ৪৬ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আবার ২৭ জুন হতে যাওয়া ৪৭ তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁর ভাষ্য যদি ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা দ্রুত হতো তাহলে হয়তো একইসঙ্গে তিনটি বিসিএসের জন্য পড়তে হতো না। বিসিএসের জট থাকা উচিত নয়। এতে তাঁর মতো অনেককেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
বিসিএসের পাঠ্যসূচিতেও পরিবর্তনের পরিকল্পনাবর্তমানে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় কৃতকার্য প্রার্থীদের ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা দিতে হয়। নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী, ২৬টি ক্যাডার সাধারণ ক্যাডার ও কারিগরি বা পেশাগত ক্যাডার-এই দুই শ্রেণিতে বিভক্ত। সাধারণ ক্যাডারের প্রার্থীদের জন্য বাংলায় ২০০ নম্বরের, ইংরেজিতে ২০০, বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২০০, আন্তর্জাতিক বিষয়ে ১০০, গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতায় ১০০ এবং সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দেয়। আর কারিগরি বা পেশাগত ক্যাডারের প্রার্থীদের বাংলায় ১০০ নম্বরের, ইংরেজিতে ২০০, বাংলাদেশ বিষয়াবলি ২০০, আন্তর্জাতিক বিষয়ে ১০০, গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতায় ১০০ এবং পদসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা দিতে হয়।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ছয়টি আবশ্যিক বিষয় ও সেগুলোর নম্বর পুনর্বণ্টনের সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে বাংলায় ১০০, ইংরেজিতে ১০০, ইংরেজি কম্পোজিশন ১০০ নম্বরের, বাংলাদেশে সংবিধান, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে ১০০, আন্তর্জাতিক ও চলতি বিষয়ে ১০০ এবং সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সমাজ ও পরিবেশ এবং ভূগোল বিষয়ে ১০০ নম্বর করার সুপারিশ করেছে। এসব আবশ্যিক বিষয় ছাড়াও সিলেবাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠিত কলা, সামাজিক বিজ্ঞান, ভৌতবিজ্ঞান, বাণিজ্য, আইন ইত্যাদি গুচ্ছ থেকে ছয়টি ঐচ্ছিক বিষয় (প্রতিটি ১০০ নম্বরের) অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। তবে কোনো গুচ্ছ থেকে দুটির বেশি বিষয় নির্বাচন করা যাবে না। আর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার ন্যূনতম নম্বর ৬০ শতাংশ করার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। কোনো প্রার্থী পরপর তিনবার পরীক্ষায় ব্যর্থ হলে তিনি আর পরীক্ষা দিতে পারবেন না।
বিসিএস পরীক্ষার পাঠ্যসূচি পরিবর্তনের পরিকল্পনার কথা জানান পিএসসির সদস্য চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস। তিনি বলেন, এ জন্য একটি কমিটি কাজ শুরু করেছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। তবে গবেষণা ছাড়া কিছু এগোবেন না। সিভিল সার্ভিসের জন্য মূল দক্ষতার চাহিদার বিষয়ে গবেষণার কাজ শুরু হচ্ছে। এমন সিলেবাস তৈরি করা হচ্ছে, যেটির ভিত্তিতে প্রস্তুতি নিয়ে বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে পদ না পেলেও তার ভিত্তিতে বিশ্বের যেকোনো জায়গার জন্য দক্ষতা তৈরি হবে।
এটি সহজ বিষয় নয় মন্তব্য করে করে চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস বলেন, সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে পাঠ্যসূচিটি করা হবে।
এ বিষয়ে পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম বলেন, নতুন পাঠ্যসূচি চালু করার আগে অবশ্যই চাকরিপ্রার্থী ছাত্রছাত্রীদের যথেষ্ট সময় দেওয়া হবে সে অনুযায়ী প্রস্তুত হওয়ার জন্য।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ম খ ক পর ক ষ র স প র শ কর ছ চ কর প র র থ ব স এস র প র গত বছর র প রস ত ত ব স এস প র জন য প পর ক ষ য় জন য প র র পর ক ষ বছর র ম এক বছর হয় ছ ল শ ষ কর অন য য় কর র স ম বর র সরক র হওয় র করছ ন য় ১০০
এছাড়াও পড়ুন:
৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার দাবিতে ‘মার্চ টু যমুনা’
৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শেষ না করেই ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করায় আন্দোলনে নেমেছেন প্রার্থীরা। ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। সন্ধ্যায় তারা ‘মার্চ টু যমুনা’ শুরু করেন। প্রার্থীরা পদযাত্রা করেন প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার দিকে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে সালেহিন নামে একজন জানান, পিএসসির সঙ্গে আলোচনা করে কোনো সুরাহা হয়নি। কমিশন বলছে, ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন ছাপানো ও নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে তা পেছানো যাবে না।
গত রোববার কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ৪৬তম বিসিএসের আবশ্যিক বিষয়ের লিখিত পরীক্ষা আগামী ৮ থেকে ১৯ মে এবং পদসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর পরীক্ষা ৭ জুলাইয়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে। তবে যারা ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা ও ৪৬তম বিসিএসের লিখিত উভয় পরীক্ষার প্রার্থী, তাদের ২২ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। এই স্থগিত পরীক্ষাগুলোর পরিবর্তিত সময়সূচি পরে জানানো হবে।
৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা একাধিকবার স্থগিত হয়েছে। প্রথম দফা মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ২০২৪ সালের ৮ মে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে তা দু’বার স্থগিত হয়। এই বিসিএসে প্রায় ১১ হাজার ৭৩২ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত অংশ নিয়েছেন ৩ হাজার ৯৩০ জন। কমিশন জানিয়েছে, চূড়ান্ত ফল জুন মাসে প্রকাশ করা হবে।
৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারিতে অংশ নিয়েছিলেন ২ লাখ ৫৪ হাজার ৫৬১ জন। প্রথম ধাপে ১০ হাজার ৬৩৮ জন এবং পরে আরও ১০ হাজার ৭৫৯ জনকে উত্তীর্ণ করে মোট ২১ হাজার ৩৯৭ জনকে লিখিত পরীক্ষার জন্য মনোনীত করা হয়। প্রার্থীদের একটি অংশ বর্তমানে লিখিত পরীক্ষার তারিখ পেছানোর দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।