গোপনে বাল্যবিবাহের আয়োজন, তবে কাজী আসার আগেই হাজির প্রশাসনের কর্মকর্তারা
Published: 8th, April 2025 GMT
মেয়েটির বয়স ১৬ বছর। প্রকাশ্যে বিয়ে দিতে গেলে অনেক ঝক্কি–ঝামেলা পোহাতে হবে। তাই অনেকটা গোপনেই তার বিয়ের আয়োজন করে পরিবার। মেয়েটির বাড়িতে হাজির হন বরযাত্রীরা। শুধু কাজি আসার অপেক্ষা। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হওয়ার কথা ছিল বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। তবে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে ওই বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে।
নেত্রকোনা সদর উপজেলার কালিয়ারা গাবরাগাতি ইউনিয়নের একটি গ্রামে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে সেখানে হাজির হন স্থানীয় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসিব উল আহসান। তিনি পরিবারের লোকজনকে বুঝিয়ে বিয়েটি বন্ধ করে দেন। পাশাপাশি ওই কিশোরীর বাবাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা কার্যালয় ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরীর সঙ্গে একই ইউনিয়নের পুবকান্দা গ্রামের এক যুবকের বিয়ের সম্বন্ধ হয়। গতকাল সন্ধ্যায় বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। অনেকটা গোপনেই বিয়ের আয়োজন করছিল মেয়েটির পরিবার। স্থানীয় এক যুবক জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাসকে বাল্যবিবাহের বিষয়টি জানিয়ে দেন। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসিব উল আহসান মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের লোকজন ও পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাল্যবিবাহটি বন্ধ করেন। এ সময় মেয়ের বাবাকে দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
এ ছাড়া উভয় পরিবারের সদস্যদের বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে জানানো হয়। পরে পরিবারের অভিভাবকদের মেয়েটির প্রাপ্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ না দেওয়ার জন্য মুচলেকা নেওয়া হয়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসিব উল আহসান বলেন, ‘বাল্যবিবাহের তথ্য পেয়ে ওই এলাকায় গিয়ে দেখি, শুধু বিয়ে পড়ানোর আনুষ্ঠানিকতা বাকি। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কনের বাবাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়ে। মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দেওয়ার বিষয়ে মুচলেকা আদায় করা হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে পদোন্নতি বঞ্চিত ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের মানবন্ধন
প্রায় তিন যুগ পদোন্নতি বঞ্চিত বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডরা মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রামের নন্দনকাননস্থ ফরেস্ট হিলে সমবেত হয়ে পদোন্নতি বঞ্চনা ও বৈষম্য নিরসনের দাবি জানান তারা।
ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড পদোন্নতি বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচিতে বক্তারা জানান, বন বিভাগে ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডরা মাঠ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। যুগ যুগ ধরে তারা এই দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের জীবন বাজি রেখে বনভূমি ও বন্যপ্রাণী রক্ষার দায়িত্ব পালনসহ নতুন বনায়ন সৃষ্টি এবং রাজস্ব আদায় করার কাজটি করে থাকেন তারা। দুর্গম এলাকায় অবস্থানসহ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে দায়িত্ব পালন করতে হয় তাদের। এরপরও কর্তৃপক্ষ ফেরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত করে আসছেন। ২০ থেকে ৩৫ বছর পদোন্নতি না দিয়ে একই পদে দাবিয়ে রাখছেন কর্তৃপক্ষ।
ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড পদোন্নতি বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ও বৈঠক করার পরেও আমরা পদোন্নতি বঞ্চিত। এ কারণে চলতি বছরের গত ৬ মার্চ কর্তৃপক্ষকে এক মাসের মধ্যে আমাদের সমস্যা নিরসনের জন্য অনুরোধ জানাই। অন্যথায় আমরা ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কঠোর আন্দোলনে যাব বলে ঘোষণা দেই। তবে, কর্তৃপক্ষ দাবি বাস্তবায়ন না করায়, আমরা মাঠের আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি।”
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় আবরার হত্যার রায় কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন
মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষার জনবল রাজস্বকরণের দাবিতে মানববন্ধন
তিনি আরো বলেন, “দাবি বাস্তবায়ন না হলে আবারো নতুন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামী ১৫ এপ্রিল সারা দেশের বন বিভাগ ও অঞ্চলে পদোন্নতি বিষয় ও নিরসন কল্পে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন। ২৮ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল দেশের বন বিভাগের নিয়ন্ত্রিত বনাঞ্চলের সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ বিভাগীয় কার্যালয়ে জমা প্রদান। ৪ মে থেকে ৮ মে পর্যন্ত সব ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড বিভাগীয় দপ্তর ও অঞ্চলে একটানা অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন। ১৫ মে বন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় আগারগাঁও, ঢাকা অবস্থান করে সব ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি।”
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ড পদোন্নতি বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সরোয়ার জাহান, সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন, মোস্তফা কামাল, মোস্তফা জামাল, আরিফুল আলম, নাসিরুল আলম, সুলতান মাহমুদ টিটু, আসলাম হোসেন।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ