Samakal:
2025-04-28@05:42:46 GMT

রপ্তানি বেড়েছে ১১ শতাংশ

Published: 7th, April 2025 GMT

রপ্তানি বেড়েছে ১১ শতাংশ

গত মার্চ মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় এসেছে ৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন বা ৪২৫ কোটি ডলার। গত বছরের একই মাসের চেয়ে যা ১১ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি। গত বছরের মার্চ মাসে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ৮১ বিলিয়ন বা ৩৮১ কোটি ডলার। একক মাসের এ হিসাবের বাইরে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের গত ৯ মাসের গড় রপ্তানিও বেশ ভালো। অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সময়ে রপ্তানি  আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১১ শতাংশ বেড়েছে। মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৭ দশমিক ১৯ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৭১৯ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৩ দশমিক ৬১ বিলিয়ন  বা ৩ হাজার ৩৬১ কোটি ডলার।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইপিবি। ইপিবির তথ্য-উপাত্ত  বিশ্লেষণে দেখা যায়, বরাবরের মতো তৈরি পোশাকই এখনও রপ্তানি খাতের মূল ভরসার জায়গা। মোট ৩ হাজার ৩৬১ কোটি ডলারের রপ্তানি আয়ের মধ্যে এই খাত থেকেই এসেছে ৩ হাজার ২৫ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে গত ৯ মাসে তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেশি হয়েছে প্রায় ১১ শতাংশ। শুধু মার্চ মাসের হিসাবে পোশাকের রপ্তানি বেশি হয়েছে  ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। যার অর্থমূল্য ৩ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন বা ৩৪৫ কোটি ডলার। গত বছরের মার্চে এ পরিমাণ ছিল ৩০৭ কোটি ডলার।

তবে আগামীতে রপ্তানি আয়ের এ গতি ধরে রাখা যাবে কিনা তা নিয়ে নানা সংশয় দেখা হয়েছে। কারণ তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যে বর্তমান আমদানি শুল্ক হারের অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। এতদিন এ হার ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ। নতুন-পুরোনো মিলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকে শুল্ক হার দাঁড়াচ্ছে ৫২ শতাংশ। ঘোষণায় অবশ্য অন্য রপ্তানিকারক দেশের পণ্যেও বিভিন্ন হারে শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়েছে, যা আগামীকাল বুধবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। 
জানতে চাইলে ডেনিম এক্সপার্টের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল সমকালকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণায় এ রপ্তানির গতি ধরে রাখা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কিছু ক্রেতা ইতোমধ্যে অনুরোধ করেছেন, পরবর্তী বার্তা না দেওয়া পর্যন্ত উৎপাদন ও রপ্তানি কার্যক্রম যাতে স্থগিত রাখা হয়। অতিরিক্ত শুল্কভারের সম্পূর্ণ শুল্কই যাতে রপ্তানিকারকরা বহন করে অথবা ভাগাভাগি করে নেয় এ ব্যাপারে কিছু ক্রেতা চাপ দিচ্ছেন। ছোট ক্রেতাদের মধ্যেই এ প্রবণতা বেশি, যা নৈতিক অনুশীলন নয়। উন্মুক্ত ব্যয়ের ব্যবসায়িক মডেলে এখন ক্রেতারা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মুনাফার মার্জিন সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত। এ বাস্তবতায় বাড়তি শুল্কের চাপ নেওয়ার সুযোগ নেই রপ্তানিকারকদের পক্ষে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, ব্র্যান্ডগুলো তাদের সরবরাহকারীদের এবং পোশাকশিল্পের ৪০ লাখেরও বেশি কর্মীর কথা বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্তই নেবে।’
ইপিবির প্রতিবেদনে দেখা যায়, অর্থবছরের গত ৯ মাসে তৈরি পোশাকের বাইরে অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি পরিস্থিতিও মোটামুটি ভালো। চামড়া ও চামড়া পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। রপ্তানি হয়েছে ৮৫ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াপণ্য। শুধু মার্চ মাসেই এ পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ২৩ শতাংশ। পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানি কমেছে ৮ শতাংশের মতো। তবে একক মার্চ মাসে রপ্তানি বেড়েছে সিকি শতাংশের মতো। এতটুকু রপ্তানিকেও ভালো বলা যায়। কারণ একটা লম্বা সময় ধরে পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানি কেবল কমছেই। হালকা প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেশ ভালো। ৯ মাসের গড় রপ্তানি ১১ শতাংশের মতো বেশি। একক মাস হিসাবে মার্চে বেড়েছে ৩৩ শতাংশেরও বেশি। হোম টেক্সটাইল পণ্যের গড় রপ্তানি ৫ শতাংশের মতো বেড়েছে। রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৮ কোটি ডলার। পাদুকার রপ্তানি বেড়েছে ৩৪ শতাংশ। রপ্তানি হয়েছে  ৪১ কোটি ডলারের কিছু বেশি মূল্যের পণ্য। মার্চে রপ্তানি বেড়েছে ৪৪ শতাংশ। তবে রপ্তানির এ প্রবাহের বিপরীতে রয়েছে কৃষিপণ্যের অবস্থান। রপ্তানি খাতের বড় পণ্যের মধ্যে কৃষিপণ্যের রপ্তানি কমেছে ২৬ শতাংশ। রপ্তানি হয়েছে ৮১ কোটি ডলার মূল্যের বিভিন্ন কৃষিপণ্য। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বছর র একই গত বছর র শ র মত দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

অর্থবছরের আট মাসে অর্ধেক বাজেটও বাস্তবায়ন হয়নি

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ৮ মাসে বাজেটের অর্ধেকও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। অর্থবছরের মূল বাজেট বাস্তবায়ন তো দূরের কথা, সংশোধিত বাজেটও অর্ধেক বাস্তবায়ন করা যায়নি। তবে এর আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বাজেট বাস্তবায়নের হার কিছুটা বেড়েছে। অর্থ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজেট বাস্তবায়ন প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই ’২৪-ফেব্রুয়ারি ’২৫) বাজেট বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে অর্ধেকের চেয়ে কম। আলোচ্য সময়ে মূল বাজেটের প্রায় ৪০ শতাংশ এবং সংশোধিত বাজেটের প্রায় ৪৩ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে।

এর আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের একই সময়ে বাজেট বাস্তবায়ন হার ছিল মূল বাজেটের প্রায় ৩৭ শতাংশ এবং সংশোধিত বাজেটের প্রয় ৪০ শতাংশ। সে হিসাবে উভয় ক্ষেত্রেই চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে বাজেট বাস্তবায়ন হার প্রায় ৩ শতাংশ বেড়েছে।

চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এটি কমিয়ে ৭ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, আট মাসে মোট ব্যয় হয়েছে ৩ লাখ ১৮ হাজার ২ কোটি টাকা। এর আগে, গত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের একই সময়ে মোট ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা।

এদিকে, গত অর্থবছরে মূল বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ও সংশোধিত বাজেটের আকার ছিল ৭৮৫ কোটি টাকা এবং মোট ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা।

অর্থ বিভাগের হিসাব মতে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে প্রকৃত ব্যয় দাঁড়ায় ৬ লাখ ১১ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে গত অর্থবছরের ৮ মাসে বাজেট বাস্তবায়িত হয়েছে ৪৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

অর্থ বিভাগের পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, অর্থবছরের ৮ মাসে মোট পরিচালন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। এটি সংশোধিত পরিচালন ব্যয়ের ৫১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে সংশোধিত পরিচালন ব্যয়ের আকার হচ্ছে ৫ লাখ ৬ হাজার ২ কোটি টাকা। মূল বাজেটে এর আকার ছিল ৫ লাখ ৬ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা।

এদিকে, আলোচ্য সময়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে সংশোধিত বাজেটের ২৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। চলতি অর্থছরের মূল বাজেটে এডিপি’র আকার ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে কাটছাঁট করে এর আকার ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বিপরীতে আট মাসে মোট ব্যয় হয়েছে ৫৭ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। গত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের একই সময়ে এডিপি-তে মোট ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৬২ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা।

অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরর আট মাসে এনবিআর আওতাধীন মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৫৩ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ২০২ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত বছর জুলাই-আগস্ট মাসে রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে অর্থনীতি এক ধরনের স্থবিরতা চলে এসেছিল। এটি নভেম্বর মাস পর্যন্ত অব্যাহত ছিল, যার জন্য এডিপি বাস্তবায়নসহ বাজেট বাস্তবায়নে একটি নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে। পরিস্থিতি যেভাবে এগুচ্ছে তাতে বছর শেষে সংশোধিত বাজেটের বড়জোর ৭৫ শতাংশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, “রাজস্ব আদায়ের হারও ভালো না, অর্থবছর শেষে রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি ৮০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছতে পারে।”

ঢাকা/হাসনাত/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩ মাসে ১৪৫ কোটি টাকা মুনাফা পদ্মা অয়েলের
  • প্রথম প্রান্তিকে লোকসানের ধারায় সিঙ্গার, বেড়েছে অনেকটা
  • অর্থবছরের আট মাসে অর্ধেক বাজেটও বাস্তবায়ন হয়নি
  • শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বরাদ্দ বাড়ছে
  • ৯ মাসে রপ্তানি শুল্ক আদায়ে প্রবৃদ্ধি ২০০০০%
  • সুন্দরবনের কোন ফুলের মধুর কত দাম
  • দেশি বিনিয়োগেই বেশি কর্মসংস্থান, তবু কেন বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে বেশি উৎসাহ
  • জায়গাসংকটে পাশে নয়, উচ্চতায় বড় হচ্ছে সিইপিজেড