বৈশ্বিক তাপমাত্রা গত মার্চে আগের যেকোনো সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাছাকাছি ছিল। ইউরোপের জলবায়ু পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আজ মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে। ওই মাসে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কার চেয়ে বেশি সময় ধরে বিশ্বজুড়ে প্রচণ্ড তাপমাত্রা ছিল।

কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস জানিয়েছে, মার্চ ছিল ইউরোপে এযাবৎকালের সবচেয়ে উষ্ণতম মাস। ওই সময় বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ইউরোপজুড়ে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। আবার তাপমাত্রাও খুব দ্রুত উত্তপ্ত হতে দেখা গেছে।

কোপার্নিকাসের তথ্যমতে, ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উষ্ণতম মাস ছিল মার্চ। ২০২৩ সালের পর থেকে তাপমাত্রা প্রায় ধারাবাহিকভাবে একের পর এক রেকর্ড ভাঙছে। তখন থেকে কার্যত প্রতি মাসে শিল্পবিপ্লবের আগের তুলনায় কমপক্ষে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (২ দশমিক ৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রা বেড়েছে।

শিল্পবিপ্লবের পরে মানবজাতি প্রচুর পরিমাণে কয়লা, তেল ও গ্যাস পোড়ানো শুরু করে। এ বিষয়টি বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে।

মার্চের তাপমাত্রা প্রাক্‌–শিল্প যুগের চেয়ে ১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস (২ দশমিক ৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বেশি ছিল। ওই মাসে লম্বা সময় ধরে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় থাকার কারণ এখনো খুঁজে পাননি বিজ্ঞানীরা।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শুধু তাপমাত্রাই বাড়ে না; বরং কার্বন ডাই–অক্সাইড ও মিথেনের মতো গ্রিনহাউস গ্যাসের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডল ও সমুদ্রে অতিরিক্ত তাপ আটকা পড়ে।

আর উষ্ণ সমুদ্রের অর্থ হলো বাষ্পীভবন বৃদ্ধি ও বায়ুমণ্ডলে আর্দ্রতা বৃদ্ধি। এর ফলে ব্যাপক বন্যা হয়। ঝড় ও ঘূর্ণিঝড় আরও শক্তি সঞ্চয় করতে সক্ষম হয়। তবে এটি বিশ্বব্যাপী বৃষ্টির ধরনকেও প্রভাবিত করে।

কোপার্নিকাস জানিয়েছে, ইউরোপে মার্চের তাপমাত্রা ২০১৪ সালের রেকর্ড তাপমাত্রার চেয়ে দশমিক ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস (দশমিক ৪৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বেশি ছিল।

কোপার্নিকাস জলবায়ু পর্যবেক্ষণকারী ইউরোপীয় সেন্টার ফর মিডিয়াম–রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্টের সামান্থা বার্গেস বলেন, মার্চে ইউরোপের কিছু অংশে প্রায় অর্ধশতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে শুষ্ক আবহাওয়া রেকর্ড করা হয়েছে। আবার অন্য অংশে সবচেয়ে আর্দ্র আবহাওয়া রেকর্ড করা হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমান সময় সম্ভবত গত ১ লাখ ২৫ হাজার বছরের মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণ সময়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র কর ড ইউর প দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গল গ্রহকে বসবাসের উপযোগী করতে অভিনব প্রস্তাব

লাল গ্রহ মঙ্গল নিয়ে মানুষের মাতামাতি থেমে নেই। মঙ্গল গ্রহের মাটিতে পারক্লোরেট রয়েছে, যা সাধারণভাবে মানুষ বা অন্য সব প্রাণের জন্য ক্ষতিকর। কীভাবে মানুষ মঙ্গল গ্রহকে প্রাণ ধারণের উপযোগী করা যায়, তা নিয়ে নানা পরীক্ষা করছেন বিজ্ঞানীরা। মঙ্গল গ্রহকে বসবাসের উপযোগী করার নানা উপায় নিয়ে অসংখ্য তত্ত্ব রয়েছে। অনেক বিজ্ঞানী অ্যান্টার্কটিক মরুভূমির মস বা লাইকেনের মতো উদ্ভিদ ব্যবহারের প্রস্তাব করেছেন। এসব উদ্ভিদ মঙ্গলের কঠিন পরিস্থিতি সহ্য করতে পারে বলে ধারণা করা হয়।

আরও পড়ুনমঙ্গল গ্রহে থাকা অদ্ভুত কাঠামো কি প্রাচীন সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ০৮ এপ্রিল ২০২৫

সম্প্রতি পোলিশ একাডেমি অব সায়েন্সেসের বিজ্ঞানী লেজেক চেকভস্কি মঙ্গল গ্রহকে প্রাণের উপযোগী করতে অভিনব এক প্রস্তাব দিয়েছেন। মঙ্গল গ্রহকে বসবাসের উপযোগী করতে বিভিন্ন গ্রহাণু দিয়ে আঘাত করার কথা বলেছেন তিনি। তাঁর মতে, মঙ্গল গ্রহের মাটি পারক্লোরেট পূর্ণ বলে প্রাণের জন্য ক্ষতিকর। গ্রহের নিম্ন বায়ুমণ্ডলীয় চাপ মানুষের শরীরের জলীয় অংশকে দ্রুত শুকিয়ে ফেলবে। তাই মঙ্গল গ্রহে গ্রহাণু বিধ্বস্ত করার মাধ্যমে প্রাণের উপযোগী করে তোলার একটি পরিকল্পনা করেছেন তিনি।

লেজেক চেকভস্কির তথ্যমতে, মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল কার্বন ডাই-অক্সাইড দিয়ে গঠিত বলে স্বাভাবিক জীবনধারণের জন্য উপযুক্ত নয়। তবে হিমায়িত কোনো গ্রহাণুর আঘাতে গ্রহটির পরিবেশ বদলে যেতে পারে। গ্রহাণুর আঘাতে বায়ুমণ্ডল তৈরি হলে সেখানে সহায়ক গ্যাস নির্গত হতে পারে।

সূত্র: এনডিটিভি

আরও পড়ুনমঙ্গল গ্রহে স্পেসএক্সের রকেট পাঠানোর সম্ভাব্য সময় জানালেন ইলন মাস্ক১০ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ