যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে সংবিধানের বাইরে গিয়ে তৃতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার সম্ভাবনার কথা বলেছেন। হয়তো ট্রাম্পের নিজ শিবিরের অনেকে একে কৌতুক হিসেবে নিয়েছেন, রিপাবলিকান নেতারা হেসেছেন। তবে, সাংবাদিকরা ট্রাম্পের এ কথা  গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ায় হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা তাদের উপহাস করেছেন।

বাস্তবতা হচ্ছে, ট্রাম্প যে ধারণার কথা বলেছেন, তা দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাংবিধানিক ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে। প্রায় ২৫০ বছর আগে স্বাধীনতার পর এই সাংবিধানিক ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত হয়ে আসছে।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অতীতে কখনও ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা ও আইনের শাসনের প্রতি একজন প্রেসিডেন্টের যে প্রতিশ্রুতি, তা এতটা প্রশ্নের মুখে পড়েনি। ট্রাম্পের সমালোচকদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

ট্রাম্পের সংবিধান অমান্য করার চেষ্টা এটাই প্রথম নয়। এর আগেও একবার তিনি সংবিধান অমান্য করে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হেরে যাওয়ার পর তিনি ফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। পরে ট্রাম্প নতুন নির্বাচন ছাড়াই হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার জন্য সংবিধান বাতিলের দাবিও করেছিলেন।

জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসেন ট্রাম্প। শপথ গ্রহণের পর ১১ সপ্তাহে তিনি যত নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, আধুনিককালে তাঁর পূর্বসূরিদের কেউ এমনটা করেননি।

ডেমোক্র্যাট নেতা ড্যানিয়েল গোল্ডম্যান এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে বলেছেন, আমার মনে হয়, তিনি এরই মধ্যে যা শুরু করেছেন, এটা তারই চূড়ান্ত নাটকীয় রূপ। গণতন্ত্রকে অস্থিতিশীল ও দুর্বল করার এটি একটি পদ্ধতিগত প্রচেষ্টা, যেন তিনি আরও বেশি ক্ষমতাধর হয়ে উঠতে পারেন। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে শুল্ক আরোপ করে তোলপাড় শুরু করেছেন তিনি। এভাবে আসলে গণতন্ত্রের ওপর হামলা হচ্ছে বলে মনে করেন গোল্ডম্যান। এই ডেমোক্র্যাট নেতা বলেন, এখন আর কাল্পনিক বা অমূলক নেই। আসলেই গণতন্ত্রের ওপর হামলা শুরু হয়েছে। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ছ ন ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ নিন: জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল 

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে ডাকা বিশ্বব্যাপী ধর্মঘটের সমর্থনে সোমবার বিকেলে পল্টন মোড়ে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল সম্পাদক ফয়জুল হাকিমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সৌরভ রায়, সুমন মল্লিক ও বর্ষা বিশ্বাস।

বিক্ষোভ সমাবেশে ফয়জুল হাকিম বলেন, বিশ্বের দেশে দেশে বিবেকবান মানুষ বর্ণবাদী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েল কর্তৃক প্যালেস্টাইনে গণহত্যার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। ধর্মের পরিচয়ে নয়, বিবেকবান মানুষ হিসেবে দেশে দেশে বিভিন্ন ধর্ম বর্ণ জাতির মানুষ এই গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের মানুষও আজ ঢাকায় গাজাবাসীর ডাকে রাজপথে নেমেছে। 

তিনি বলেন, যারা মানবাধিকারের কথা বলে সেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা, রাষ্ট্র আজকে কেন নীরব? নীরব সৌদি আরব, কুয়েত প্রভৃতি আরব দেশগুলো। এরা এই গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়নি, কেননা এরা সকলেই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের দালাল। জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে। 

ফয়জুল হাকিম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রে গণতন্ত্র ফিরে আসার একটা বড় শর্ত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদের নিয়ন্ত্রণ থেকে জনগণের মুক্তি। ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তি ও স্বাধীনতা ছাড়া বিশ্বের কোনো দেশেই প্রকৃত অর্থে জনগণের স্বাধীনতা বা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদদপুষ্ট ইসরায়েলের ধ্বংস তাই আজ জরুরি হয়ে উঠেছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দাবি জানান।
 
সৌরভ রায় বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তি ও স্বাধীনতার পক্ষে আজ যে রাজপথে দাঁড়িয়েছে তা অভূতপূর্ব। সারা দুনিয়ার মানুষ জায়নবাদী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে। বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থার বিরুদ্ধে এ এক নতুন লড়াইয়ের ইঙ্গিত।
 
সুমন মল্লিক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জনগণের বিক্ষোভকে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রাম হিসেবে জোরদার করার জন্য সচেতন উদ্যোগ নেওয়া আহ্বান জানান। 

বর্ষা বিশ্বাস বলেন, গাজার জনগণের ওপর সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েলের এই গণহত্যায় বিশ্বের বিবেকবান মানুষ নীরব থাকতে পারে না। গত বছরের অক্টোবর হতে এ পর্যন্ত ইসরায়েল ৬০ হাজারের বশি নারী, শিশু ও নাগরিকদের বর্বরোচিতভাবে হত্যা করেছে। লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। গাজা ও রাফা এলাকার বসতবাড়ির ওপর বোমা হামলা করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। এই বর্বরোচিত হামলার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং হামলার মদদদাতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলা আজকের দিনের কর্তব্য। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ নিন: জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল 
  • ট্রাম্প তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কথা বলে কি মার্কিন সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ করছেন
  • রাষ্ট্রের মূলনীতি প্রশ্নে বিপরীত অবস্থানে বিএনপি ও জামায়াত
  • যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ
  • ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ
  • ইউরোপের শহরগুলোতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ