চলতি অর্থবছরের আট মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জে রেমিট্যান্স এসেছে ৯২ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ১২৪ কোটি ৫২ লাখ ৫৯ হাজার ৭২৮ টাকা। এ সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে গত আগস্ট মাসে—১৪ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। চলতি অর্থবছরে জনশক্তি রপ্তানিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ নবম স্থানে আছে বলে জানিয়েছে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস।

সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রবাসে যাওয়ার প্রবণতা শুরু হয় আশির দশকে। নব্বইয়ের দশকে বিদেশগামীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ভর করে এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি উৎপাদন, শিক্ষা ও চিকিৎসা সব ক্ষেত্রেই পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। জেলার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন প্রবাসীরা।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তের পর অনেকে জেলে গেছেন বা এলাকা ছেড়েছেন। ফলে, হুন্ডি মার্কেট এখন আগের মতো নেই। হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা কমেছে। তাই, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসছে বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার, আগস্ট মাসে ১৪ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বরে ১৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার, অক্টোবরে ১১ মিলিয়ন ডলার, নভেম্বরে ৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, ডিসেম্বরে ১৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার ও ফেব্রুয়ারি মাসে ১১ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। চলতি অর্থবছরের ৮ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৯ কোটি ২০ লাখ ডলার। 

আরো জানা গেছে, গত চার অর্থবছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে—১১৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১০২ মিলিয়ন ডলার, ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৯১ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার প্রবাসী আয় এসেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে।

জেলা কর্মস্থান ও জনশক্তি অফিসের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রায় ৩২ হাজার ৫০০ জন বিদেশে গেছেন। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মো.

আখলাক-উজ-জামান জানিয়েছেন, এ জেলা থেকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৮৩৭ জন ও ফেব্রুয়ারিতে ৪৪০ জনকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। 

তিনি বলেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন ও অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণ ও নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করাই আমাদের কাজ। বিশ্ববাজারের চাহিদার ভিত্তিতে যথাযথ কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং সুষ্ঠু ও সুসংহত অভিবাসন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কর্মপ্রত্যাশীদের নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

ঢাকা/শিয়াম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ম ট য ন স এস ছ প ইনব বগঞ জ জনশক ত প রব স বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা কমানো নিয়ে দরকষাকষি

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচির শর্ত অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের শেষ তিন মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দুই লাখ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আহরণ করতে হবে। একই সঙ্গে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সংস্থাটির অতিরিক্ত আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৫৭ হাজার কোটি টাকা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ দুই লক্ষ্যমাত্রার কোনোটিই অর্জন সম্ভব নয়। তাই এ বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা কমানোর অনুরোধ জানিয়েছেন এনবিআরের কর্মকর্তারা। 

গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে সংস্থাটির চেয়ারম্যানসহ কাস্টমস, আয়কর ও ভ্যাট অনুবিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এসব বৈঠকে কর্মকর্তারা জানান, আইএমএফের শর্তের কথা মাথায় রেখে কিছু ক্ষেত্রে করহার বাড়ানো, কর অব্যাহতি তুলে দেওয়াসহ নীতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসা হচ্ছে। এতে আশা করা হচ্ছে, রাজস্ব আহরণ বেশ বাড়বে। তবে যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে তা সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাস্তবসম্মত নয়। তাই এ লক্ষ্যমাত্রা যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার অনুরোধ করেন তারা। এ বিষয়ে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বেশ ইতিবাচক বলেও বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। 

বৈঠকের বিষয়ে এনবিআরের কর্মকর্তারা সমকালকে বলেন, গত জুন শেষে দেশের কর-জিডিপি অনুপাত ছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এটি চলতি অর্থবছর শেষে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত করার শর্ত দিয়েছিল আইএমএফ। এর জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। তবে চলতি অর্থবছরের মার্চ মাস পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছরের পরবর্তী তিন মাসে লক্ষ্যমাত্রার বাকি রাজস্ব আদায় করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তারা আরও বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাড়তি ৫৭ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে হবে। এসব বাড়তি রাজস্ব কীভাবে আদায় হবে তা জানতে চেয়েছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল। এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি অসম্ভব। তাই লক্ষ্যমাত্রা কমানোর অনুরোধ করা হয়েছে।

কর্মকর্তারা আরও বলেন, দেশের রাজস্ব খাত সংস্কারে উদ্যোগী মনোভাবের কথাও তাদের জানানো হয়েছে। আইএমএফ প্রতিনিধি দল বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছে। সামনে আরও বৈঠক হবে। আশা করা হচ্ছে, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আনবে আইএমএফ।

আইএমএফের ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে বাংলাদেশ কতটা শর্ত পূরণ করেছে, তা পর্যালোচনায় ঢাকা সফর করছে প্রতিনিধি দলটি। এ দুই কিস্তির জন্য গত ডিসেম্বর পর্যন্ত কর রাজস্বের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তার চেয়ে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। আইএমএফ গবেষণা বিভাগের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রোইকোনমিকসের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিওর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি গত রোববার থেকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। মিশনটি আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নতুন আশার আলো
  • আমদানি-রপ্তানি কমলেও রাজস্ব বেড়েছে ৩৬৬ কোটি টাকা
  • পহেলা বৈশাখে হতে পারে বৃষ্টি, কমবে তাপমাত্রা
  • দেশের ৭২% পরিবারে এখন স্মার্টফোন
  • বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশ পিছিয়ে কেন
  • গ্যাস–সংকটে সিইউএফএলে সার উৎপাদন বন্ধ
  • বাংলাদেশে যে মৌলবাদী প্রবণতা দেখছি, তা উদ্বেগের: জয়শঙ্কর
  • সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি পেল ১৩৩ প্রতিষ্ঠান, মানতে হবে ৯ শর্ত
  • প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়াবে ৩.৯% থাকবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি
  • রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা কমানো নিয়ে দরকষাকষি