খুলনা ওয়াসায় চাকরি, বেতন ছাড়াও আছে সার্বক্ষণিক গাড়ির সুবিধা
Published: 8th, April 2025 GMT
খুলনা পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (খুলনা ওয়াসা) জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে চুক্তি ভিত্তিতে একজন কর্মকর্তা নিয়োগে দেবে। আগ্রহী প্রার্থীদের রেজিস্টার্ড ডাকযোগে আবেদনপত্র পাঠাতে হবে।
পদের নাম: ব্যবস্থাপনা পরিচালকপদসংখ্যা: ১
যোগ্যতা: ন্যূনতম স্নাতকোত্তর বা বিএসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং) বা সমমানের ডিগ্রি। সরকারি/আধা সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে কর্মরত আছেন বা ছিলেন, এমন প্রার্থীদের ক্ষেত্রে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫–এর ন্যূনপক্ষে তৃতীয় গ্রেড স্কেল বা সমপর্যায়ের স্কেলধারী হতে হবে। অবশ্যই পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন সেক্টর অথবা সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় সিনিয়র পর্যায়ে অন্তত ২০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। মাঝারি থেকে বৃহৎ সংস্থার ব্যবস্থাপনা অথবা পাবলিক ইউটিলিটি–সংক্রান্ত সংস্থা পরিচালনার অভিজ্ঞতা এবং নীতি প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত উচ্চ পদের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শী হতে হবে।
বয়স: অনূর্ধ্ব ৬০ বছর হতে হবে। তবে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় বিশেষ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীর ক্ষেত্রে বয়স শিথিলযোগ্য।
চাকরির ধরন: তিন বছরের চুক্তিভিত্তিক
বেতন-ভাতা: আলোচনা সাপেক্ষে
সুযোগ-সুবিধা: প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য চালক, জ্বালানিসহ একটি গাড়ি, আবাসিক টেলিফোন, মুঠোফোন ও তার বিল খুলনা ওয়াসা প্রদান করবে।
আবেদন যেভাবেআগ্রহী প্রার্থীদের বিস্তারিত বিবরণসংবলিত নিজের জীবনবৃত্তান্তসহ আহ্বায়ক, কর্মসম্পাদন সহায়তা কমিটি, খুলনা ওয়াসা বরাবর আবেদনপত্র রেজিস্টার্ড ডাকযোগে পাঠাতে হবে।
আবেদনপত্র পাঠানোর ঠিকানা: সদস্যসচিব, কর্মসম্পাদন সহায়তা কমিটি, খুলনা ওয়াসা, খুলনা ওয়াসা ভবন, কক্ষ নম্বর–৩০২, জোড়াগেট, খালিশপুর, খুলনা।
আবেদনপত্র পাঠানোর শেষ সময়: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুনঢাকা ওয়াসায় চাকরি, বেতন ছাড়াও আছে সার্বক্ষণিক গাড়ির সুবিধা২২ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পানি নেই ঝিরি-ঝরনায় সংকটে দুর্গম গ্রামবাসী
রাঙামাটি জেলার জুরাছড়ির দুর্গম পাহাড়ি গ্রামে তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। সুপেয় পানি থেকে নিত্য ব্যবহার্য পানিও মিলছে না। গ্রীষ্মের তাপদাহে শুকিয়ে গেছে পাহাড়ি ছড়া ও ঝরনা। লোকজনের একমাত্র ভরসা ছিল কুয়ার পানি। সেখানেও স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এখন ঝিরি থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি সংগ্রহের চেষ্টা করছেন পাহাড়ি মানুষ।
সরেজমিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার জুরাছড়ি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কুকিছড়া, ত্রিপুরাপাড়া, জনতাপাড়া, বারুদগলা, সোহেল পাড়ায় সবচেয়ে বেশি পানি সংকট চলছে। এসব গ্রামে ২৪৭ পরিবারের বাস। তাদের পেশা কৃষি (জুম চাষ)। এসব পাড়ায় নেই বিদ্যুৎ। চিকিৎসা সেবার জন্য নেই কমিউনিটি ক্লিনিক। এই ওয়ার্ডে নেই নিরাপদ পানির কোনো নলকূপ।
এসব গ্রামের পাদদেশের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে পানছড়ি ছড়া। এই ছড়ার রয়েছে ছোট প্রশাখা ছড়া। কিন্তু বর্তমানে গ্রামের ছড়াগুলো শুকিয়ে মরা ছড়ায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, পাড়াগুলো পাহাড়ের চূড়ায় হওয়ায় প্রায় ৫০০-৮০০ ফুট নিচে নামলে ছোট ঝিরি বা ঝরনার দেখা মেলে। ঝিরিগুলো থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি সংগ্রহের চেষ্টা করছেন পাহাড়ি মানুষ।
স্থানীয়রা বলছেন, আগের মতো বড় বড় গাছ না থাকায় শুষ্ক মৌসুমে ছোট ছোট ঝিরি-ঝরনাগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। ওয়ার্ড সদস্য অরুণ চাকমা বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে পাহাড়ে মানুষের জীবনযাপন অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে পানি সংকট পাহাড়ের জীবনকে আরও খারাপ করেছে।’
কুকিছড়া, সোহেল পাড়া কার্বারি কিরণ জয় চাকমা বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুম এলেই আমাদের এলাকায় খাবারের চেয়ে বিশুদ্ধ পানির সংকট চরম অবস্থায় পৌঁছায়। পাড়ার নারীরা প্রতিদিন পাড়া থেকে কয়েকশ ফুট নিচে নেমে খাবার পানি, গৃহস্থালি কাজের ও রান্নার পানি সংগ্রহ করছেন।’
স্থানীয় মলকা বানু চাকমা, রঞ্জিতা চাকমা বলেন, ‘গ্রীষ্মকাল এলে আমাদের গোসলের কথা ভুলে যেতে হয়। দুই-তিন দিন পরও গোসল করতে পারি না। সপ্তাহে একবার গোসল করতে পারলেও এক-দুই লিটার পানি দিয়েই সারতে হয়।’
শুধু জুরাছড়ি ইউনিয়ন নয়, নিরাপদ পানির সংকট চলছে বনযোগীছড়া ইউনিয়নের বালিশ পাড়া, ছোট পানছড়ি, এরাইছড়ি। মৈদং ইউনিয়নের আমতলা বাদলহাটছড়া, জামুরাছড়ি, কাঁঠাল তুলি। দুমদুম্যা ইউনিয়নে করল্যাছড়ি, দুলুছড়ি, শিমাইতুলি ও তেছড়িতেও।
উন্নয়নকর্মী পলাশ খীসা বলেন, ‘গ্রামগুলোয় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নিরাপদ পানির সংকট তৈরি হয়েছে। পানি সংকট কৃষি খাদ্যের ওপরও ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করছে। তীব্র গরম ও পানির সংকটে গবাদি পশুর মৃত্যুও বাড়ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঝিরি ও ছড়াগুলো রক্ষায় সরকারের সহযোগিতার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এসব ছড়া-ঝিরির চারপাশে সবুজ বনায়নে উদ্যোগ নিতে হবে। তাতে পানির উৎস বাড়বে।’
জুরাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমন চাকমা বলেন, ‘৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিবছরই গ্রীষ্মকালে পানির সংকট দেখা দেয়। মানুষ অনিরাপদ পানি ব্যবহার করায় দেখা দেয় পানিবাহিত রোগের প্রকোপ। চাহিদার তুলনায় মাত্রাতিরিক্ত গাছগাছালি কাটছেন মানুষ। বাণিজ্যিকভাবে সেগুন চাষ পানি সংকট বাড়াচ্ছে। কারণে সেগুন গাছের কারণে পাহাড় শুকিয়ে যায়।’
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগসহ বিভিন্ন উন্নয়ন
দপ্তর গ্রেভিটি ফ্লো সিস্টেম (জিএফএস), সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে পাত কুয়া থেকে পানি সরবরাহে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিলেও তাতে চলছে দীর্ঘসূত্রতা। পানি সংকট নিরসনে সরকারি–বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর এগিয়ে জরুরি।
উপজেলা উপসহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী রকি দে পানি সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘দুর্গমতার কারণে এসব এলাকায় পরিবহনে পানি সরবরাহে অতিরিক্ত খরচ হয়। আমরা দুর্গম এসব এলাকার পানি সংকট নিরসনে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিং ওয়েল ও গ্রেভিটি ফ্লো সিস্টেম (জিএফএস) প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব দিয়েছি।’