Samakal:
2025-04-28@19:49:09 GMT

কৃষক উদ্বেগে, লাভ প্রভাবশালীর

Published: 7th, April 2025 GMT

কৃষক উদ্বেগে, লাভ প্রভাবশালীর

নেত্রকোনার মদনের বাইনবিল। এ জলমহালের পানি দিয়ে আশপাশের প্রায় ৩০ একর বোরো ধানের ক্ষেতে সেচ দেন কৃষক। কিন্তু মাছ ধরার জন্য বিলের পানি সেচযন্ত্র দিয়ে শুকিয়ে ফেলছেন ইজারাদারসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এতে তারা লাভবান হলেও আশপাশের জমিতে সেচের পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ফসলহানির শঙ্কায় ভুগছেন অর্ধশত কৃষক। তাদের অভিযোগ, কৃষকরা প্রশাসনের কাছে ঘুরেও প্রতিকার পাননি। কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। 
স্থানীয় বাসিন্দা ও ভূমি অফিস থেকে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মদন গ্রামের পাশে প্রায় ১৫ একর জমি নিয়ে বাইনবিল নামে জলমহালটির অবস্থান। সরকারিভাবে তিন বছরের জন্য ইজারা নিয়েছে হাওর বাংলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। এর সভাপতি উলাদ মিয়া নামে এক ব্যক্তি। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জলমহালটি এখন নিয়ন্ত্রণ করছেন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির।
নিয়মনীতি উপেক্ষা করে এ জলমহাল শুকিয়ে মাছ ধরার অভিযোগ পাওয়া গেছে ইজারাদার ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। পানি শুকিয়ে যাওয়ায় অন্তত ৩০ একর বোরো জমিতে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষকরা বারবার প্রশাসন ও পুলিশকে জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।
আজিম উদ্দিন ও সুলতানসহ স্থানীয় কয়েকজন কৃষকের ভাষ্য, বাইনবিল যারা ইজারা নেন, তারা প্রতি বছরই শুকিয়ে মাছ ধরেন। এতে সেচের পানির ঘাটতি দেখা দেয়। খরার সময় তীব্র পানি সংকট দেখা দেয়। ফসল উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। এ বছরও পানি শুকিয়ে ফেলায় বোরো জমিতে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতি-২০০৯ অনুযায়ী, যেসব জলমহাল থেকে (নদী, হাওর, খাল ইত্যাদি) জমি সেচের সুযোগ রয়েছে, সেখান থেকে মৌসুমে সেচ দেওয়া বিঘ্নিত করা যাবে না। বাইনবিল জলমহালের ইজারাদাররা এ নীতিমালার কোনো তোয়াক্কা করেনি বলে অভিযোগ কৃষকের। সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, বাইনবিল প্রায় শুকিয়ে গেছে। দু-এক জায়গায় সামান্য পানি থাকলেও তা সেচ দেওয়ার উপযোগী নয়।
গত ৯ মার্চ মদন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির বাইনবিল শুকিয়ে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে সেচযন্ত্র চালু করে বলে অভিযোগ কৃষক রহিছ উদ্দিনের। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি মদন থানার ওসিকে জানিয়েছি। তাঁর পরামর্শে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি। এমনকি ইউএনওকে বিষয়টি জানালেও ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিল শুকিয়ে মাছ ধরার সুযোগ পান আব্দুল কাদির। এতে বিল পারের জমি সেচ সংকটে পড়ছে, দেশীয় মাছের প্রজনন বৃদ্ধি হুমকিতে। আদালতের দ্বারস্থ হয়েও সেচ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।’
পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির বলেন, ‘উলাদ মিয়ার কাছে চাঁদা দাবি করছিল রহিছ উদ্দিন। চাঁদা না পেয়ে তিনি এমন করছেন। বিলের পানি শুকিয়েছে কৃষক। আমার তো এখানে কোনো ভূমিকা নেই।’ ইজারাদার উলাদ মিয়া আওয়ামী লীগের রাজনীতি করায় গাঢাকা দিয়ে থাকেন বলে জানা গেছে। চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
বাইনবিলে সেচের বিষয়ে যতবার জানিয়েছে, ততবার পুলিশ পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন 
মদন থানার ওসি নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান। 
তাঁর ভাষ্য, ‘আমি নিজেও একাধিকবার 
গিয়েছি। তারপরও যদি পুলিশকে দোষ দেয়, কিছু বলার নেই।’ 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অহনা জিন্নাত বলেন, বিষয়টি জানার পর ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছিল। সেচ বন্ধ করাও হয়। বিষয়টি আদালতে যাওয়ায় মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইজ র দ র ব ইনব ল জলমহ ল র র জন ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

তৃতীয় পক্ষের অ্যাপে মোবাইল প্যাকেজ ওভার চার্জিং

বিকাশের মতো তৃতীয় পক্ষের প্ল্যাটফর্মে উচ্চ মূল্যে মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজ বিক্রির অভিযোগ এসেছে। ‘মোবাইল প্যাকেজ ওভার চার্জিং: এ কল ফর রেগুলেটরি অডিট অ্যান্ড কনজিউমার প্রোটেকশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে মোবাইল অপারেটর অ্যাপে তালিকাভুক্ত দাম এবং বাহ্যিক চ্যানেলের মাধ্যমে চার্জ করা মূল্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।

প্রধান উপদেষ্টার তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব এ তথ্য ফেসবুকে জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্যাকেজগুলো অনুমোদিত মূল্যের চেয়ে ২০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ বেশি হারে বিক্রি হয়েছিল। মোবাইল অপারেটরের নিজস্ব অ্যাপে ৩০ দিনের ৪৫ জিবি ডেটা প্যাকের দাম ছিল ৪৯৭ টাকা, কিন্তু একই প্যাকটি বিকাশের মাধ্যমে ৫৯৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা ২০ শতাংশ বৃদ্ধি।

১৯৮ টাকায় তালিকাভুক্ত একটি ৭ দিনের ২৫ জিবি প্যাক বিকাশের মাধ্যমে একই দামে ২০ জিবি প্যাক হিসাবে বিক্রি হয়েছিল, যা ৮০ শতাংশ ওভারচার্জ।

২২৭ টাকা মূল্যের একটি সাত দিনের ৪০ জিবি প্যাক বিকাশে একই মূল্যের জন্য ৩৫ জিবি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা ভিত্তি মূল্যের তুলনায় ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি।

৭  দিনের ১০ জিবি এবং ৩-দিনের ৫ জিবি বিকল্পগুলোসহ অন্যান্য প্যাকেজগুলোও ৫৫ শতাংশ থেকে ৫৮ শতাংশ অতিরিক্ত চার্জে বিক্রি হয়েছে।
ফয়েজ আহমেদ লেখেন, বিটিআরসিতে সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের অধীনে একটি সুষ্পষ্ট প্রাইসিং রেগুলেশন রয়েছে। তার তোয়াক্কা না করে ২০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত প্রাক্কলন অতিরিক্ত মূল্য আদায় গ্রাহকস্বার্থ ও রাষ্ট্রের সার্বিক স্বার্থবিরোধী বলেই বিবেচিত হওয়া উচিত। বিষয়টি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের রেগুলেটরি শাস্তির মুখোমুখি করা দরকার বলে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ