সরকারের সাড়া না পেলে বিদ্যমান সীমানায় নির্বাচন
Published: 7th, April 2025 GMT
সরকারের সাড়া না পেলে বিদ্যমান সীমানাতেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে নির্বাচনী আচরণবিধির একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এতে প্রচারণায় পোস্টার বা তোরণ ব্যবহার না করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। কমিশনে অনুমোদনের পর তা সর্বসাধারণের জন্য প্রকাশ করা হবে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো.
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইনে করণিক ভুলটি সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হয়েছে। এখনও সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়া যায়নি।
বৈঠকে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনসহ নির্বাচনের ছয়টি বিষয় নিয়ে গঠিত সাব-কমিটি আলোচনা করে।
ইসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা আচরণবিধিমালার খসড়া করার জন্য বসেছিলাম। প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। এটা শিগগির কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। তারা চূড়ান্ত করবে। নির্বাচন সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
খসড়া অনুযায়ী, আগামী জাতীয় নির্বাচনে দেওয়াল লিখন করা যাবে না। গেট বা তোরণ নির্মাণ, প্যান্ডেল বা ক্যাম্প স্থাপন ও আলোকসজ্জাকরণ সংক্রান্ত বাধানিষেধ রয়েছে। চলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
আনোয়ারুল আরও বলেন, নির্বাচনী ব্যয় যথাসম্ভব কম রাখতে হবে। পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা হবে। আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) সংশোধনের প্রয়োজন হলে তা করা হবে। তিনি বলেন, ভোটের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ কঠোরতা প্রয়োগে আইনি কাঠামো শক্তিশালী করতে কাজ চলছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারে বিধি প্রয়োগ হবে জানিয়ে আনোয়ারুল বলেন, গুজব যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, সেগুলো নিয়ে আমরা ভাবছি। দুইশ বা পাঁচশ টাকা জরিমানা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা চলছে।
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের তো এমন পরিকল্পনা আছে, কবে কী করব।’
তিনি জানান, কোনো সড়ক কিংবা জনগণের চলাচল ও সাধারণের ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত স্থানে ক্যাম্প স্থাপন নয়। একজন প্রার্থী দলীয় ও সহযোগী সংগঠনের কার্যালয় নির্বিশেষে প্রতিটি ইউনিয়নে সর্বোচ্চ একটি এবং প্রতিটি পৌরসভা বা সিটি করপোরেশন এলাকার প্রতি ওয়ার্ডে একটির অধিক ক্যাম্প স্থাপন করতে পারবেন না।
প্রচারণামূলক কোনো বক্তব্য বা কোনো শার্ট, জ্যাকেট, ফতুয়া, ক্যাপ ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। ক্যাম্পে ভোটারদের কোমল পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন বা উপঢৌকন দেওয়া যাবে না। স্থায়ী বা অস্থায়ী বিলবোর্ড ভূমি বা অন্য কোনো কাঠামো বা বৃক্ষ ইত্যাদিতে স্থাপন বা ব্যবহার করা যাবে না।
এ ছাড়া ফেসবুকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ হয়ে প্রতারিত না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচনে আচরণবিধি ভাঙলে প্রার্থিতা বাতিল, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে আচরণবিধি ভঙ্গ করলে প্রার্থিতা বাতিল ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার কিংবা প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে পাস হওয়া ‘ডাকসু ও হল সংসদ বিধিমালা ২০২৫’—এ এসব বিধান বলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিষয়ক কমিটির দেওয়া সুপারিশ সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপন করা হয়। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বেশ কিছু বিধি চূড়ান্ত করেছে সিন্ডিকেট।
বিধি অনুযায়ী, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং দাখিলের সময় কোনো ধরনের মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে যেতে পারবেন না। মনোনয়নপত্র দাখিল ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় অন্য কোনো প্রার্থী বা ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা কোনো ছাত্রসংগঠনের কেউ কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবেন না। যানবাহন ব্যবহার করে শোডাউন বা মিছিল করা এবং কোনো ভোটারকে আনা-নেওয়া করা যাবে না। তবে রিকশা অথবা সাইকেল ব্যবহার করা যাবে।
প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে নির্বাচনের দিনের ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত প্রচার চালানো যাবে। তবে এ সময়ের মধ্যে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রচার চালাতে হবে। রাত ১০টার পর প্রচারে মাইক ব্যবহার করা যাবে না। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটার ও প্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ কোনোভাবে কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রচার চালাতে পারবে না।
আরও পড়ুনডাকসু নির্বাচন জুন মাসের মধ্যে হলে গ্রহণযোগ্য হবে, মত বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর২০ ঘণ্টা আগেবিধিতে আরও বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালানো যাবে। তবে সেটা হতে হবে আইনসিদ্ধ আর ইতিবাচক পদ্ধতিতে। এ ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ কোনো কাজ করা যাবে না। সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত আক্রমণ, চরিত্রহনন, গুজব ও অসত্য তথ্য ছড়ানো থেকেও বিরত থাকতে হবে।
আরও বলা হয়েছে, সভা-সমাবেশ করার অনুমতি অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে নিতে হবে। একজন প্রার্থী বা তাঁর গ্রুপের পক্ষে প্রতিটি হলে একটি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি প্রজেকশন মিটিং করতে পারবেন। হলের ভেতরে কিংবা ক্যাম্পাসে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা/রিটার্নিং কর্মকর্তাদের অনুমোদিত স্থান ছাড়া কোনো সভা, সমাবেশ বা শোভাযাত্রা করা যাবে না।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে—এমন সড়কে সমাবেশ না করা, এমনকি কোনো মঞ্চ তৈরি না করার বিধি রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুনডাকসু নির্বাচনের পথনকশা প্রকাশ, মে মাসের মাঝামাঝি নির্বাচন কমিশন গঠন১৫ এপ্রিল ২০২৫