ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই শীর্ষ কূটনীতিক
Published: 8th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিক এবং পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হেরাপ ঢাকায় আসছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের এই দুই কর্মকর্তা আগামী ১৫ ও ১৬ এপ্রিল ঢাকায় পৌঁছাবেন।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা সফরকালে তারা বাংলাদেশ সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া ও রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন। এ সফরে তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসনের।
আগামী ১৫ থেকে ১৮ এপ্রিল ঢাকা সফর করবেন মার্কিন কূটনীতিক নিকোল চুলিক। সফরকালে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক পথে ফেরত আনার বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি।
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বৈঠক করবেন নিকোল চুলিক। প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠক করার কথা রয়েছে তার।
ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এটিই হতে যাচ্ছে দেশটির উচ্চপর্যায়ের কোনো প্রতিনিধিদলের প্রথম বাংলাদেশ সফর।
নিকোল চুলিকের ঢাকায় আসার এক দিন পর আগামী ১৬ এপ্রিল ঢাকায় পৌঁছাবেন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হেরাপ। তিনি মূলত রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন।
ঢাকা/হাসান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট র করব ন
এছাড়াও পড়ুন:
প্রত্যাবাসনের শুরুতে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেওয়ার আলোচনা মিথ্যা নয়: খলিলুর রহমান
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকার বিষয়াবলি–সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাবাসনের শুরুতে ১ লাখ ৮০ হাজার জনকে ফিরিয়ে নেওয়ার আলোচনা ‘মিথ্যা নয়’, বরং এর সংখ্যা বেশিও হতে পারে।
আজ রোববার রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘রিসেশনিং সিনো-বাংলা রিলেশনশিপ: চিফ অ্যাডভাইজারস ল্যান্ডমার্ক ভিজিট’ শীর্ষক এক সেমিনারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খলিলুর রহমান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘শুরুতে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ফিরিয়ে নেওয়ার যে আলোচনা, তা সঠিক। এখানে যৌথ কোনো বিবৃতি নেই, তবে তাদের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং আমি পাশাপাশি ছিলাম, তারা এতে সম্মত। সামাজিক মাধ্যমে বলা হচ্ছে, ১ লাখ ৮০ হাজার, এটা মিথ্যা; এটা মিথ্যা নয়, এটা আরও বেশি।’
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরকে ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ণ উল্লেখ করে খলিলুর রহমান বলেন, এই সফর দুই কারণে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ৫০ বছর এবং দ্বিতীয়ত, প্রধান উপদেষ্টার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। আমরা এ সফরের জন্য অনেক সময় কাজ করেছি এবং সেখানে আমাদের সহায়তা করেছেন রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, তিনি ঢাকা ও বেইজিংয়ে অসংখ্য ঘণ্টা কাজ করেছেন।
খলিলুর রহমান জানান, গেল ডিসেম্বরে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন কুনমিংয়ে থেকে বাংলাদেশে চিকিৎসা গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং তিন মাসের ভেতর এটি সম্ভব হয়েছে।
জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর নিয়ে অনেক কথা বলা হয়েছে, না বলা অনেক কথাও আছে।
চীন ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, ‘চীন ও ভারতের সাথে সম্পর্ককে আমরা কখনোই জিরো-সাম গেমের সম্পর্ক হিসেবে দেখি না; বরং উভয়ের সাথে গুরুত্বের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখাই আমাদের লক্ষ্য।’
সফরকালে চীনের বিভিন্ন শীর্ষ কোম্পানির সিইওদের সঙ্গে আলাপের প্রসঙ্গ তুলে খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের জনগোষ্ঠীর অর্ধেক তরুণ, তাদের জন্য অনেক বেশি কর্মসংস্থান দরকার। আমরা এসব বিষয়ে সিইওদের সঙ্গে কথা বলেছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, তারা এতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এসব কোম্পানির বার্ষিক “টার্ন-ওভার” কোনো কোনো দেশের জিডিপির চেয়েও বেশি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এ সফর নিয়ে অনেক বেশি আলোচনা তুলতে চাই না, আমাদের কাজ কথা বলবে। আমরা আশা করছি, দুই শতাধিক কোম্পানি, রাষ্ট্রদূত বলছেন এটা আরও বেশি হবে। রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টার সফরকে “মাইলস্টোন” বলেছেন, আমি এটাকে “ব্রেক থ্রু” বলব।’
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করে খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমরা এই সম্পর্ককে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আশা করছি, আমাদের পরবর্তী সরকারও তা অব্যাহত রাখবে।’
প্রধান উপদেষ্টার এই সফর বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভিত্তিকে আরও দৃঢ় করেছে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, ‘এটি শুধু সরকার নয়, জনগণের সম্পর্ককেও প্রতিফলিত করে।’
সাংহাই ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. লিউ জংই বলেন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক কেবল অর্থনৈতিক নয়, সাংস্কৃতিক ও কৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের প্রেক্ষাপটে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে চীন দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারত্বে আগ্রহী। এ সময় তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং শ্রমবাজারে সহযোগিতা বৃদ্ধির ঘোষণা দেন।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল হান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির পলিটিক্যাল সায়েন্স ও সোসিওলজি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে একটি কৌশলগত পুনর্গঠন পরিলক্ষিত হচ্ছে, যেখানে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক একটি নতুন মাত্রা লাভ করছে।