সিঙ্গাপুর থেকে ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল আনবে সরকার
Published: 8th, April 2025 GMT
দেশের খাদ্য চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখতে সিঙ্গাপুর থেকে ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ৫০ টাকা ৮১ পয়সা। আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এই চাল ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ২৫৪ কোটি ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড.
বৈঠক সূত্র জানা গেছে, চাল আমদানির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে খাদ্য অধিদপ্তর থেকে চাল ক্রয়ের জন্য গত ১২ মার্চ আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে মোট ১২ সরবরাহকারী দরপত্র দলিল সংগ্রহ করলেও পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেয়।
এর মধ্যে সিঙ্গাপুরভিত্তিক মেসার্স অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি টন চালের দাম ৪১৬ দশমিক ৪৪ ডলার উল্লেখ করায় দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির নাম সুপারিশ করে, যা উৎস দেশগুলোর গড় দর (৪৪৪ দশমিক ৯১ ডলার) অপেক্ষা ২৮ দশমিক ৪৭ ডলার কম।
এছাড়া মেসার্স অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের দেওয়া দর বাংলাদেশের বন্দর পর্যন্ত প্রতি টন ৪১৬ দশমিক ৪৪ ডলার, যা বাজার দর যাচাই কমিটির প্রাক্কলিত দরের চেয়ে কম। এ কারণে এই দর গ্রহণের জন্য দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সুপারিশ করে।
এর প্রেক্ষিতে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হয়। কমিটির সদস্যরা প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।
প্রতি টন ৪১৬ দশমিক ৪৪ ডলার হিসেবে ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয়ের জন্য প্রয়োজন হবে ২ কোটি ৮ লাখ ২২ হাজার ডলার। অর্থাৎ গত ২৭ মার্চ তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ডলারের বিনিময় হার প্রতি ডলার ১২২ টাকা (সম্ভাব্য) হিসেবে ২৫৪ কোটি ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকার প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে প্রতি কেজির দাম পড়বে ৫০ টাকা ৮১ পয়সা।
সূত্রটি জানিয়েছে, মেসার্স অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের জন্য ৬০:৪০ অনুপাতে কস্ট ইনস্যুরেন্স ফ্রেইট-লাইনার আউট (সিআইএফ-এলও) টার্মে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সিডি ভ্যাট ব্যতীত) প্রতি টন ৪১৬ দশমিক ৪৪ ডলার হিসেবে ২ কোটি ৮ লাখ ২২ হাজার ডলারে এই ৫০ হাজার টন (৫ শতাংশ) নন বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে আন্তর্জাতিক উৎস হতে ৯ লাখ টন চাল আমদানির জন্য ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’র অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৪ লাখ ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল এবং জি টু জি পদ্ধতিতে মায়ানমার থেকে ১ লাখ টন, পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন ও ভিয়েতনাম থেকে ১ লাখ টন আতপ চালসহ মোট ৭ লাখ টন চাল ক্রয়ের চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।
এছাড়া আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন চাল আমদানির লক্ষ্যে চুক্তির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। চুক্তির বিপরীতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৬ টন এবং জি টু জি ভিত্তিতে ২ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ টন চাল চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ২ লাখ ৪৩ হাজার ১৭৫ টন এবং জি টু জি ভিত্তিতে ২ লাখ ৭ হাজার ৫৩৯ টন চাল সরকারি সংরক্ষণাগারে পাওয়া গেছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এবং জি টু জি পদ্ধতিতে আরও চাল আমদানির কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ ল আমদ ন চ ল আমদ ন র ৫০ হ জ র টন উপদ ষ ট কম ট র র জন য টন চ ল ল খ টন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রোগা গরু সরবরাহ, তোপের মুখে বিতরণ স্থগিত
দরপত্র অনুযায়ী উপযুক্ত গরু সরবরাহ না করায় জনগণের তোপের মুখে বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল আয়োজিত আদিবাসীদের মধ্যে গরু বিতরণ অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
সমতল ভূমিতে বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের লক্ষ্যে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৭০ জন সুফলভোগীর জন্য ৭০টি গরু বরাদ্দ করা হয়। গরু সরবরাহের দায়িত্ব পায় জেনটেক ইন্টারন্যাশনাল। দরপত্র অনুযায়ী উপকারভোগীদের মধ্যে ১০০ কেজি ওজনের হেলান, সুস্থ ও ন্যূনতম দেড় বছর বয়সি গরু সরবরাহ করার কথা। সেখানে ৬৫ থেকে ৭০ কেজি ওজনের গরু সরবরাহ করা হয়েছে।
গতকাল প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় হাসপাতাল চত্বরে গরু বিতরণের উদ্দেশ্যে শামিয়ানা টানানো হয়। সরবরাহ করা গরুর আকৃতি দেখে সুফলভোগীদের সন্দেহ হয়। তারা দরপত্র অনুযায়ী গরু সরবরাহ করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন করেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন শুরু হলে জনসমক্ষে গরুগুলো স্কেলে ওজন করা হয়। তাতে করে গড়ে প্রতিটি গরুর ওজন ৬৫-৭০ কেজি পর্যন্ত পাওয়া যায়। পড়ে তোপের মুখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসাহাক আলী বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন।
সুফলভোগীদের অভিযোগ, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সারোয়ার হোসেনের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দরপত্র দেখে ঠিকাদারের কাছ থেকে গরু বুঝে নেননি।
ঠিকাদারের প্রতিনিধি ওমর ফারুক বলেন, ‘কোম্পানি এসব গরু কিনেছে। আমরা সেগুলো প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে দিতে এসেছি। এর বেশি কিছু জানি না।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রহিম বলেন, ঠিকাদারের সরবরাহ করা গরু যাচাই করা হয়েছে। দরপত্র অনুযায়ী গরু সরবরাহ না করায় বিরতণ সম্ভব হয়নি। ঠিকাদারের কাছ থেকে বুঝে নেওয়ার সময় কেন যাচাই করা হয়নি জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, এক দিন আগে গরু আনলে খাবারের ব্যবস্থা করতে হয়। সে আয়োজন না থাকায় আগে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।